কোপেনহেগেন শীর্ষ সম্মেলনে মতৈক্য হতে হবে -উষ্ণায়ন ও জলবায়ু-সুবিচার
বিশ্বের গড় তাপমাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে জলবায়ু-বিপর্যয়। এর ফলে পৃথিবী নামের আমাদের এই প্রিয় গ্রহটি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয়ের মুখোমুখি। আপাতত হিমালয়ের চূড়ার হিমবাহ এবং মেরু অঞ্চলের হিমশৈলী গলতে শুরু করেছে। সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে বাংলাদেশ, মালদ্বীপসহ বিশ্বের অনেক দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিণামে উপদ্রুত অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষ জলবায়ু-উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে। দেখা দেবে জলবায়ু-নিরাপত্তা সমস্যা। বাস্তুচ্যুত মানুষ কোথায় মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে, কীভাবে বাঁচবে—এসব প্রশ্নে দেশে দেশে দেখা দেবে চরম নৈরাজ্যকর অবস্থা। আসন্ন ঘোর দুর্দিনের কথা চিন্তা করে বিশ্ববাসীকে এখনই সক্রিয় হতে হবে।
এই পটভূমিতে আগামী ডিসেম্বরে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন (কপ-১৫)। এখানে বিশ্বের প্রায় ১৯০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, পরিবেশবিজ্ঞানী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধিরা সমবেত হয়ে বিশ্বের উষ্ণায়ন ২০৫০ সালের মধ্যে কীভাবে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করবেন। কিন্তু কাজটা কঠিন। এর আগে ১৯৯৭ সালে কিয়োটো প্রটোকলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনার যেসব চুক্তি করেছিল, তা প্রায় কেউই মেনে চলেনি। কথা ছিল, সবাই ২০১০ সালের মধ্যে কার্বন গ্যাস নিঃসরণ ১৯৯০ সালের মাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশ কমিয়ে আনবে। কিন্তু আশঙ্কা করা হচ্ছে, কমানো তো দূরের কথা, বরং ২৫ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। তাই ডিসেম্বরে বিশ্বনেতারা এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন। কার্বন গ্যাস নিঃসরণ আকাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমিয়ে আনা এবং এর বাস্তবায়ন তদারকির কার্যকর ব্যবস্থা না করতে পারলে কপ-১৫ শীর্ষ সম্মেলন ব্যর্থ হতে পারে। কিন্তু সে রকম কিছু হলে তা সবার জন্য এক বিয়োগান্তক পরিণতি ডেকে আনবে; যা কারও কাম্য নয়।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বছরে মাথাপিছু ১৫-২০ টন, চীনের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো প্রায় দেড় টন আর বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো মাত্র শূন্য দশমিক ২ টন কার্বন গ্যাস নিঃসরণ করে। সুতরাং এটা পরিষ্কার, উন্নত দেশগুলোর অবিবেচনাপ্রসূত কার্যক্রমের শাস্তি বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে ভোগ করতে হবে। সম্প্রতি কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল এডিটরস ফোরামে জাতিসংঘের মহাসচিব তাঁর ভাষণে এই অসংগতির প্রতি ইঙ্গিত করে ‘জলবায়ু-সুবিচার’-এর আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ প্রত্যাশিত মাত্রায় কমিয়ে আনতে হবে, আর জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশগুলোকে সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে হবে। এ জন্য একদিকে যেমন তেল-গ্যাস-কয়লা প্রভৃতি জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো কমিয়ে আনা, অন্যদিকে তেমনি বিশ্বের বনাঞ্চল রক্ষা, গাছ লাগিয়ে নতুন বন গড়ে তোলা, সৌর ও বায়ুবিদ্যুত্সহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
এসব লক্ষ্য অর্জন করতে হলে উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমে যাবে, কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প উদ্ভাবন ও সহজলভ্যতা এখনো সময়সাপেক্ষ। এখানে ধনী দেশগুলো আপস করতে কতটা রাজি, কপ-১৫ শীর্ষ সম্মেলনে সেই প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। কিন্তু তথাকথিত সভ্যতার ধার কিছুটা কমিয়ে হলেও পৃথিবীর অস্তিত্ব নিশ্চিত করা সবার কর্তব্য হওয়া উচিত। আমরা আশা করি, বিশ্বনেতারা নিশ্চয়ই একটি গ্রহণযোগ্য সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবেন। বিশ্বের উষ্ণতা আর বাড়তে দেওয়া যায় না।
এই পটভূমিতে আগামী ডিসেম্বরে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন (কপ-১৫)। এখানে বিশ্বের প্রায় ১৯০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, পরিবেশবিজ্ঞানী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধিরা সমবেত হয়ে বিশ্বের উষ্ণায়ন ২০৫০ সালের মধ্যে কীভাবে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করবেন। কিন্তু কাজটা কঠিন। এর আগে ১৯৯৭ সালে কিয়োটো প্রটোকলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনার যেসব চুক্তি করেছিল, তা প্রায় কেউই মেনে চলেনি। কথা ছিল, সবাই ২০১০ সালের মধ্যে কার্বন গ্যাস নিঃসরণ ১৯৯০ সালের মাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশ কমিয়ে আনবে। কিন্তু আশঙ্কা করা হচ্ছে, কমানো তো দূরের কথা, বরং ২৫ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। তাই ডিসেম্বরে বিশ্বনেতারা এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন। কার্বন গ্যাস নিঃসরণ আকাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমিয়ে আনা এবং এর বাস্তবায়ন তদারকির কার্যকর ব্যবস্থা না করতে পারলে কপ-১৫ শীর্ষ সম্মেলন ব্যর্থ হতে পারে। কিন্তু সে রকম কিছু হলে তা সবার জন্য এক বিয়োগান্তক পরিণতি ডেকে আনবে; যা কারও কাম্য নয়।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বছরে মাথাপিছু ১৫-২০ টন, চীনের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো প্রায় দেড় টন আর বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো মাত্র শূন্য দশমিক ২ টন কার্বন গ্যাস নিঃসরণ করে। সুতরাং এটা পরিষ্কার, উন্নত দেশগুলোর অবিবেচনাপ্রসূত কার্যক্রমের শাস্তি বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে ভোগ করতে হবে। সম্প্রতি কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল এডিটরস ফোরামে জাতিসংঘের মহাসচিব তাঁর ভাষণে এই অসংগতির প্রতি ইঙ্গিত করে ‘জলবায়ু-সুবিচার’-এর আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ প্রত্যাশিত মাত্রায় কমিয়ে আনতে হবে, আর জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশগুলোকে সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে হবে। এ জন্য একদিকে যেমন তেল-গ্যাস-কয়লা প্রভৃতি জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো কমিয়ে আনা, অন্যদিকে তেমনি বিশ্বের বনাঞ্চল রক্ষা, গাছ লাগিয়ে নতুন বন গড়ে তোলা, সৌর ও বায়ুবিদ্যুত্সহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
এসব লক্ষ্য অর্জন করতে হলে উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমে যাবে, কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প উদ্ভাবন ও সহজলভ্যতা এখনো সময়সাপেক্ষ। এখানে ধনী দেশগুলো আপস করতে কতটা রাজি, কপ-১৫ শীর্ষ সম্মেলনে সেই প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। কিন্তু তথাকথিত সভ্যতার ধার কিছুটা কমিয়ে হলেও পৃথিবীর অস্তিত্ব নিশ্চিত করা সবার কর্তব্য হওয়া উচিত। আমরা আশা করি, বিশ্বনেতারা নিশ্চয়ই একটি গ্রহণযোগ্য সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবেন। বিশ্বের উষ্ণতা আর বাড়তে দেওয়া যায় না।
No comments