সিআইএর পক্ষে ভাইদের বিরুদ্ধে কাজ করেছি

কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল কাস্ত্রো ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোর ছোট বোন হুয়ানিতা কাস্ত্রো বলেছেন, তিনি ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে নির্বাসনে যাওয়ার আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা—সিআইএতে নিজের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। হুয়ানিতা গত রোববার স্পেনিশ ভাষার এক টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য দিয়েছেন। খবর রয়টার্স অনলাইনের।
ফিদেল কাস্ত্রো (৮৩) ও রাউল কাস্ত্রো (৭৮) সম্পর্কে স্মৃতিচারণা করে একটি বই লিখেছেন ৭৬ বছর বয়সী হুয়ানিতা। বইটির প্রকাশনা উপলক্ষে স্পেনিশ ভাষার টেলিভিশন ‘ইউনিভিশন নোতিসিয়াস-২৩’কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে হুয়ানিতা এসব তথ্য দিয়েছেন। হুয়ানিতা বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দুই ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা নেই।
বইটি গতকাল সোমবারই প্রকাশিত হওয়ার কথা। মেক্সিকোর সাংবাদিক মারিয়া আন্তোনিয়েতা কলিন্সের সঙ্গে যৌথভাবে লেখা ওই বইয়ের নাম ফিদেল অ্যান্ড রাউল, মাই ব্রাদারস, দ্য সিক্রেট হিস্ট্রি।
ফিদেলের সমালোচক হুয়ানিতা বলেন, ১৯৫৯ সালে বিপ্লবের শুরুর দিকে স্বৈরশাসক বাতিস্তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার সময় তিনি তাঁর ভাই ফিদেলকে সহায়তা করেছিলেন। তবে ফিদেল কিউবার ক্ষমতায় বসে বিরোধীদের যেভাবে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন এবং দেশকে ধীরে ধীরে সমাজতন্ত্রের দিকে নিয়ে গেছেন, তিনি সে বিষয়গুলো সমর্থন করতে পারেননি। চারপাশে এ রকম অন্যায়-অবিচার দেখতে দেখতে একপর্যায়ে তাঁর মোহমুক্তি ঘটে।
মিয়ামি-প্রবাসী হুয়ানিতা আরও বলেন, ‘ফিদেল সরকারের বিরোধী অনেক নির্যাতিত লোককে আমি ওই সময় হাভানায় আমার বাড়িতে আশ্রয় ও সহায়তা দিয়েছিলাম। এভাবে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়ানোর কারণে কিউবায় আমার অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়ে।’
স্মৃতিচারণা করে হুয়ানিতা বলেন, ‘ওই সময় একদিন এক ব্যক্তি আমার কাছে সিআইএর সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব নিয়ে আসে। ওই ব্যক্তি ছিল ফিদেল ও আমার খুবই ঘনিষ্ঠ। তারা (সিআইএ) আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চায়। কারণ, তাদের তখন অনেক কিছুই বলা ও জানার দরকার ছিল। যেমন, আমি ওই ঝুঁকি নিতে রাজি কি না। আমিও তাদের কথা শোনার জন্য তৈরি ছিলাম। যদিও প্রথম দিকে ভড়কে গিয়েছিলাম। তার পরও তাদের প্রস্তাবে আমি রাজি হয়ে যাই। এভাবে ফিদেলের চিরশত্রু সিআইএর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক তৈরি হয় আমার।’

No comments

Powered by Blogger.