গাজার পর জ্বলছে লেবানন
দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে নিউ ইয়র্কে চলমান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়ার কথা জানিয়েছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। ইসরাইলের বরাবরের মতোই দাবি, তারা হিজবুল্লাহকে টার্গেট করে বিমান হামলা চালিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ইসরাইলের হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৬ শত মানুষ নিহত হয়েছেন। কয়েক দশকের মধ্যে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েনি লেবাননের বাসিন্দারা। দক্ষিণাঞ্চলে হামলার ফলে তারা বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানের খোঁজে পালাচ্ছিলেন। তারা জানেন না কোথায় মিলবে নিরাপদ আশ্রয়। তবে উত্তরের দিকে ছুটছিলেন এসব মানুষ। এর ফলে উত্তরাঞ্চলে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও অনলাইন আল জাজিরা।
গত বছর অক্টোবরে হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের সংঘাত শুরু হলে ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় ইরান সমর্থিত গ্রুপ হিজবুল্লাহ। এরপর থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ লেবাননে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের পর হিজবুল্লাহ-ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই হামলার আগে লেবাননের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরাইল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু লেবাননের জনগণের উদ্দেশ্যে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘ইসরাইলের যুদ্ধ আপনাদের সঙ্গে না, এটা হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে। অনেক দিন ধরেই হিজবুল্লাহ আপনাদের (লেবাননের জনগণ) ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।’
এই ঘোষণার পর দক্ষিণ লেবাননের শহরগুলো ছাড়তে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। গাড়ি, ভ্যান, ট্রাক এবং বিভিন্ন যানবাহনে বোঝাই হয়ে শহর ছাড়তে দেখা যায় তাদের। কেউ কেউ একাই তার গাড়ি নিয়ে নিরাপদ স্থানের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। মায়েরা তাদের শিশুদের কোলে বা পিঠের সঙ্গে শক্ত করে বেঁধে নিয়েছেন, যেন তারা হারিয়ে না যায়।
আবেদ আফু নামের এক ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেছেন- আমরা ভীত। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের এক সড়কে তাকে তার গাড়ি নিয়ে পালাতে দেখা যায়। তিনি বলছিলেন, আমি শুধু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পালাচ্ছি। আমাদেরকে ইসরাইলের হামলা ঘিরে ফেলেছে। ওই হামলা ছিল ভয়াবহ। পালানোর সময় আবেদের সঙ্গে তার ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সের তিন সন্তানও ছিল। আসলে তারা তখনো জানতেন না তাদের নিরাপদ আশ্রয় কোথায়?
No comments