নির্বাচনী ব্যবস্থার সবদিক পর্যালোচনা করা হবে

নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারে সবদিক পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন এই সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নির্বাচনী ব্যবস্থার কী কী সংস্কার করা হবে-সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থার সবদিক নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করবো এবং তার ভিত্তিতে সুপারিশ প্রণয়ন করবো। এটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব কিন্তু আমাদের নয়। আমাদের ১লা অক্টোবর থেকে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯০ দিনের সময় দেয়া হয়েছে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কন্যাশিশুদের প্রতি যথাযথ বিনিয়োগের অভাবে তারা অপুষ্টির শিকার হচ্ছে এবং তাদের অনেকেই মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মূলত বাল্যবিবাহের কারণে আমাদের কন্যাশিশুদের অনেকেই অল্প বয়সেই মা হয়ে যান। এর ফলে তারা অপুষ্ট শিশুর জন্ম দেন। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, চীন ও জাপানের মানুষ আগে অনেক খাটো ছিল, এখন পুষ্টি নিশ্চিত করার কারণে তাদের সেই অবস্থা আর নেই। তাই আমরা যদি কন্যাশিশুদের প্রতি বঞ্চনা করি, তাদের জন্য যথাযথ বিনিয়োগ না করি তাহলে আমাদের কন্যাশিশুরা পিছিয়ে পড়বে, যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য হবে আত্মঘাতী।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান এ্যানী বলেন, আমাদের সমাজে নারী ও কন্যাশিশুরা প্রতিনিয়ত সহিংসতার শিকার হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ পর্যালোচনা করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই, পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে নবজাতক কন্যাশিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা- কেউই আজ নিরাপদ নয়। ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) তথ্য বলছে, গত ২৩ বছরে সেখান থেকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন এবং দগ্ধ হওয়ার ঘটনায় ৬২ হাজারের বেশি নারী ও শিশু সহায়তা পেয়েছে। মামলা হয়েছে মাত্র ১৯ হাজার ৪৪১টি। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যমতে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৬ থেকে সাড়ে ২২ হাজার মামলা হয়েছে। অন্যদিকে অনলাইনেও হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন আমাদের নারী ও কন্যাশিশুরা। তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে মোট ২৮ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে, ২২৪ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে ১৯ জন কন্যাশিশু, ১০ জন গৃহ শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে, ১৩৩ জন কন্যাশিশু আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে, ৮১ জন কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে, ২০ জন কন্যাশিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে এবং ১৮৭ জন কন্যাশিশুর পানিতে পড়ে মৃত্যুবরণের তথ্য পাওয়া গেছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.