এক ভুতুড়ে শহরের গল্প
পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি, ঝাঁপ বন্ধ করা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো দেখে বিশ্বাস করা কঠিন যে দুই লাখ মানুষের আনাগোনায় মুখরিত ছিল নাইজেরিয়ার বাগা। |
এখানে
প্রাণ ছিল। ছিল হাজারো মানুষের আনাগোনা। হাসিকান্না, নানা ঘটনায় ভরা ছিল
জীবন। এখন এসবের কিছুই নেই। চারপাশে কেমন যেন গা ছমছমে ভাব, ভুতুড়ে পরিবেশ।
এটা নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাগা এলাকা। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে প্রাণবন্ত বাগা ভুতুড়ে এলাকায় পরিণত হয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতায়।
গত বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে বোকো হারাম বাগায় সহিংসতা শুরু করে। হাজার হাজার মানুষকে তারা জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। হত্যা করে শত শত বাসিন্দাকে। ওই সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডে এখানকার দুই হাজারের বেশি বাসিন্দার মৃত্যু হয় বলে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া বিধ্বস্ত বাগার ছবি প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
এখানকার পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি, ঝাঁপ বন্ধ করা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো দেখে বিশ্বাস করা কঠিন যে দুই লাখ মানুষের আনাগোনায় মুখরিত ছিল এই বাগা। গবাদিপশু, চামড়ার পণ্য আর উৎপাদিত টাটকা জিনিসের জন্য এখানে ভিড় জমাতেন ব্যবসায়ীরা।
বাগা বোকো হারামের দখলে ছিল দুই মাসের মতো। নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী গত বছরের মার্চে এখান থেকে বোকো হারামকে হটিয়েছে বলে দাবি করে। সেই থেকে এখনো ধুলোয় ভরা রাস্তায় টহল দিয়ে যাচ্ছে সেনাসদস্যরা। তার পরও চারপাশে কেমন যেন চাপা আতঙ্ক, শূন্যতা।
সেনা টহলের পর কিছুসংখ্যক বাসিন্দা এখানে ফিরে আসে। তবে সেই সংখ্যাটা খুব কম। এক হাজারও হবে না। গত জুন থেকে বাগার এসব নিঃস্ব বাসিন্দা জীবনের প্রয়োজনে আশপাশের গ্রামে গিয়ে মাছ শিকার শুরু করে। মাছ বিক্রি করার জন্য যায় পাশের শহর মাইদুগুরিতে। বাগা থেকে পালিয়ে এই মাইদুগুরিতে অনেকে আশ্রয় নিয়েছিল।
মাছ বিক্রি করতে আসা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে নানা খবর শুনে জুলাই মাসের দিকে পাঁচ হাজারের মতো বাসিন্দা বাগায় ফিরে গিয়েছিল। তবে সেই শান্তি তাদের কপালে সয়নি। লরিতে করে বাগায় ফেরার পথে বোকো হারামের হামলায় আটজন প্রাণ হারায়। এর কয়েক দিন পর জঙ্গিরা কয়েকজন মৎস্যশিকারি ও কৃষককে গলা কেটে হত্যা করে। আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের মনে। তারা পালিয়ে যায় অন্যত্র।
বাগা থেকে বাস্তুচ্যুত এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলছিলেন, ‘বাগা এখনো মরূদ্যান হয়ে আছে। আমরা এখনো মাইদুগুরির বিভিন্ন তাঁবু, বন্ধু বা স্বজনের বাড়িতে থাকি। আতঙ্কে বাড়ি ফিরতে পারি না।’
প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের সহায়তায় নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী বোকো হারামের জঙ্গিদের কিছু কিছু এলাকা থেকে হটিয়ে দিতে সক্ষম হলেও আকস্মিক হামলা থেকে তাদের রক্ষা করতে পারছে না। ফলে যেকোনো সময় হামলা হতে পারে, এমন ভয়ে বাসিন্দারা আর বাগায় ফিরতে চায় না।
বাগার বণিক ইউনিয়নের প্রধান বুকার কোরি বলেন, ‘আমরা এখনো বাগায় ফিরতে পারিনি। বোকো হারামের সদস্যরা আশপাশের দ্বীপে থাকায় এটা এখনো আমাদের জন্য নিরাপদ নয়।’
বোকো হারাম স্বাধীন একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই চাওয়া থেকেই শুরু তাদের সশস্ত্র সহিংসতার। গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত ইউএসএআইডির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোকো হারামের নানা সহিংস কর্মকাণ্ডে নাইজেরিয়ার প্রায় ২৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ ছাড়া গণমাধ্যম বলছে, সংগঠনটির সহিংসতায় নাইজেরিয়ায় অন্তত ১৭ হাজার মানুষ মারা গেছে। লাখ লাখ ডলারের অবকাঠামোগত স্থাপনা ধ্বংস করেছে তারা।
এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করা হবে, এর সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনার কথা জানাতে পারেনি নাইজেরিয়ার সরকার। যদিও নতুন বছরের বার্তায় দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহামাদু বুহারি বলেছেন, এখানকার মানুষের নিরাপত্তায় এখনো অনেক কিছু করার আছে। এই জঙ্গিদের নির্মূল না করা পর্যন্ত সরকার থামবে না।
এটা নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাগা এলাকা। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে প্রাণবন্ত বাগা ভুতুড়ে এলাকায় পরিণত হয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতায়।
গত বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে বোকো হারাম বাগায় সহিংসতা শুরু করে। হাজার হাজার মানুষকে তারা জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। হত্যা করে শত শত বাসিন্দাকে। ওই সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডে এখানকার দুই হাজারের বেশি বাসিন্দার মৃত্যু হয় বলে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া বিধ্বস্ত বাগার ছবি প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
এখানকার পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি, ঝাঁপ বন্ধ করা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো দেখে বিশ্বাস করা কঠিন যে দুই লাখ মানুষের আনাগোনায় মুখরিত ছিল এই বাগা। গবাদিপশু, চামড়ার পণ্য আর উৎপাদিত টাটকা জিনিসের জন্য এখানে ভিড় জমাতেন ব্যবসায়ীরা।
বাগা বোকো হারামের দখলে ছিল দুই মাসের মতো। নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী গত বছরের মার্চে এখান থেকে বোকো হারামকে হটিয়েছে বলে দাবি করে। সেই থেকে এখনো ধুলোয় ভরা রাস্তায় টহল দিয়ে যাচ্ছে সেনাসদস্যরা। তার পরও চারপাশে কেমন যেন চাপা আতঙ্ক, শূন্যতা।
সেনা টহলের পর কিছুসংখ্যক বাসিন্দা এখানে ফিরে আসে। তবে সেই সংখ্যাটা খুব কম। এক হাজারও হবে না। গত জুন থেকে বাগার এসব নিঃস্ব বাসিন্দা জীবনের প্রয়োজনে আশপাশের গ্রামে গিয়ে মাছ শিকার শুরু করে। মাছ বিক্রি করার জন্য যায় পাশের শহর মাইদুগুরিতে। বাগা থেকে পালিয়ে এই মাইদুগুরিতে অনেকে আশ্রয় নিয়েছিল।
মাছ বিক্রি করতে আসা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে নানা খবর শুনে জুলাই মাসের দিকে পাঁচ হাজারের মতো বাসিন্দা বাগায় ফিরে গিয়েছিল। তবে সেই শান্তি তাদের কপালে সয়নি। লরিতে করে বাগায় ফেরার পথে বোকো হারামের হামলায় আটজন প্রাণ হারায়। এর কয়েক দিন পর জঙ্গিরা কয়েকজন মৎস্যশিকারি ও কৃষককে গলা কেটে হত্যা করে। আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের মনে। তারা পালিয়ে যায় অন্যত্র।
বাগা থেকে বাস্তুচ্যুত এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলছিলেন, ‘বাগা এখনো মরূদ্যান হয়ে আছে। আমরা এখনো মাইদুগুরির বিভিন্ন তাঁবু, বন্ধু বা স্বজনের বাড়িতে থাকি। আতঙ্কে বাড়ি ফিরতে পারি না।’
প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের সহায়তায় নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী বোকো হারামের জঙ্গিদের কিছু কিছু এলাকা থেকে হটিয়ে দিতে সক্ষম হলেও আকস্মিক হামলা থেকে তাদের রক্ষা করতে পারছে না। ফলে যেকোনো সময় হামলা হতে পারে, এমন ভয়ে বাসিন্দারা আর বাগায় ফিরতে চায় না।
বাগার বণিক ইউনিয়নের প্রধান বুকার কোরি বলেন, ‘আমরা এখনো বাগায় ফিরতে পারিনি। বোকো হারামের সদস্যরা আশপাশের দ্বীপে থাকায় এটা এখনো আমাদের জন্য নিরাপদ নয়।’
বোকো হারাম স্বাধীন একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই চাওয়া থেকেই শুরু তাদের সশস্ত্র সহিংসতার। গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত ইউএসএআইডির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোকো হারামের নানা সহিংস কর্মকাণ্ডে নাইজেরিয়ার প্রায় ২৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ ছাড়া গণমাধ্যম বলছে, সংগঠনটির সহিংসতায় নাইজেরিয়ায় অন্তত ১৭ হাজার মানুষ মারা গেছে। লাখ লাখ ডলারের অবকাঠামোগত স্থাপনা ধ্বংস করেছে তারা।
এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করা হবে, এর সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনার কথা জানাতে পারেনি নাইজেরিয়ার সরকার। যদিও নতুন বছরের বার্তায় দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহামাদু বুহারি বলেছেন, এখানকার মানুষের নিরাপত্তায় এখনো অনেক কিছু করার আছে। এই জঙ্গিদের নির্মূল না করা পর্যন্ত সরকার থামবে না।
No comments