স্বাধীনতার নায়ককে বিদায়
হোসাইন আইত-আহমেদ |
ফ্রান্সের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে প্রথম দিকে যাঁরা বিদ্রোহ করেছিলেন, তাঁদের একজন তিনি। অথচ তাঁকেই কিনা স্বাধীনতার কয়েক বছরের মাথায় নির্বাসনে পাঠানো হয়! সেই স্বাধীনতার নায়ক হোসাইন আইত-আহমেদকে গত শুক্রবার শেষবিদায় জানাল আলজেরিয়াবাসী। খবর বিবিসির। আইত-আহমেদ গত ২৩ ডিসেম্বর সুইজারল্যান্ডে মারা যান। আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। আর শুক্রবার তাঁর দাফনে অংশ নেয় হাজারো শোকাহত আলজেরীয়। আলজেরিয়ায় ফরাসি দখলদারত্বের বিরুদ্ধে ১৯৫৪ সালে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন হোসাইন আইত-আহমেদসহ হাতেগোনা কিছু মানুষ। ওই বিদ্রোহই পরে স্বাধীনতাযুদ্ধে মোড় নেয়। রক্তাক্ত লড়াইয়ের পর ১৯৬২ সালে স্বাধীন হয় আলজেরিয়া। স্বাধীনতার পর সামরিক বাহিনী দেশের রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করলে তার কড়া সমালোচনা করেন আইত-আহমেদ। পরে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটাতে তিনি ১৯৬৩ সালে সোশ্যালিস্ট ফোর্সেস ফ্রন্ট (এসএফএফ) গঠন করেন।
এরপর গ্রেপ্তার-কারাবরণসহ নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হন তিনি। ১৯৬৬ সালে তিনি সুইজারল্যান্ডে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন। এরপর ১৯৮৮ সালে দেশে ফিরলেও ১৯৯২ সালে দেশের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বৌদিয়াফ হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর আবার সুইজারল্যান্ডে চলে যান। এরপর মাঝেমধ্যে আলজেরিয়ায় এলেও আর স্থায়ীভাবে থাকেননি তিনি। যে নয়জনকে আলজেরিয়ার স্বাধীনতার নায়ক হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে, তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে আইত-আহমেদ মারা গেলেন। আলজেরীয় সরকার তাঁকে স্বাধীনতার অন্য নায়কদের পাশে দাফন করতে চেয়েছিল। তবে পরিবার তাতে আপত্তি জানায়। এরপর রাজধানী থেকে ১১০ কিলোমিটার পূর্বে নিজ গ্রামে তাঁকে সমাহিত করা হয়। এ সময় জনতা ‘আলজেরিয়া মুক্ত ও গণতান্ত্রিক’ বলে স্লোগান দেয়। এটি আইত-আহমেদের গড়া দল এসএফএফ-এর স্লোগান। দলটি এখনো বিরোধী দল হিসেবে আলজেরিয়ায় সক্রিয় রয়েছে।
No comments