সবাইকেই সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
৫
জানুয়ারি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
পাল্টাপাল্টি যে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে, বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ ধরনের
পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটার আশংকা থেকেই
যায়। গত বছরও রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করেই দেশে
রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। গত বছরের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনার
সূত্রপাত যাতে না হয় এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলকেই বিশেষভাবে সতর্ক
থাকতে হবে। রাজনীতিতে পরমতসহিষ্ণুতার চর্চা বাড়াতে হবে। তা না হলে বিভিন্ন
ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি বাধার মুখে পড়তে পারে।
সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনের পর বিএনপি হরতালের কোনো কর্মসূচি দেয়নি। এর মধ্য দিয়ে দলটির নেতৃবৃন্দ দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় অনাকাক্সিক্ষত বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটে, এটি নতুন নয়। তবে সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনকে ঘিরে যে ধরনের সহিংসতার আশংকা করা হয়েছিল, তেমন সহিংসতা হয়নি। এবারের পৌর নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে এটিও একটি ইতিবাচক দিক। এসব পর্যবেক্ষণ করে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে হয়েছিল, আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নতুন ধারার সৃষ্টি হবে; রাজনৈতিক দলগুলো সংঘাত সংঘর্ষ এড়ানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়ায় আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নতুন ধারা সৃষ্টির সম্ভাবনা ম্লান হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে দু’দলকেই সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে। আওয়ামী লীগ যেহেতু ক্ষমতায় রয়েছে; সেজন্য দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয় সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বিশেষ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বিএনপিকেও সহিংসতা পরিহার করে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে হবে।
বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে ধারণ করে এটা স্পষ্ট করার জন্য জামায়াতের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অস্পষ্টতা দূর করতে হবে। বিএনপিকে জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়েও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করলে এ দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। বিএনপির তরুণ নেতৃত্ব মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস চর্চায় যে বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছে এটা ইতিবাচক।
পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার হবে। নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতুর মতো একটি বড় কাজ যে গতিতে এগিয়ে চলছে, এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নতুন মাত্রা পেল। আমাদের উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যাতে সহিষ্ণুতার নতুন মাত্রা যোগ হয়, সেজন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বিশেষ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনের মতো কর্মকাণ্ড থেকে দু’দলকেই দূরে থাকতে হবে। বিএনপি যদি গত বছরের মতো সংঘাতপূর্ণ কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করে তাহলে তাদের জনসমর্থন দ্রুত কমতে থাকবে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা-বিবৃতি কিংবা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সময় উদরতার পরিচয় না দিলে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সহিষ্ণুতার নতুন মাত্রা যোগ হবে না।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : লেখক, অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনের পর বিএনপি হরতালের কোনো কর্মসূচি দেয়নি। এর মধ্য দিয়ে দলটির নেতৃবৃন্দ দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় অনাকাক্সিক্ষত বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটে, এটি নতুন নয়। তবে সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনকে ঘিরে যে ধরনের সহিংসতার আশংকা করা হয়েছিল, তেমন সহিংসতা হয়নি। এবারের পৌর নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে এটিও একটি ইতিবাচক দিক। এসব পর্যবেক্ষণ করে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে হয়েছিল, আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নতুন ধারার সৃষ্টি হবে; রাজনৈতিক দলগুলো সংঘাত সংঘর্ষ এড়ানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়ায় আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নতুন ধারা সৃষ্টির সম্ভাবনা ম্লান হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে দু’দলকেই সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে। আওয়ামী লীগ যেহেতু ক্ষমতায় রয়েছে; সেজন্য দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয় সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বিশেষ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বিএনপিকেও সহিংসতা পরিহার করে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে হবে।
বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে ধারণ করে এটা স্পষ্ট করার জন্য জামায়াতের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অস্পষ্টতা দূর করতে হবে। বিএনপিকে জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়েও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করলে এ দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। বিএনপির তরুণ নেতৃত্ব মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস চর্চায় যে বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছে এটা ইতিবাচক।
পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার হবে। নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতুর মতো একটি বড় কাজ যে গতিতে এগিয়ে চলছে, এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নতুন মাত্রা পেল। আমাদের উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যাতে সহিষ্ণুতার নতুন মাত্রা যোগ হয়, সেজন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বিশেষ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনের মতো কর্মকাণ্ড থেকে দু’দলকেই দূরে থাকতে হবে। বিএনপি যদি গত বছরের মতো সংঘাতপূর্ণ কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করে তাহলে তাদের জনসমর্থন দ্রুত কমতে থাকবে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা-বিবৃতি কিংবা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সময় উদরতার পরিচয় না দিলে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সহিষ্ণুতার নতুন মাত্রা যোগ হবে না।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : লেখক, অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
No comments