তিন দলে ভাগ হয়ে হামলা- আটক ৩ সন্দেহভাজন, চিহ্নিত ১ হামলাকারী
শোকে
স্তব্ধ প্যারিস। পিনপতন নিস্তব্ধতা চারদিকে। নিজেদের ঘরে বন্দি করে রেখেছে
মানুষজন। সরকারের জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার হয় নি। যতটা সম্ভব সবাইকে বাড়ির
বাইরে না বেরুতে উৎসাহিত করা হয়েছে। পরামর্শ দেয়া হয়েছে কেউ যেন কৌতুক করে
কাউকে ফোন না করেন। কোথাও যেন ফায়ারওয়ার্ক বা আতশবাজির উৎসব করা না হয়।
শনিবার প্যারিসের উপকণ্ঠে বাগনোলেটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আতশবাজির উৎসব
চলছিল। পুলিশ এটাকে বন্দুকযুদ্ধ মনে করে হেলিকপ্টার নিয়ে ছুটে যায় সেখানে।
সব মিলে প্যারিস তথা ফ্রান্স এক রক্ত হিম করা আতঙ্কের মধ্যে। শুক্রবার রাতে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ন্যক্কারজনক হামলায় কমপক্ষে নিহত হন ১২৯
জন। আহত হয় সাড়ে তিন শ’ মানুষ। এর মধ্যে কমপক্ষে ৯৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ফলে নিহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ হামলার প্রতিবাদ ও নিহতদের
পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সারা বিশ্বে চলছে শোকের আবহ। ওদিকে সাত
সন্ত্রাসী তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে ওই হামলা চালায় বলে মন্তব্য করেছেন
প্যারিসের প্রধান প্রসিকিউটর ফঁ্রাসোয়া মলিনস। এর মধ্যে ৬ জন আত্মঘাতী
হামলায় নিহত হয়। অন্যজনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। হামলাকারীদের মধ্যে
একজনের ছবি গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে। সিরিয়ার যে পাসপোর্ট পাওয়া গেছে
হামলাস্থলে তা থেকে ওই ছবিটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, তার নাম আহমেদ আল
মুহামেদ (২৫)। অন্য আরেকজনকে হামলায় জড়িত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার নাম
ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই। সে ফরাসি নাগরিক। তাকে বেলজিয়ামের এক ধর্ম প্রচারক
কট্টরপন্থি হয়ে ওঠার প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে ৬
সন্দেহভাজনকে। এর মধ্যে রয়েছে ওমরের পিতা, এক ভাই ও ভাবী। তাদেরকে পুলিশি
হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বেলজিয়াম আটক করেছে তিন ব্যক্তিকে। ফরাসি ও বেলজিয়াম
সীমান্তের কাছে তিন ব্যক্তিকে আটক করার পর প্যারিস হামলার সঙ্গে বেলজিয়ামের
সম্ভাব্য যোগসূত্র থাকার বিষয়টি তদন্তে উঠে এসেছে। যে বাটাক্লাঁ মিউজিক
হলের বাইরে একটি কালো ভক্সওয়াগন পোলো পাওয়া গেছে তা বেলজিয়ামে নিবন্ধিত।
এটি বেলজিয়াম থেকে ভাড়া করেছিলেন এক ফরাসি। ওদিকে স্টেডি ডি ফ্রান্সে পাওয়া
গেছে সিরিয়ান পাসপোর্ট। তবে সেগুলো ভুয়া বলে জানিয়েছে প্যারিসের পত্রিকা
লা মন্ডে। বলা হয়েছে, এ পাসপোর্টগুলো হয়তো তুরস্কে বানানো হয়ে থাকতে পারে।
ওদিকে, হামলার পর ইউরোপজুড়ে সীমান্ত এলাকাগুলোতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
অনলাইন ডেইলি মেইল বলেছে, হামলাকারীদের মধ্যে একজন নারীও ছিল। সব মিলে
হামলায় অংশ নেয় ৮ সদস্য। ওদিকে যে আহমেদ আল মুহামেদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে
তার সম্পর্কে সার্বিয়ান মিডিয়া বলেছে, বাটাক্লাঁ কনসার্ট হলে হামলার সময়
সে নিজেকে বোমা দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। তার মৃতদেহের পাশে পড়েছিল সিরিয়ার
পাসপোর্ট। সেখানে হামলা থেকে যারা বেঁচে গেছেন তারা বলছেন, ওই হলে তিন
হামলাকারী নিজেদের উড়িয়ে দেয়। চতুর্থ একজনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। সে
আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তার আগেই পুলিশ তাকে খতম করে দিয়েছে। এসব
হামলায় তারা ব্যবহার করে একে-৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড ও বেল্টের সঙ্গে
বিস্ফোরক। অন্যদিকে, নিহত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
কৌঁসুলি মোলিনস সাংবাদিকদের জানান, হামলাকারীরা কোন জায়গা থেকে এসেছে, তা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের অর্থ যোগান দেয়া হয়েছে কিভাবে, সেটাও বের করতে হবে। তিনি জানান, সাত হামলাকারী নিহত হয়েছে। তাদের সবার কাছেই ছিল ভারী অস্ত্রশস্ত্র। ছিল কালাশনিকভ রাইফেল। সবার পরনে ছিল একই ধরনের বিস্ফোরক বেল্ট।
তিনি আরও জানান, এ হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজনকে বেলজিয়ামে আটক করা হয়েছে। বেলজিয়ামের বিচার বিভাগের এক মুখপাত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মূলত, প্যারিস হামলার ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস থেকে। এ কারণেই অভিযান শুরু হয়েছে দেশটিতে। পশ্চিমা একটি গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র বলেছে, মোলেনবিক-সেইন্ট-জিন এলাকার তিনটি ঘরে এ অভিযান চালানো হয়েছে। ওই সূত্র জানায়, প্যারিস হামলার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে চেনে বেলজিয়ামের গোয়েন্দা সংস্থা। তার ওপর ভিত্তি করেও অভিযান চালানো হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল বলেন, ব্রাসেলসে আটককৃত সন্দেহভাজনদের সঙ্গে প্যারিস হামলার কোন যোগসূত্র আছে কি-না তা পরখ করা হচ্ছে।
মোলিনস জানান, অন্যতম হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত ওমর ইসমাইলের বয়স ২৯ বছর। সে ফরাসি নাগরিক। তার অতীতে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার একটি প্রমাণ পাওয়া গেলেও, কখনও কারাগারে থাকতে হয়নি। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্যারিসের ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কৌরকৌরন্নেস নামে এক শহরে থাকতো ইসমাইল। সে মৌলবাদে দীক্ষিত হয়েছে বলে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে তথ্য ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসবাদবিরোধী কোন তদন্তে কখনই তার নাম উঠে আসেনি। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, মোস্তেফাই সিরিয়ায় কখনও গিয়েছে কি-না, সেটি এখন যাচাই করা হচ্ছে। তার পিতা ও ভাইকে ইতিমধ্যেই কারাগারে নিয়েছে পুলিশ। তল্লাশি চালিয়েছে তার ঘরে। মোস্তেফাইর বড় ভাই স্বেচ্ছায় একটি পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়েছেন। তিনিও হামলার ব্যাপারে নিজের ক্ষোভ, বিহ্বলতা প্রকাশ করেন। তবে তার দাবি, কয়েক বছর থেকেই তার এ ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কোন যোগাযোগ ছিল না তার।
জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। একটি কনসার্ট হল, বৃহৎ স্টেডিয়াম, রেস্তরাঁ ও বারে প্রায় একযোগে হামলাগুলো চালানো হয়েছে। আইএস বলেছে, সিরিয়ায় আইএস-এর ওপর ফরাসি বিমান হামলা চালানোর প্রতিবাদেই ওই হামলা চালানো হয়েছে। তবে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বলেছেন, সিরিয়ায় আইএস-এর বিরুদ্ধে বিমান হামলা অব্যাহত রাখবে ফ্রান্স।
তিন দলে ভাগ হয়ে হামলা
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে শুক্রবার রাতের ভয়াবহ হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে বেলজিয়ামে তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে সে দেশের পুলিশ। তাদের সঙ্গে হামলার যোগসূত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্যারিসের প্রধান কৌঁসুলি ফ্রাঙ্কো মোলিনস জানান, সন্ত্রাসীরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে শুক্রবার রাতের হামলাটি চালিয়েছে। অপরদিকে ফ্রান্সের এক পার্লামেন্ট সদস্য ও মেয়র জানান, এক হামলাকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার নাম ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই। এ খবর দিয়েছে বিবিসি ও সিএনএন। শুক্রবার রাতে প্যারিসে চালানো ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১২৯ জন। আহত হন ৩৫০ জনেরও বেশি। কৌঁসুলি মোলিনস সাংবাদিকদের জানান, হামলাকারীরা কোন জায়গা থেকে এসেছে, তা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের অর্থ যোগান দেয়া হয়েছে কিভাবে, সেটাও বের করতে হবে। তিনি জানান, সাত হামলাকারী নিহত হয়েছে। তাদের সবার কাছেই ভারি অস্ত্রশস্ত্র ছিল। ছিল কালাশনিকভ রাইফেল। সবার পরনে ছিল একই ধরনের বিস্ফোরক বেল্ট।
তিনি আরও জানান, এ হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজনকে বেলজিয়ামে আটক করা হয়েছে। বেলজিয়ামের বিচার বিভাগের এক মুখপাত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মূলত, প্যারিস হামলার ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস থেকে। এ কারণেই অভিযান শুরু হয়েছে দেশটিতে। পশ্চিমা একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক সূত্র বলেছে, মোলেনবিক-সেইন্ট-জিন এলাকার তিনটি ঘরে এ অভিযান চালানো হয়েছে। ওই সূত্র জানায়, প্যারিস হামলার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে চেনে বেলজিয়ামের গোয়েন্দা সংস্থা। তার ওপর ভিত্তি করেও অভিযান চালানো হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল বলেন, ব্রাসেলসে আটককৃত সন্দেহভাজনদের সঙ্গে প্যারিস হামলার কোন যোগসূত্র আছে কি না তা পরখ করা হচ্ছে।
মোলিনস জানান, অন্যতম হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত ওমর ইসমাইলের বয়স ২৯ বছর। সে ফরাসি নাগরিক। তার অতীতে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার একটি প্রমাণ পাওয়া গেলেও, কখনও কারাগারে থাকতে হয়নি। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্যারিসের ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কৌরকৌরন্নেস নামে এক শহরে থাকতো ইসমাইল। সে মৌলবাদে দীক্ষিত হয়েছে বলে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে তথ্য ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কোন তদন্তে কখনই তার নাম উঠে আসেনি। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, মোস্তেফাই সিরিয়ায় কখনও গিয়েছে কি না, সেটি এখন যাচাই করা হচ্ছে। তার পিতা ও ভাইকে ইতিমধ্যেই কারাগারে নিয়েছে পুলিশ। তালাশ চালিয়েছে তার ঘরে। মোস্তেফাইর বড় ভাই স্বেচ্ছায় একটি পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়েছেন। তিনিও হামলার ব্যাপারে নিজের ক্ষোভ, বিহ্বলতা প্রকাশ করেন। তবে তার দাবি, কয়েক বছর থেকেই তার এ ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কোন যোগাযোগ ছিল না তার।
জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। একটি কনসার্ট হল, বৃহৎ স্টেডিয়াম, রেস্তোরাঁ ও বারে প্রায় একযোগে হামলাগুলো চালানো হয়েছে। আইএস বলেছে, সিরিয়ায় আইএস-এর ওপর ফরাসি বিমান হামলা চালানোর প্রতিবাদেই ওই হামলা চালানো হয়েছে। তবে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বলেছেন, সিরিয়ায় আইএস-এর বিরুদ্ধে বিমান হামলা অব্যাহত রাখবে ফ্রান্স।
প্যারিস হামলাস্থলে পাওয়া সিরিয়ান পাসপোর্ট দুইটি ভুয়া
প্যারিসে আক্রমণস্থলে পাওয়া পাসপোর্ট দু’টি ভুয়া। যদিও ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করেই হামলাকারীরা শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছিলো। এ তথ্য দিয়েছে ফ্রান্সের লা মন্ডে পত্রিকা। ফরাসি পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোরের সাংবাদিক জন স্নো টুইটারে বলেন, ঘটনাস্থলে পাওয়া দুইটি সিরিয়ান পাসপোর্ট মূলত ভুয়া। এগুলো সম্ভবত তুরস্কে বানানো হয়েছে। বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা লেভান্টাইন গ্রুপের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাইকেল হরোইটজ জানিয়েছেন, ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ফ্রান্সের ওপর হামলা সহ আইএস-এর বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। এদিকে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্যারিস হামলার সঙ্গে কোন অবস্থাতেই শরণার্থী সংকটকে জড়িয়ে ফেলা উচিত হবে না।
ভাই-বোনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে নি ওমর ইসমাইল
প্যারিস হামলার অন্যতম ঘাতক ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই। ২৯ বছর বয়সী এই যুবক ফরাসি নাগরিক। প্যারিস থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কোরকোরোনেস শহর থেকে সে প্রবেশ করে প্যারিসে। পাশ্ববর্তী কারট্রিস শহরে বসবাস করতো ২০১২ সাল পর্যন্ত। এসব তথ্য দিয়েছেন ডেপুটি মেয়র জ্যাঁ পিয়েরে গর্জেস। ওমরের বিরুদ্ধে এর আগে থেকেই অপরাধে জড়িত থাকার ইতিহাস আছে। তবে তাকে কখনও জেলে যেতে হয় নি। নিরাপত্তা বিভাগগুলো মনে করছে তার মাঝে কট্টরপন্থি চিন্তাচেতনা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে ২০১০ সালে। তবে তাকে কখনও সন্ত্রাস বিরোধী জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয় নি। তার বড়ভাই বলেছেন, পারিবারিক বিরোধের কারণে বেশ কয়েক বছর ওমর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে নি। এখন ওমর কট্টরপন্থি হয়ে পড়েছে এ কথা শুনে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার রাতে তিনি ছিলেন প্যারিসে। নিজ চোখে দেখেছেন কি রক্তপাত ঘটানো হয়েছে। তাই যখন ওমরের নাম উঠে আসে তিনি পিতাকে সঙ্গে নিয়ে নিজে গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দেন। ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই ছিলেন তার পরিবারের ৬ ভাই-বোনের একজন। এর আগে সে তার মেয়ে ও পরিবারের অন্যদের নিয়ে আলজেরিয়া সফর করেছে। বলা হচ্ছে, সে বেলজিয়ামের এক ধর্ম প্রচারকের কাছ থেকে কট্টরপন্থি আদর্শের শিক্ষা নিয়েছে।
কৌঁসুলি মোলিনস সাংবাদিকদের জানান, হামলাকারীরা কোন জায়গা থেকে এসেছে, তা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের অর্থ যোগান দেয়া হয়েছে কিভাবে, সেটাও বের করতে হবে। তিনি জানান, সাত হামলাকারী নিহত হয়েছে। তাদের সবার কাছেই ছিল ভারী অস্ত্রশস্ত্র। ছিল কালাশনিকভ রাইফেল। সবার পরনে ছিল একই ধরনের বিস্ফোরক বেল্ট।
তিনি আরও জানান, এ হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজনকে বেলজিয়ামে আটক করা হয়েছে। বেলজিয়ামের বিচার বিভাগের এক মুখপাত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মূলত, প্যারিস হামলার ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস থেকে। এ কারণেই অভিযান শুরু হয়েছে দেশটিতে। পশ্চিমা একটি গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র বলেছে, মোলেনবিক-সেইন্ট-জিন এলাকার তিনটি ঘরে এ অভিযান চালানো হয়েছে। ওই সূত্র জানায়, প্যারিস হামলার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে চেনে বেলজিয়ামের গোয়েন্দা সংস্থা। তার ওপর ভিত্তি করেও অভিযান চালানো হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল বলেন, ব্রাসেলসে আটককৃত সন্দেহভাজনদের সঙ্গে প্যারিস হামলার কোন যোগসূত্র আছে কি-না তা পরখ করা হচ্ছে।
মোলিনস জানান, অন্যতম হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত ওমর ইসমাইলের বয়স ২৯ বছর। সে ফরাসি নাগরিক। তার অতীতে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার একটি প্রমাণ পাওয়া গেলেও, কখনও কারাগারে থাকতে হয়নি। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্যারিসের ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কৌরকৌরন্নেস নামে এক শহরে থাকতো ইসমাইল। সে মৌলবাদে দীক্ষিত হয়েছে বলে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে তথ্য ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসবাদবিরোধী কোন তদন্তে কখনই তার নাম উঠে আসেনি। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, মোস্তেফাই সিরিয়ায় কখনও গিয়েছে কি-না, সেটি এখন যাচাই করা হচ্ছে। তার পিতা ও ভাইকে ইতিমধ্যেই কারাগারে নিয়েছে পুলিশ। তল্লাশি চালিয়েছে তার ঘরে। মোস্তেফাইর বড় ভাই স্বেচ্ছায় একটি পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়েছেন। তিনিও হামলার ব্যাপারে নিজের ক্ষোভ, বিহ্বলতা প্রকাশ করেন। তবে তার দাবি, কয়েক বছর থেকেই তার এ ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কোন যোগাযোগ ছিল না তার।
জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। একটি কনসার্ট হল, বৃহৎ স্টেডিয়াম, রেস্তরাঁ ও বারে প্রায় একযোগে হামলাগুলো চালানো হয়েছে। আইএস বলেছে, সিরিয়ায় আইএস-এর ওপর ফরাসি বিমান হামলা চালানোর প্রতিবাদেই ওই হামলা চালানো হয়েছে। তবে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বলেছেন, সিরিয়ায় আইএস-এর বিরুদ্ধে বিমান হামলা অব্যাহত রাখবে ফ্রান্স।
তিন দলে ভাগ হয়ে হামলা
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে শুক্রবার রাতের ভয়াবহ হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে বেলজিয়ামে তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে সে দেশের পুলিশ। তাদের সঙ্গে হামলার যোগসূত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্যারিসের প্রধান কৌঁসুলি ফ্রাঙ্কো মোলিনস জানান, সন্ত্রাসীরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে শুক্রবার রাতের হামলাটি চালিয়েছে। অপরদিকে ফ্রান্সের এক পার্লামেন্ট সদস্য ও মেয়র জানান, এক হামলাকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার নাম ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই। এ খবর দিয়েছে বিবিসি ও সিএনএন। শুক্রবার রাতে প্যারিসে চালানো ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১২৯ জন। আহত হন ৩৫০ জনেরও বেশি। কৌঁসুলি মোলিনস সাংবাদিকদের জানান, হামলাকারীরা কোন জায়গা থেকে এসেছে, তা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের অর্থ যোগান দেয়া হয়েছে কিভাবে, সেটাও বের করতে হবে। তিনি জানান, সাত হামলাকারী নিহত হয়েছে। তাদের সবার কাছেই ভারি অস্ত্রশস্ত্র ছিল। ছিল কালাশনিকভ রাইফেল। সবার পরনে ছিল একই ধরনের বিস্ফোরক বেল্ট।
তিনি আরও জানান, এ হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজনকে বেলজিয়ামে আটক করা হয়েছে। বেলজিয়ামের বিচার বিভাগের এক মুখপাত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মূলত, প্যারিস হামলার ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস থেকে। এ কারণেই অভিযান শুরু হয়েছে দেশটিতে। পশ্চিমা একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক সূত্র বলেছে, মোলেনবিক-সেইন্ট-জিন এলাকার তিনটি ঘরে এ অভিযান চালানো হয়েছে। ওই সূত্র জানায়, প্যারিস হামলার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে চেনে বেলজিয়ামের গোয়েন্দা সংস্থা। তার ওপর ভিত্তি করেও অভিযান চালানো হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল বলেন, ব্রাসেলসে আটককৃত সন্দেহভাজনদের সঙ্গে প্যারিস হামলার কোন যোগসূত্র আছে কি না তা পরখ করা হচ্ছে।
মোলিনস জানান, অন্যতম হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত ওমর ইসমাইলের বয়স ২৯ বছর। সে ফরাসি নাগরিক। তার অতীতে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার একটি প্রমাণ পাওয়া গেলেও, কখনও কারাগারে থাকতে হয়নি। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্যারিসের ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কৌরকৌরন্নেস নামে এক শহরে থাকতো ইসমাইল। সে মৌলবাদে দীক্ষিত হয়েছে বলে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে তথ্য ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কোন তদন্তে কখনই তার নাম উঠে আসেনি। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, মোস্তেফাই সিরিয়ায় কখনও গিয়েছে কি না, সেটি এখন যাচাই করা হচ্ছে। তার পিতা ও ভাইকে ইতিমধ্যেই কারাগারে নিয়েছে পুলিশ। তালাশ চালিয়েছে তার ঘরে। মোস্তেফাইর বড় ভাই স্বেচ্ছায় একটি পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়েছেন। তিনিও হামলার ব্যাপারে নিজের ক্ষোভ, বিহ্বলতা প্রকাশ করেন। তবে তার দাবি, কয়েক বছর থেকেই তার এ ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কোন যোগাযোগ ছিল না তার।
জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। একটি কনসার্ট হল, বৃহৎ স্টেডিয়াম, রেস্তোরাঁ ও বারে প্রায় একযোগে হামলাগুলো চালানো হয়েছে। আইএস বলেছে, সিরিয়ায় আইএস-এর ওপর ফরাসি বিমান হামলা চালানোর প্রতিবাদেই ওই হামলা চালানো হয়েছে। তবে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বলেছেন, সিরিয়ায় আইএস-এর বিরুদ্ধে বিমান হামলা অব্যাহত রাখবে ফ্রান্স।
প্যারিস হামলাস্থলে পাওয়া সিরিয়ান পাসপোর্ট দুইটি ভুয়া
প্যারিসে আক্রমণস্থলে পাওয়া পাসপোর্ট দু’টি ভুয়া। যদিও ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করেই হামলাকারীরা শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছিলো। এ তথ্য দিয়েছে ফ্রান্সের লা মন্ডে পত্রিকা। ফরাসি পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোরের সাংবাদিক জন স্নো টুইটারে বলেন, ঘটনাস্থলে পাওয়া দুইটি সিরিয়ান পাসপোর্ট মূলত ভুয়া। এগুলো সম্ভবত তুরস্কে বানানো হয়েছে। বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা লেভান্টাইন গ্রুপের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাইকেল হরোইটজ জানিয়েছেন, ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ফ্রান্সের ওপর হামলা সহ আইএস-এর বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। এদিকে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্যারিস হামলার সঙ্গে কোন অবস্থাতেই শরণার্থী সংকটকে জড়িয়ে ফেলা উচিত হবে না।
ভাই-বোনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে নি ওমর ইসমাইল
প্যারিস হামলার অন্যতম ঘাতক ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই। ২৯ বছর বয়সী এই যুবক ফরাসি নাগরিক। প্যারিস থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কোরকোরোনেস শহর থেকে সে প্রবেশ করে প্যারিসে। পাশ্ববর্তী কারট্রিস শহরে বসবাস করতো ২০১২ সাল পর্যন্ত। এসব তথ্য দিয়েছেন ডেপুটি মেয়র জ্যাঁ পিয়েরে গর্জেস। ওমরের বিরুদ্ধে এর আগে থেকেই অপরাধে জড়িত থাকার ইতিহাস আছে। তবে তাকে কখনও জেলে যেতে হয় নি। নিরাপত্তা বিভাগগুলো মনে করছে তার মাঝে কট্টরপন্থি চিন্তাচেতনা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে ২০১০ সালে। তবে তাকে কখনও সন্ত্রাস বিরোধী জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয় নি। তার বড়ভাই বলেছেন, পারিবারিক বিরোধের কারণে বেশ কয়েক বছর ওমর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে নি। এখন ওমর কট্টরপন্থি হয়ে পড়েছে এ কথা শুনে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার রাতে তিনি ছিলেন প্যারিসে। নিজ চোখে দেখেছেন কি রক্তপাত ঘটানো হয়েছে। তাই যখন ওমরের নাম উঠে আসে তিনি পিতাকে সঙ্গে নিয়ে নিজে গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দেন। ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই ছিলেন তার পরিবারের ৬ ভাই-বোনের একজন। এর আগে সে তার মেয়ে ও পরিবারের অন্যদের নিয়ে আলজেরিয়া সফর করেছে। বলা হচ্ছে, সে বেলজিয়ামের এক ধর্ম প্রচারকের কাছ থেকে কট্টরপন্থি আদর্শের শিক্ষা নিয়েছে।
No comments