সন্ত্রাসের নয়া কৌশল
শোকে
স্তব্ধ দুনিয়া। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেশে দেশে। প্যারিস হামলা কাঁপিয়ে দিয়েছে
পশ্চিমাবিশ্বকে। সন্ত্রাসবাদের ইতিহাসে যোগ হয়েছে এক নয়া অধ্যায়। আইএস যে
তাদের লড়াই পশ্চিম এশিয়ার বাইরে নিয়ে যেতে চায় তা এখন একেবারেই পরিষ্কার।
প্যারিস হামলাকে বিবেচনা করা হচ্ছে, নাইন ইলেভেনের পর সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী
হামলা হিসেবে। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ মাত্রার সহিংসতা আর কখনও ঘটেনি
প্যারিসে।
সন্ত্রাসী হামলা ইউরোপে একেবারে নতুন কিছু নয়। ২০০৪ সালের মাদ্রিদ হামলা, ২০০৫ সালের লন্ডন হামলা এবং ২০১৪ সালের ব্রাসেলস হামলার কথাও স্মরণে রয়েছে ইউরোপের মানুষের। তবে হত্যাযজ্ঞের নিষ্ঠুরতা আর কৌশলগত দিক থেকে প্যারিস হামলাটি একেবারেই নতুন। এ হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১২৯ জন। আর আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। হামলার বৈশিষ্ট্য দেখে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সন্ত্রাসীরা নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে এ হামলা পরিচালনা করেনি। তাদের টার্গেট ছিল যত বেশি সম্ভব মানুষ হত্যা করা। স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানরত জার্মানি ও ফ্রান্সের ফুটবল ম্যাচও ছিল হামলাকারীদের টার্গেট। স্টেডিয়ামের পাশে তিনজন আত্মঘাতী হামলাকারী নিজেদের শরীরের সঙ্গে বেঁধে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের হত্যা করেছে। ফ্রান্সে এরআগে এ ধরনের হামলার ঘটনা কখনও ঘটেনি। তারপর আছে বাটাক্লার কনসার্ট হলের হামলা। সেখানেও তারা যতো বেশি সম্ভব ফরাসি তরুণকে হত্যা করতে চেয়েছে। সেখানে নিহত হয়েছে ৮০ জনেরও বেশি। যেখানে যখন সম্ভব, সেখানেই সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। আইএস দেখিয়েছে যে, তারা যেকোন সময় যেকোন স্থানে হামলা চালাতে সক্ষম এবং ইউরোপের আধুনিক শহরগুলো তা প্রতিরোধে কতোটা ব্যর্থ।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা যাচ্ছে, তিনটি দলে ভাগ হয়ে প্যারিসে হামলা চালিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। প্রাথমিক তদন্তের পর এমন তথ্যই এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। প্যারিসের চিফ প্রসিকিউটর মোঁলি জানাচ্ছেন, এখন পর্যন্ত একজন হামলাকারীর পরিচয় জানা গেছে। ওমর নামে নিহত ওই সন্ত্রাসী ফ্রান্সেরই বাসিন্দা। মৃত এক সন্ত্রাসীর পাশে সিরিয়ার পাসপোর্ট পাওয়ার কথা বলা হলেও এখন জানা যাচ্ছে ওই পাসপোর্ট ভুয়া। মোঁলি জানাচ্ছেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে একটা জিনিস পরিষ্কার, যত পারো খুন করো- এটাই ছিল এই সন্ত্রাসী হামলার প্রধান লক্ষ্য। ঠাণ্ডা মাথায় গোটা অপারেশনটা চালিয়েছে ওই তিন দল। প্রত্যেকের হাতে ছিল স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র। কোমরে ছিল বিস্ফোরক বাঁধা বেল্ট।
নাইন ইলেভেন পৃথিবীর ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছিল। ইরাক-আফগানিস্তান যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল যে হামলার পর। তখনই ধারণা করা হয়েছিল, এক দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব। তবে সে যুদ্ধ যে এতোটা দীর্ঘমেয়াদি হবে তা হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেননি। ইরাক প্রশ্নে মার্কিন-বৃটিশ নীতির সমালোচনা হচ্ছে আজও। সিরিয়া সংকট সমাধানে পশ্চিমা বিশ্ব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করেন অনেক পর্যবেক্ষক। সেখানে এরইমধ্যে রাশিয়াও ঢুকে পড়েছে। আইএস রাশিয়াতেও হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি সিনাই উপত্যকায় রাশিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের দায় স্বীকার করে আইএস। মিশর ও রাশিয়া শুরুতে এ দাবি উড়িয়ে দিয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত যেসব প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে, তাতে প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়, বোমার বিস্ফোরণেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। যা আইএসের দাবির, যথার্থতাই প্রমাণ করে। ক্রমশ অনিরাপদ হয়ে ওঠছে পৃথিবী। প্যারিস হামলার বিষয়টি সারা দুনিয়ায় আলোচনার ঝড় তুলেছে। তবে তার কয়েক ঘণ্টা আগে লেবাননের বৈরুতেও একই ধরনের হামলা চালায় আইএস। যে হামলায় ৪৩ জন নিহত হন। ওই হামলাটি তেমন আলোচনায় আসেনি।
থার্টিন ইলেভেনের সামনের দিনগুলোতে আরও অশান্ত হয়ে উঠবে দুনিয়া। বারাক ওবামা ও তার মিত্রদের সিরিয়া-ইরাক নীতিতে পরিবর্তন আসবে শিগগিরই। এখন পশ্চিমারা আইএস দমনে তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। নিশ্চিতভাবেই সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসের সাম্রাজ্যে সর্বাত্মক হামলা পরিচালনা করবে তারা। তবে শিগগিরই তারা জয়ী হবেন- তার কোন নিশ্চয়তা নেই। পশ্চিমা সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা এখন একমত, অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় এখন শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে আইএস। পৃথিবীর কোন দেশই আইএস হামলার সম্ভাবনা থেকে মুক্ত নয়। প্যারিসের মতো শহরে আইএসের শক্তি প্রদর্শন আতঙ্কে রাখছে পৃথিবীর অন্য শহরগুলোকেও। যে শঙ্কা হয়তো দীর্ঘদিনেও কাটবে না।
সন্ত্রাসী হামলা ইউরোপে একেবারে নতুন কিছু নয়। ২০০৪ সালের মাদ্রিদ হামলা, ২০০৫ সালের লন্ডন হামলা এবং ২০১৪ সালের ব্রাসেলস হামলার কথাও স্মরণে রয়েছে ইউরোপের মানুষের। তবে হত্যাযজ্ঞের নিষ্ঠুরতা আর কৌশলগত দিক থেকে প্যারিস হামলাটি একেবারেই নতুন। এ হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১২৯ জন। আর আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। হামলার বৈশিষ্ট্য দেখে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সন্ত্রাসীরা নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে এ হামলা পরিচালনা করেনি। তাদের টার্গেট ছিল যত বেশি সম্ভব মানুষ হত্যা করা। স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানরত জার্মানি ও ফ্রান্সের ফুটবল ম্যাচও ছিল হামলাকারীদের টার্গেট। স্টেডিয়ামের পাশে তিনজন আত্মঘাতী হামলাকারী নিজেদের শরীরের সঙ্গে বেঁধে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের হত্যা করেছে। ফ্রান্সে এরআগে এ ধরনের হামলার ঘটনা কখনও ঘটেনি। তারপর আছে বাটাক্লার কনসার্ট হলের হামলা। সেখানেও তারা যতো বেশি সম্ভব ফরাসি তরুণকে হত্যা করতে চেয়েছে। সেখানে নিহত হয়েছে ৮০ জনেরও বেশি। যেখানে যখন সম্ভব, সেখানেই সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। আইএস দেখিয়েছে যে, তারা যেকোন সময় যেকোন স্থানে হামলা চালাতে সক্ষম এবং ইউরোপের আধুনিক শহরগুলো তা প্রতিরোধে কতোটা ব্যর্থ।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা যাচ্ছে, তিনটি দলে ভাগ হয়ে প্যারিসে হামলা চালিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। প্রাথমিক তদন্তের পর এমন তথ্যই এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। প্যারিসের চিফ প্রসিকিউটর মোঁলি জানাচ্ছেন, এখন পর্যন্ত একজন হামলাকারীর পরিচয় জানা গেছে। ওমর নামে নিহত ওই সন্ত্রাসী ফ্রান্সেরই বাসিন্দা। মৃত এক সন্ত্রাসীর পাশে সিরিয়ার পাসপোর্ট পাওয়ার কথা বলা হলেও এখন জানা যাচ্ছে ওই পাসপোর্ট ভুয়া। মোঁলি জানাচ্ছেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে একটা জিনিস পরিষ্কার, যত পারো খুন করো- এটাই ছিল এই সন্ত্রাসী হামলার প্রধান লক্ষ্য। ঠাণ্ডা মাথায় গোটা অপারেশনটা চালিয়েছে ওই তিন দল। প্রত্যেকের হাতে ছিল স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র। কোমরে ছিল বিস্ফোরক বাঁধা বেল্ট।
নাইন ইলেভেন পৃথিবীর ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছিল। ইরাক-আফগানিস্তান যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল যে হামলার পর। তখনই ধারণা করা হয়েছিল, এক দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব। তবে সে যুদ্ধ যে এতোটা দীর্ঘমেয়াদি হবে তা হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেননি। ইরাক প্রশ্নে মার্কিন-বৃটিশ নীতির সমালোচনা হচ্ছে আজও। সিরিয়া সংকট সমাধানে পশ্চিমা বিশ্ব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করেন অনেক পর্যবেক্ষক। সেখানে এরইমধ্যে রাশিয়াও ঢুকে পড়েছে। আইএস রাশিয়াতেও হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি সিনাই উপত্যকায় রাশিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের দায় স্বীকার করে আইএস। মিশর ও রাশিয়া শুরুতে এ দাবি উড়িয়ে দিয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত যেসব প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে, তাতে প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়, বোমার বিস্ফোরণেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। যা আইএসের দাবির, যথার্থতাই প্রমাণ করে। ক্রমশ অনিরাপদ হয়ে ওঠছে পৃথিবী। প্যারিস হামলার বিষয়টি সারা দুনিয়ায় আলোচনার ঝড় তুলেছে। তবে তার কয়েক ঘণ্টা আগে লেবাননের বৈরুতেও একই ধরনের হামলা চালায় আইএস। যে হামলায় ৪৩ জন নিহত হন। ওই হামলাটি তেমন আলোচনায় আসেনি।
থার্টিন ইলেভেনের সামনের দিনগুলোতে আরও অশান্ত হয়ে উঠবে দুনিয়া। বারাক ওবামা ও তার মিত্রদের সিরিয়া-ইরাক নীতিতে পরিবর্তন আসবে শিগগিরই। এখন পশ্চিমারা আইএস দমনে তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। নিশ্চিতভাবেই সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসের সাম্রাজ্যে সর্বাত্মক হামলা পরিচালনা করবে তারা। তবে শিগগিরই তারা জয়ী হবেন- তার কোন নিশ্চয়তা নেই। পশ্চিমা সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা এখন একমত, অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় এখন শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে আইএস। পৃথিবীর কোন দেশই আইএস হামলার সম্ভাবনা থেকে মুক্ত নয়। প্যারিসের মতো শহরে আইএসের শক্তি প্রদর্শন আতঙ্কে রাখছে পৃথিবীর অন্য শহরগুলোকেও। যে শঙ্কা হয়তো দীর্ঘদিনেও কাটবে না।
No comments