লক্ষ্মীটি আমায় ক্ষমা করো...
‘লক্ষ্মীটি কথা দিচ্ছি—এমনটি আর হবে না। তুমি তো জানোই তুমি আমার ভালোবাসা। দয়া করে আমায় ক্ষমা করে দাও।’
প্রেমিকা র্যাকুয়েলের কাছে এমনই অনুনয়-বিনয় করে চিঠি লিখেছিল তাঁর প্রেমিক বন্ধুটি। একই চিঠি পেয়ে র্যাকুয়েল সব ভুলে গিয়ে আবার ফিরে গেছেন তাঁর প্রিয় মানুষটির কাছে। কিন্তু পাঁচ সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও একই কাণ্ড। আবারও গায়ে হাত তুলল প্রেমিক। পেটাতে পেটাতে প্রেমিকাকে পাঠিয়ে দিল যমের ঘরে।
এএফপির খবরে জানানো হয়, সম্প্রতি পেরুতে ‘ডোন্ট ডাই ফর মি’ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মুখবন্ধ রচনা করেন নোবেলজয়ী পেরুর লেখক মারিও ভারগাস লোওসা। বইটি হচ্ছে প্রেমের চিঠি, ই-মেইল ও খুদে বার্তার সংকলন। তবে এসবই সেই সব নারীদের কাছ থেকে নেওয়া যারা তাঁদের ছেলে বন্ধুর হাতে আহত হয়েছেন। তাঁদেরই একজন র্যাকুয়েল। বইটিতে র্যাকুয়েলের জীবনে ঘটে যাওয়া এমন ২৫টি ঘটনার বিবরণ রয়েছে।
স্ত্রী বা প্রেমিকাকে মারধর করার পর ক্ষমা চেয়ে লেখা বিভিন্ন জনের চিঠিতেই ‘বিশ্বাস করো, আমি আসলে এমন নই; ’ ‘আমার এমন উদ্দেশ্য ছিল না’, ‘আমি আর কখনো এমন করব না’-—এসব কথা বারবার এসেছে।
যেসব দেশে নারীরা বেশি সহিংসতার শিকার হন, এর মধ্যে পেরু অন্যতম। দেশটির সরকারি তথ্যমতে, গত ছয় বছরে ৬৮০ জন নারী তাঁর পুরুষ সঙ্গীর হাতে খুন হয়েছেন।
নারীর ওপর সহিংসতার দিক দিয়ে পেরুর অবস্থা খারাপ। রাজধানীর বাইরের অবস্থা শোচনীয়। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নারীদের ওপর সহিংসতা নিয়ে পেরু, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড, ইথিওপিয়া, জাপানসহ ১০টি দেশে জরিপ চালায়।
সেই জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, পেরুতে এই হার সবচেয়ে বেশি। দেশটির অভ্যন্তরে ৬১ শতাংশ নারী তাঁর পুরুষ সঙ্গীর হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৯ শতাংশই কিল, ঘুষি, লাথির শিকার হয়ে থাকেন। এমনকি ধারালো অস্ত্র দিয়েও চলে নির্যাতন।
দুটি চিঠি
‘তুমি তো জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। যদিও আমি ভুল করেছি, তবে কথা দিচ্ছি এমনটি আর হবে না।’ —গিয়ানকারলো এই কথাগুলো চিঠি আকারে লিখেছিল স্ত্রী আঁদ্রেয়াকে। এর পর আঁদ্রেয়া সব ভুলে আবার স্বামীকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন। একদিন যন্ত্রেরবাক্স দিয়ে স্ত্রীর মুখমণ্ডল থেঁতলে দিয়েছিল গিয়ানকারলো।
ভিক্টর তাঁর স্ত্রী কারলাকে লিখেছিলেন, ‘আমি শুধু জানি, তুমি আমার। অন্য কারও জন্য তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে, এটা আমি কোনোভাবেই মানতে পারছিলাম না। তাই আমি উদভ্রান্ত হয়ে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু আমি জানি, এমনটি আর হবে না।’
এক বছর পর কারলা যখন অন্তঃসত্ত্বা তখন ভিক্টর তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করেন। এতে কারলার ভ্রূণ ঝরে যায়। কারলা আর কোনোও দিন মা হতে পারবেন না।
পেরুর নারী অধিকার সংগঠন ভিদা মুজের প্রধান ক্যানসিয়ন বলেন, নারী যখন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যান তখন তাঁরা ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’, ‘তোমাকে আমার প্রয়োজন’, ‘আমি ভালো হয়ে যাব’-এসব মধুর মধুর কথা শোনে গলে যান। কিন্তু পুরুষদের আচরণ সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়ে যায়।
ডোন্ট ডাই ফর মি
দেশটিতে যেখানে নারীরা নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খোলেন না, সেখানে ‘ডোন্ট ডাই ফর মি’ বইটি তাঁদের সমস্যাগুলো ভিন্নভাবে সমাজের সামনে তুলে ধরেছে।
বইটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা সার্কাস গ্রে’র সঙ্গে যৌথভাবে সম্পাদনা করেছে পেরুর নারী অধিকার সংগঠন ভিদা মুজের। এই সংগঠনের প্রধান নেলি ক্যানসিয়ন বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও সাধারণত নারীরা কোনো অভিযোগ করেন না। তাই সেসব নারীর কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে।’
দুই পর্বের এ বইটি অনলাইনে (notemueraspormi. com) পড়া যাবে। প্রথম পর্বে সাদা পৃষ্ঠার ওপরে সেই সব ঘাতক পুরুষদের লেখা প্রেমপত্রের অনুলিপি হুবহু ছাপা হয়েছে। আর দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে এসব নারীর পরবর্তী জীবনের গল্প।
প্রেমিকা র্যাকুয়েলের কাছে এমনই অনুনয়-বিনয় করে চিঠি লিখেছিল তাঁর প্রেমিক বন্ধুটি। একই চিঠি পেয়ে র্যাকুয়েল সব ভুলে গিয়ে আবার ফিরে গেছেন তাঁর প্রিয় মানুষটির কাছে। কিন্তু পাঁচ সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও একই কাণ্ড। আবারও গায়ে হাত তুলল প্রেমিক। পেটাতে পেটাতে প্রেমিকাকে পাঠিয়ে দিল যমের ঘরে।
এএফপির খবরে জানানো হয়, সম্প্রতি পেরুতে ‘ডোন্ট ডাই ফর মি’ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মুখবন্ধ রচনা করেন নোবেলজয়ী পেরুর লেখক মারিও ভারগাস লোওসা। বইটি হচ্ছে প্রেমের চিঠি, ই-মেইল ও খুদে বার্তার সংকলন। তবে এসবই সেই সব নারীদের কাছ থেকে নেওয়া যারা তাঁদের ছেলে বন্ধুর হাতে আহত হয়েছেন। তাঁদেরই একজন র্যাকুয়েল। বইটিতে র্যাকুয়েলের জীবনে ঘটে যাওয়া এমন ২৫টি ঘটনার বিবরণ রয়েছে।
স্ত্রী বা প্রেমিকাকে মারধর করার পর ক্ষমা চেয়ে লেখা বিভিন্ন জনের চিঠিতেই ‘বিশ্বাস করো, আমি আসলে এমন নই; ’ ‘আমার এমন উদ্দেশ্য ছিল না’, ‘আমি আর কখনো এমন করব না’-—এসব কথা বারবার এসেছে।
যেসব দেশে নারীরা বেশি সহিংসতার শিকার হন, এর মধ্যে পেরু অন্যতম। দেশটির সরকারি তথ্যমতে, গত ছয় বছরে ৬৮০ জন নারী তাঁর পুরুষ সঙ্গীর হাতে খুন হয়েছেন।
নারীর ওপর সহিংসতার দিক দিয়ে পেরুর অবস্থা খারাপ। রাজধানীর বাইরের অবস্থা শোচনীয়। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নারীদের ওপর সহিংসতা নিয়ে পেরু, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড, ইথিওপিয়া, জাপানসহ ১০টি দেশে জরিপ চালায়।
সেই জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, পেরুতে এই হার সবচেয়ে বেশি। দেশটির অভ্যন্তরে ৬১ শতাংশ নারী তাঁর পুরুষ সঙ্গীর হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৯ শতাংশই কিল, ঘুষি, লাথির শিকার হয়ে থাকেন। এমনকি ধারালো অস্ত্র দিয়েও চলে নির্যাতন।
দুটি চিঠি
‘তুমি তো জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। যদিও আমি ভুল করেছি, তবে কথা দিচ্ছি এমনটি আর হবে না।’ —গিয়ানকারলো এই কথাগুলো চিঠি আকারে লিখেছিল স্ত্রী আঁদ্রেয়াকে। এর পর আঁদ্রেয়া সব ভুলে আবার স্বামীকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন। একদিন যন্ত্রেরবাক্স দিয়ে স্ত্রীর মুখমণ্ডল থেঁতলে দিয়েছিল গিয়ানকারলো।
ভিক্টর তাঁর স্ত্রী কারলাকে লিখেছিলেন, ‘আমি শুধু জানি, তুমি আমার। অন্য কারও জন্য তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে, এটা আমি কোনোভাবেই মানতে পারছিলাম না। তাই আমি উদভ্রান্ত হয়ে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু আমি জানি, এমনটি আর হবে না।’
এক বছর পর কারলা যখন অন্তঃসত্ত্বা তখন ভিক্টর তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করেন। এতে কারলার ভ্রূণ ঝরে যায়। কারলা আর কোনোও দিন মা হতে পারবেন না।
পেরুর নারী অধিকার সংগঠন ভিদা মুজের প্রধান ক্যানসিয়ন বলেন, নারী যখন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যান তখন তাঁরা ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’, ‘তোমাকে আমার প্রয়োজন’, ‘আমি ভালো হয়ে যাব’-এসব মধুর মধুর কথা শোনে গলে যান। কিন্তু পুরুষদের আচরণ সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়ে যায়।
ডোন্ট ডাই ফর মি
দেশটিতে যেখানে নারীরা নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খোলেন না, সেখানে ‘ডোন্ট ডাই ফর মি’ বইটি তাঁদের সমস্যাগুলো ভিন্নভাবে সমাজের সামনে তুলে ধরেছে।
বইটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা সার্কাস গ্রে’র সঙ্গে যৌথভাবে সম্পাদনা করেছে পেরুর নারী অধিকার সংগঠন ভিদা মুজের। এই সংগঠনের প্রধান নেলি ক্যানসিয়ন বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও সাধারণত নারীরা কোনো অভিযোগ করেন না। তাই সেসব নারীর কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে।’
দুই পর্বের এ বইটি অনলাইনে (notemueraspormi. com) পড়া যাবে। প্রথম পর্বে সাদা পৃষ্ঠার ওপরে সেই সব ঘাতক পুরুষদের লেখা প্রেমপত্রের অনুলিপি হুবহু ছাপা হয়েছে। আর দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে এসব নারীর পরবর্তী জীবনের গল্প।
No comments