যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাড়তি এই নিরাপত্তাব্যবস্থা কত দিন বহাল থাকবে, তা জানানো হয়নি। সিরিয়া ও ইয়েমেনে আল-কায়েদার জঙ্গিরা এমন বোমা তৈরি করছে, যা উড়োজাহাজে করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশে আনা হতে পারে। গত বুধবার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক (হোমল্যান্ড সিকিউরিটি) মন্ত্রী জেন জনসন বিমান পরিবহনে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টি আমাদের বিদেশি মিত্রদের সঙ্গেও আদান-প্রদান করছি।’ সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যে বলা হয়েছে, সিরিয়াভিত্তিক আল-কায়েদা জঙ্গিরা ব্যাপকভাবে সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্র করছে। আল-কায়েদাসংশ্লিষ্ট সিরিয়ার আল-নুসরা বা ইয়েমেনের অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলা এমন বিস্ফোরক তৈরি করছে, যা বিমানবন্দরে তল্লাশিকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আল-কায়েদা বাহিনী যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপগামী উড়োজাহাজে হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করছে। যাত্রীবাহী বা পণ্যবাহী উড়োজাহাজে সাধারণ তল্লাশিতে শনাক্ত করা যায় না—এমন বিস্ফোরক ব্যবহার করে উড়োজাহাজে হামলা চালানো হতে পারে। মার্কিন সন্ত্রাস দমন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে একটি বার্তা সংস্থার খবরে জানানো হয়, জঙ্গিগোষ্ঠী হামলার জন্য নতুন ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করতে পারে। আত্মঘাতী হামলাকারীর শরীরে ‘নন-মেটাল বিস্ফোরক দ্রব্য’ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দেওয়া হতে পারে।
মেটাল ডিটেক্টর বা সাধারণভাবে দেহ তল্লাশিতে এসব বিস্ফোরক শনাক্ত করা সম্ভব নয়। মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে, উড়োজাহাজ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় পাসপোর্টধারী যাত্রীকে ব্যবহার করা হতে পারে। এ ধরনের যাত্রীদের সাধারণত বিমানবন্দরগুলোতে কড়া তল্লাশিতে পড়তে হয় না। এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশের পাশাপাশি বিদেশি বিমানবন্দর, বিশেষ করে যেসব বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে, সেসব বিমানবন্দরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার অনুরোধ পাঠিয়েছে। উদ্বেগের প্রধান কারণ, জঙ্গিরা বোমা ফাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপগামী উড়োজাহাজ উড়িয়ে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র সতর্কতা জারি করার পর যুক্তরাজ্যের সব বিমানবন্দরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী প্যাট্রিক ম্যাকলাফলিন বলেন, ‘আমরা বিমানবন্দরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে যাত্রীদের সমস্যা হয়, এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। যুক্তরাজ্যের পরিবহন মন্ত্রণালয় নিরাপত্তা পদক্ষেপের ব্যাপারে বিস্তারিত আর কিছু জানাতে বা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সে সম্পর্কে কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। যুক্তরাজ্যের হিথরো বিমানবন্দর বিশ্বের তৃতীয় এবং ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দর। প্রতিদিন এই বিমানবন্দর হয়ে এক লাখ ৯১ হাজার ২০০ যাত্রী চলাচল করে থাকেন।
No comments