দক্ষিণের হাওয়া বদল by জেডএ মামুন ও ইমাদুল হক প্রিন্স
স্বাধীনতার চার দশক অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। এই চার দশকে বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগের যতটা উন্নয়ন হয়েছে, সে রকম হয়নি দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগে। এক সময়ের শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত এ বিভাগের প্রতিটি জেলা-উপজেলা শহরের সড়কগুলো খানা-খন্দক হয়ে বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
বছরের পর বছর সড়কগুলো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে; দেখার কেউ নেই। বরিশাল হলো বাংলাদেশের একমাত্র বিভাগ, যেখানে নেই রেললাইন; নেই পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সংযোজনের ব্যবস্থা। সে জন্যই এ অঞ্চলে গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্প-কারখানা। তবে এ অঞ্চলের জনসাধারণের অনেকেই বলে থাকেন, এখানে উন্নয়ন না হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে দুটি কারণ হলো_ ১. এ অঞ্চলে যোগ্য কিংবা অঞ্চলপ্রেমিক নেতার অভাব, যারা বরিশালের উন্নয়ন নিয়ে ভাববেন কিংবা কাজ করবেন। ২. দেশের সব অঞ্চল কিংবা গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের উন্নয়নে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না থাকা।
রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত সরকার অনেক কাজই কেন্দ্রীয়ভাবে করতে পারে না। সে জন্য চাই একটি মাধ্যম। দক্ষিণাঞ্চলের অপার সম্ভাবনাগুলোর মধ্যে মৎস্যসম্পদ, গবাদিপশু, কৃষি_ এ বিষয়গুলোর কথা ভাবলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক চিন্তা করতে হবে। সরকারি নীতিনির্ধারকদের সদিচ্ছা থাকলে এ সম্পদগুলোর উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে। যার ফল হতে পারে সবুজ বিপ্লব, দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাচুর্য এবং স্বাস্থ্যসম্মত গবাদিপশুর সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিপুল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ। সংক্ষিপ্ত পরিসরে আজকে যদি আমরা শুধু একটি বিষয় অর্থাৎ গবাদিপশু নিয়েই ভাবি তাহলে দেখব, অতীতে দেশের ভেতরে এ অঞ্চলে গরু-মহিষ, ছাগলসহ হাঁস-মুরগি ছিল সহজলভ্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খুব বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন হতো না। সামান্য যত্নেই গবাদিপশু বেড়ে উঠত। কিন্তু এখন পরিবর্তিত বাস্তবতায় দক্ষিণাঞ্চল গবাদিপশুশূন্য হওয়ার পথে। এর অনেক কারণের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন দেশীয় প্রজাতির পশুর প্রজনন হার কম, সময়সাপেক্ষ এবং প্রচলিত খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও অপ্রতুলতা। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি বাস্তবতার তাগিদেই হাইব্রিড কিংবা বিদেশি প্রজাতির কথা ভাবি, তাহলে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকতে হবে; বুঝতে হবে পশুপালনের খুঁটিনাটি। বিশেষ করে দেশি-বিদেশি প্রজাতির বিষয়ে সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে তাদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে। জ্ঞান বিতরণ শুধু ছাত্রছাত্রীদের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি বৃহৎ পরিসরের ব্যাপার।
নদীমাতৃক এ অঞ্চলে যেমন আছে প্রচুর চরাঞ্চল, তৃণভূমি; তেমন আছে পশুপালন উপযোগী গ্রামাঞ্চল এবং গ্রামের পরিশ্রমী জনগোষ্ঠী। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে চিরায়ত সংগ্রামরত সাধারণ মানুষদের উপযুক্ত শিক্ষা, দিকনির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে পশুপালন বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে অন্তত একটি সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে হলেও দেশের অবহেলিত বরিশাল বিভাগের কিছুটা হাওয়া বদল করা সম্ভব হয়।
ৎ কর্মকর্তা, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত সরকার অনেক কাজই কেন্দ্রীয়ভাবে করতে পারে না। সে জন্য চাই একটি মাধ্যম। দক্ষিণাঞ্চলের অপার সম্ভাবনাগুলোর মধ্যে মৎস্যসম্পদ, গবাদিপশু, কৃষি_ এ বিষয়গুলোর কথা ভাবলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক চিন্তা করতে হবে। সরকারি নীতিনির্ধারকদের সদিচ্ছা থাকলে এ সম্পদগুলোর উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে। যার ফল হতে পারে সবুজ বিপ্লব, দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাচুর্য এবং স্বাস্থ্যসম্মত গবাদিপশুর সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিপুল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ। সংক্ষিপ্ত পরিসরে আজকে যদি আমরা শুধু একটি বিষয় অর্থাৎ গবাদিপশু নিয়েই ভাবি তাহলে দেখব, অতীতে দেশের ভেতরে এ অঞ্চলে গরু-মহিষ, ছাগলসহ হাঁস-মুরগি ছিল সহজলভ্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খুব বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন হতো না। সামান্য যত্নেই গবাদিপশু বেড়ে উঠত। কিন্তু এখন পরিবর্তিত বাস্তবতায় দক্ষিণাঞ্চল গবাদিপশুশূন্য হওয়ার পথে। এর অনেক কারণের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন দেশীয় প্রজাতির পশুর প্রজনন হার কম, সময়সাপেক্ষ এবং প্রচলিত খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও অপ্রতুলতা। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি বাস্তবতার তাগিদেই হাইব্রিড কিংবা বিদেশি প্রজাতির কথা ভাবি, তাহলে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকতে হবে; বুঝতে হবে পশুপালনের খুঁটিনাটি। বিশেষ করে দেশি-বিদেশি প্রজাতির বিষয়ে সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে তাদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে। জ্ঞান বিতরণ শুধু ছাত্রছাত্রীদের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি বৃহৎ পরিসরের ব্যাপার।
নদীমাতৃক এ অঞ্চলে যেমন আছে প্রচুর চরাঞ্চল, তৃণভূমি; তেমন আছে পশুপালন উপযোগী গ্রামাঞ্চল এবং গ্রামের পরিশ্রমী জনগোষ্ঠী। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে চিরায়ত সংগ্রামরত সাধারণ মানুষদের উপযুক্ত শিক্ষা, দিকনির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে পশুপালন বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে অন্তত একটি সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে হলেও দেশের অবহেলিত বরিশাল বিভাগের কিছুটা হাওয়া বদল করা সম্ভব হয়।
ৎ কর্মকর্তা, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
No comments