প্রতিযোগিতা আইনের খসড়া এখন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে
অযৌক্তিক পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের জন্য শাস্তির বিধান রেখে প্রস্তাবিত প্রতিযোগিতা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য গতকাল রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা পণ্যমূল্যের বাজারের স্বাভাবিক গতি নষ্ট করছে। ব্যবসায়ীদের অবৈধ চক্র (সিন্ডিকেট) ব্যাহত করছে পণ্যের সরবরাহব্যবস্থা। পণ্যমূল্যের ক্ষেত্রে বড় বড় প্রতিষ্ঠান অনেক সময় কর্তৃত্বময় ভূমিকার নামে এবং পণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধিতে মূলত অসাধু ব্যবসায়ীরাই দায়ী।
এত কিছুর পরও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আইনি কোনো হাতিয়ার নেই সরকারের কাছে, যে সুযোগটি নিয়ে থাকে ব্যবসায়ীদের অসাধু চক্র। অথচ প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশেই এ ব্যাপারে আইনি কাঠামো রয়েছে।
১৯৭০ সালে মনোপলিস অ্যান্ড রেস্ট্রিকটিভ ট্রেড প্র্যাকটিসেস (কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) অধ্যাদেশ জারি হলেও তা কার্যকর নয় বলে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য তৈরি করা সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এ আইন পাস হলে প্রতিযোগিতাবিরোধী কর্মকাণ্ড তদন্ত ও নিরূপণ করা সহজ হবে। ভোক্তারা প্রতিযোগিতামূলক পণ্যে মানসম্মত পণ্য পাবেন। এতে ব্যবসায়ীদের নৈতিকতা বাড়বে এবং পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ের প্রসার ঘটবে।
এ আইন কার্যকর করা হলে নতুন নতুন শিল্পোদ্যোক্তা গড়ে উঠবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং মুক্তবাণিজ্যের এ যুগেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা টিকে থাকতে পারবেন।
সূত্র জানায়, প্রতিযোগিতা আইনের পর মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মজুদবিরোধী আইন প্রণয়নে হাত দেওয়া হবে। কারণ, বিদ্যমান এ আইনটিকেও যুগোপযোগী করতে হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে ১৯৫৩ সালের মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মজুদবিরোধী আইন থাকলেও এটি কার্যকর নয়। এ আইন দিয়ে কোনো মজুদদারকে ধরা যায় না। গত বছর চিনি মজুদের কারণে যশোরের অভয়নগরের ১৪ জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল এবং পরে তাঁদের ধরাও হয়েছিল। তবে তাঁদের ধরা হয়েছিল মজুদবিরোধী আইনে নয়, বরং বিশেষ ক্ষমতা আইনে। পরে তাঁরা জামিনে মুক্ত হন।
যোগাযোগ করা হলে বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিযোগিতা আইন প্রণয়নের জন্য তৈরি করা খসড়াটি শিগগিরই মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন করলে ভেটিংয়ের জন্য যাবে আইন মন্ত্রণালয়ে। তারপর যাবে জাতীয় সংসদে।
বাণিজ্যসচিব বলেন, এ আইন পাস হলে ভোক্তারা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মানসম্মত পণ্য তো পাবেনই, অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব হবে।
যোগাযোগ করা হলে ইউনাইটেড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিযোগিতাবিরুদ্ধ (এন্টি-কম্পিটিটিভ) ব্যবহার শুধু দামের ক্ষেত্রে বা পণ্য মজুদের ক্ষেত্রে সীমিত নয়, পণ্যের সরবরাহ-প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে গুণগত মানের ক্ষেত্রেও এ ধরনের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। সুতরাং, প্রতিযোগিতা আইনের প্রয়োগ এই বৃহত্তর বিবেচনায় করতে হবে।’
এনামুল হক আরও বলেন, প্রতিযোগিতা আইন প্রয়োগের জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করতে হবে। তবে কমিশনের কার্যক্রম ধাপে ধাপে সম্প্রসারণ করা জরুরি। তা না হলে পুরো বিষয়টি অর্থবহ হবে না।
এনামুল হক ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রথম দিকে এই কমিশনের কাজ সরকারকে নীতি-পরামর্শ দেওয়ার মধ্যে সীমিত থাকা উচিত। বাজারে কোথায় ও কীভাবে প্রতিযোগিতাবিরুদ্ধ কর্মকাণ্ড চলছে, তা চিহ্নিত করার জন্য গবেষণার কাজটি এই কমিশন করবে।
পরবর্তী পর্যায়ে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতাবিরুদ্ধ কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের সম্পর্কে তদন্তের কাজ শুরু করা হবে। আর সর্বশেষ ধাপে এসে প্রতিযোগিতাবিরুদ্ধ কর্মকাণ্ডের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা প্রয়োগ শুরু করবে কমিশন।
এনামুল হক মনে করেন, ধাপে ধাপে অগ্রসর না হলে প্রতিযোগিতা কমিশনও দুর্নীতি দমন কমিশন বা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের মতো হয়ে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে পুরো উদ্দেশ্যটাই ব্যাহত হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশ ভারতে ২০০৩ সাল থেকে প্রতিযোগিতা আইন বলবৎ করা হয়।
খসড়ায় বলা হয়েছে, স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা পণ্যমূল্যের বাজারের স্বাভাবিক গতি নষ্ট করছে। ব্যবসায়ীদের অবৈধ চক্র (সিন্ডিকেট) ব্যাহত করছে পণ্যের সরবরাহব্যবস্থা। পণ্যমূল্যের ক্ষেত্রে বড় বড় প্রতিষ্ঠান অনেক সময় কর্তৃত্বময় ভূমিকার নামে এবং পণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধিতে মূলত অসাধু ব্যবসায়ীরাই দায়ী।
এত কিছুর পরও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আইনি কোনো হাতিয়ার নেই সরকারের কাছে, যে সুযোগটি নিয়ে থাকে ব্যবসায়ীদের অসাধু চক্র। অথচ প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশেই এ ব্যাপারে আইনি কাঠামো রয়েছে।
১৯৭০ সালে মনোপলিস অ্যান্ড রেস্ট্রিকটিভ ট্রেড প্র্যাকটিসেস (কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) অধ্যাদেশ জারি হলেও তা কার্যকর নয় বলে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য তৈরি করা সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এ আইন পাস হলে প্রতিযোগিতাবিরোধী কর্মকাণ্ড তদন্ত ও নিরূপণ করা সহজ হবে। ভোক্তারা প্রতিযোগিতামূলক পণ্যে মানসম্মত পণ্য পাবেন। এতে ব্যবসায়ীদের নৈতিকতা বাড়বে এবং পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ের প্রসার ঘটবে।
এ আইন কার্যকর করা হলে নতুন নতুন শিল্পোদ্যোক্তা গড়ে উঠবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং মুক্তবাণিজ্যের এ যুগেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা টিকে থাকতে পারবেন।
সূত্র জানায়, প্রতিযোগিতা আইনের পর মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মজুদবিরোধী আইন প্রণয়নে হাত দেওয়া হবে। কারণ, বিদ্যমান এ আইনটিকেও যুগোপযোগী করতে হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে ১৯৫৩ সালের মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মজুদবিরোধী আইন থাকলেও এটি কার্যকর নয়। এ আইন দিয়ে কোনো মজুদদারকে ধরা যায় না। গত বছর চিনি মজুদের কারণে যশোরের অভয়নগরের ১৪ জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল এবং পরে তাঁদের ধরাও হয়েছিল। তবে তাঁদের ধরা হয়েছিল মজুদবিরোধী আইনে নয়, বরং বিশেষ ক্ষমতা আইনে। পরে তাঁরা জামিনে মুক্ত হন।
যোগাযোগ করা হলে বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিযোগিতা আইন প্রণয়নের জন্য তৈরি করা খসড়াটি শিগগিরই মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন করলে ভেটিংয়ের জন্য যাবে আইন মন্ত্রণালয়ে। তারপর যাবে জাতীয় সংসদে।
বাণিজ্যসচিব বলেন, এ আইন পাস হলে ভোক্তারা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মানসম্মত পণ্য তো পাবেনই, অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব হবে।
যোগাযোগ করা হলে ইউনাইটেড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিযোগিতাবিরুদ্ধ (এন্টি-কম্পিটিটিভ) ব্যবহার শুধু দামের ক্ষেত্রে বা পণ্য মজুদের ক্ষেত্রে সীমিত নয়, পণ্যের সরবরাহ-প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে গুণগত মানের ক্ষেত্রেও এ ধরনের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। সুতরাং, প্রতিযোগিতা আইনের প্রয়োগ এই বৃহত্তর বিবেচনায় করতে হবে।’
এনামুল হক আরও বলেন, প্রতিযোগিতা আইন প্রয়োগের জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করতে হবে। তবে কমিশনের কার্যক্রম ধাপে ধাপে সম্প্রসারণ করা জরুরি। তা না হলে পুরো বিষয়টি অর্থবহ হবে না।
এনামুল হক ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রথম দিকে এই কমিশনের কাজ সরকারকে নীতি-পরামর্শ দেওয়ার মধ্যে সীমিত থাকা উচিত। বাজারে কোথায় ও কীভাবে প্রতিযোগিতাবিরুদ্ধ কর্মকাণ্ড চলছে, তা চিহ্নিত করার জন্য গবেষণার কাজটি এই কমিশন করবে।
পরবর্তী পর্যায়ে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতাবিরুদ্ধ কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের সম্পর্কে তদন্তের কাজ শুরু করা হবে। আর সর্বশেষ ধাপে এসে প্রতিযোগিতাবিরুদ্ধ কর্মকাণ্ডের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা প্রয়োগ শুরু করবে কমিশন।
এনামুল হক মনে করেন, ধাপে ধাপে অগ্রসর না হলে প্রতিযোগিতা কমিশনও দুর্নীতি দমন কমিশন বা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের মতো হয়ে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে পুরো উদ্দেশ্যটাই ব্যাহত হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশ ভারতে ২০০৩ সাল থেকে প্রতিযোগিতা আইন বলবৎ করা হয়।
No comments