ইলেকট্রনিক মাধ্যমের জন্য আইন প্রয়োজন -দশ টিভি চ্যানেলের অনুমোদন
সরকার সম্প্রতি ১০টি নতুন টিভি চ্যানেলের প্রাথমিক অনুমতি দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বেশ নেতিবাচক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হচ্ছে। এর মূল কারণ, অনুমতি প্রদানের প্রক্রিয়াটি মোটেও স্বচ্ছ নয়। যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এসব অনুমতি পেয়েছেন, তাঁরা কী কী যোগ্যতায় পেয়েছেন, আর যাঁরা আবেদন করেও পাননি, তাঁরা কী অযোগ্যতার কারণে পাননি—এসবের কোনো কিছুই পরিষ্কার নয়।
তবে এটা মোটামুটি পরিষ্কার, যাঁদের বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অনেকেই বর্তমান সরকার ও সরকারি দলের ঘনিষ্ঠ লোকজন, মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয়, সাংসদ, সরকারি দলের অনুগ্রহভাজন ব্যক্তি/ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। ১৯৯৮ সালে তত্কালীন আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া-সংক্রান্ত যে নীতিমালা প্রণয়ন করেছিল, তাতে বলা হয়েছিল, ‘বেতার, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি মালিকানায় আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা যেতে পারে।’ এবং সরকারের গঠিত একটি কারিগরি উপকমিটি পেশাগত ও কারিগরি মান নির্ধারণ করবে, যা একটি জাতীয় রেগুলেটরি অথরিটি কর্তৃক অনুমোদিত হবে। সে নীতিমালাটি এখনো আছে, বাতিল করা হয়নি। ১০টি নতুন চ্যানেলের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে সে নীতিমালায় উল্লিখিত কোনো বিধান অনুসরণ করা হয়নি, না বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দরখাস্ত আহ্বান, না কারিগরি উপকমিটি করে আবেদনকারীদের পেশাগত ও কারিগরি মান নির্ধারণ। তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কী কী যোগ্যতার ভিত্তিতে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিভি চ্যানেলের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উত্তর পাওয়া যায়নি। ওয়াকিবহাল মহলে বলাবলি চলছে, সরকারের উচ্চমহলের নির্দেশে এসব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মনে পড়ছে, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেও ঠিক একইভাবে শুধু নিজ দলীয় লোকজনকে টিভি চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। অস্বচ্ছ, অন্যায্য, স্বৈরতান্ত্রিক সেই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি দিনবদলের অঙ্গীকারবদ্ধ বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে মোটেও প্রত্যাশিত ছিল না।
পেশাগত যোগ্যতা-অভিজ্ঞতা এবং আর্থিক ও কারিগরি সামর্থ্য যাচাই না করে শুধু রাজনৈতিক আনুগত্যের বিবেচনায় এবার যাদের টিভি চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, একটি দৈনিকে খবর বেরিয়েছে, তাঁদের কেউ কেউ এখন অর্থলগ্নিকারী খুঁজছেন। তাহলে বিষয়টি দাঁড়ায় অনেকটা লাইসেন্স-পারমিট বিক্রি করার মতো। এভাবে শক্তিশালী পেশাদার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম গড়ে ওঠা সম্ভব নয়, বরং শিল্পটি কলুষিত হবে, নানা অনৈতিক চর্চার কারণে বেসরকারি টিভি মাধ্যম একটি সুস্থ শিল্প হিসেবে গড়ে উঠতে বাধাপ্রাপ্ত হবে।
মুদ্রণ মাধ্যম বা প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রে প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস অ্যাক্ট রয়েছে, সেখানে প্রকাশনার ডিক্লারেশন বা অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়মনীতি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে; স্রেফ সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে না কে ডিক্লারেশন পাবেন, কে পাবেন না। আইনের শর্তাবলির দ্বারাই তা নির্ধারিত হয়। সব যোগ্যতা নিয়ে আবেদন করার পরেও যদি কাউকে ডিক্লারেশন না দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রেও এমনটিই হওয়া বাঞ্ছনীয়। সে জন্য একটি আইন বা নিদেনপক্ষে একটি সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান প্রণয়নের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে।
তবে এটা মোটামুটি পরিষ্কার, যাঁদের বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অনেকেই বর্তমান সরকার ও সরকারি দলের ঘনিষ্ঠ লোকজন, মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয়, সাংসদ, সরকারি দলের অনুগ্রহভাজন ব্যক্তি/ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। ১৯৯৮ সালে তত্কালীন আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া-সংক্রান্ত যে নীতিমালা প্রণয়ন করেছিল, তাতে বলা হয়েছিল, ‘বেতার, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি মালিকানায় আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা যেতে পারে।’ এবং সরকারের গঠিত একটি কারিগরি উপকমিটি পেশাগত ও কারিগরি মান নির্ধারণ করবে, যা একটি জাতীয় রেগুলেটরি অথরিটি কর্তৃক অনুমোদিত হবে। সে নীতিমালাটি এখনো আছে, বাতিল করা হয়নি। ১০টি নতুন চ্যানেলের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে সে নীতিমালায় উল্লিখিত কোনো বিধান অনুসরণ করা হয়নি, না বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দরখাস্ত আহ্বান, না কারিগরি উপকমিটি করে আবেদনকারীদের পেশাগত ও কারিগরি মান নির্ধারণ। তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কী কী যোগ্যতার ভিত্তিতে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিভি চ্যানেলের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উত্তর পাওয়া যায়নি। ওয়াকিবহাল মহলে বলাবলি চলছে, সরকারের উচ্চমহলের নির্দেশে এসব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মনে পড়ছে, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেও ঠিক একইভাবে শুধু নিজ দলীয় লোকজনকে টিভি চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। অস্বচ্ছ, অন্যায্য, স্বৈরতান্ত্রিক সেই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি দিনবদলের অঙ্গীকারবদ্ধ বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে মোটেও প্রত্যাশিত ছিল না।
পেশাগত যোগ্যতা-অভিজ্ঞতা এবং আর্থিক ও কারিগরি সামর্থ্য যাচাই না করে শুধু রাজনৈতিক আনুগত্যের বিবেচনায় এবার যাদের টিভি চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, একটি দৈনিকে খবর বেরিয়েছে, তাঁদের কেউ কেউ এখন অর্থলগ্নিকারী খুঁজছেন। তাহলে বিষয়টি দাঁড়ায় অনেকটা লাইসেন্স-পারমিট বিক্রি করার মতো। এভাবে শক্তিশালী পেশাদার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম গড়ে ওঠা সম্ভব নয়, বরং শিল্পটি কলুষিত হবে, নানা অনৈতিক চর্চার কারণে বেসরকারি টিভি মাধ্যম একটি সুস্থ শিল্প হিসেবে গড়ে উঠতে বাধাপ্রাপ্ত হবে।
মুদ্রণ মাধ্যম বা প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রে প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস অ্যাক্ট রয়েছে, সেখানে প্রকাশনার ডিক্লারেশন বা অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়মনীতি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে; স্রেফ সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে না কে ডিক্লারেশন পাবেন, কে পাবেন না। আইনের শর্তাবলির দ্বারাই তা নির্ধারিত হয়। সব যোগ্যতা নিয়ে আবেদন করার পরেও যদি কাউকে ডিক্লারেশন না দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রেও এমনটিই হওয়া বাঞ্ছনীয়। সে জন্য একটি আইন বা নিদেনপক্ষে একটি সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান প্রণয়নের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে।
No comments