ক্ষোভে ফুঁসছে ফেঞ্চুগঞ্জের চা শ্রমিকরা by হাসান চৌধুরী
বহিরাগত
ঠিকাদার দলা বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন ও চিকিৎসার অভাবে নারী শ্রমিকের
মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে ফেঞ্চুগঞ্জের মোমিনছড়া চা-বাগানের হাজারো
চা-শ্রমিক। সৃষ্ট ঘটনার সুরাহা না করায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের
কর্মবিরতি পালন করছে। ফলে, উৎপাদনমুখী ওই চা- বাগানের যাবতীয় কাজকর্মে
স্থবিরতা নেমে এসেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চা-শ্রমিকরা ২১শে মার্চ সিলেটের
জেলা প্রশাসক, ফেঞ্চুগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও এবং ভারপ্রাপ্ত পুলিশ
কর্মকর্তার কাছে ছয় দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
স্মারকলিপিতে চা-শ্রমিকরা উল্লেখ করেন, মোমিনছড়া চা-বাগানে বহিরাগত ঠিকাদার দলামিয়া একটি শক্তিশালী বাহিনীর মাধ্যমে চা-বাগানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। দলা বাহিনীর দ্বারা প্রতিদিনই শ্রমিকরা নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ই মার্চ সকালে আক্কল আলী নামের এক শ্রমিক চা-বাগানের মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গেলে কর্তব্যরত মেডিকেল ইনচার্জ রুহুল পারভেজ আক্কল আলীকে চিকিৎসা দিতে নানাবিধ প্রশ্ন করেন। আক্কল আলী ওই ইনচার্জকে বুঝানোর চেষ্টা করছিলেন যে, তিনি সত্যিকারে অসুস্থ। একপর্যায়ে মেডিকেলে থাকা চৌকিদার দলা বাহিনীর ফারুক আহমদ আক্কল আলীকে মারধর করে মেডিকেল থেকে বিদায় করে দেয়। অসুস্থ আক্কল আলী বিষয়টি অন্য শ্রমিকদের জানালে চা-বাগানের শ্রমিকরা এসে জড়ো হয়ে মোমিনছড়া চা-বাগান ব্যবস্থাপক নাসির খানের কাছে বিচারপ্রার্থী হন। এ সময় দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গাড়িযোগে দলামিয়া তার বাহিনী নিয়ে চা- বাগান শ্রমিকদের ওপর হামলা করে তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। শ্রমিকরা জানায়, ওইদিনের হামলায় বেশ কয়েকজন নারী পুরুষ চা-শ্রমিক মারাত্মকভাবে আহত হন, যাদের মধ্যে গর্ভবতী এক মহিলাও ছিলেন। এদের মধ্যে শ্রীমতি সাওতাল নামের একজন নারী শ্রমিক পরদিন ১৩ই মার্চ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুবরণ করে।
সরজমিন গতকাল মোমিনছড়া চা-বাগানে গিয়ে দেখা যায়, চা-বাগানের ফ্যাক্টরি বন্ধ রয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দলবদ্ধ হয়ে সভা সমাবেশ করছে। জানতে চাওয়া হলে চা-বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কার্তিক নায়েক জানান, দলা বাহিনীকে বাগান থেকে অপসারণ করতে হবে, নইলে চা-বাগান বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, আমরা নিরীহ শ্রমিকদের ওপর দলামিয়া নামের ঠিকাদার তার বাহিনীর মাধ্যমে নানা অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই আমরা নীরবেই তা সহ্য করেছি। অত্যাচার, নিপীড়ন সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় আমরা প্রতিবাদী হয়ে উঠতে বাধ্য হয়েছি। এ ব্যাপারে মোমিনছড়া চা-বাগানের স্বত্বাধিকারী সামছউদ্দীন খাঁন ও মুসলিম উদ্দীন খাঁনের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। চা-বাগানের ব্যবস্থাপক নাসির খাঁনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ৩নং ঘিলাছড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজি লেইছ চৌধুরী জানান, মোমিনছড়া চা-বাগানে প্রায় ১৫শ’ স্থায়ী, অস্থায়ী শ্রমিক রয়েছে। ঘটনার দিন খবর পেয়ে তিনি চা-বাগানে ছুটে যান, শ্রমিকদের ওপর অকথ্য নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি দলা বাহিনীকে বাগান থেকে অপসারণের দাবি জানান। এ ব্যাপারে দলামিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, শ্রমিকদের দাবি সম্পূর্ণ অযৗক্তিক, তিনি বলেন, গত ৩০ বছর ধরে আমরা বাগানের প্রতিবেশী হিসেবে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি। চা-শ্রমিকরা কারণে অকারণে বাগান ব্যাবস্থাপকদের, লাঞ্ছিত করে, আমি বাগানে ঠিকাদারী করি, সেই সুবাদে বিভিন্ন সেক্টরে আমার লোকজন কাজ করে। তাদের নানা অপকর্মে আমার লোকজন তাদের প্রতিহত করে মাত্র। মেডিকেলের ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিয়ে বাগান শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে বলে তিনি দাবি করেন। ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সঙ্গে নিয়ে চা-বাগানে যাই, তিনি চা-শ্রমিকদের দাবি অযৗক্তিক উল্লেখ করে বলেন, তারা কারো কথাতেই কর্ণপাত না করে একতরফাভাবে কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছে। চা-শ্রমিকদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, চা-শ্রমিক নির্যাতনকারী দলা বাহিনীর অপসারণ, চা-বাগানের বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, আধুনিক ভবন নির্মাণ, শ্রমিক স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারি ট্রেনিং প্রাপ্ত নার্স ও সব ধরনের উন্নত মানের জীবন জীবিকার জন্য ওষুধ এবং সু-চিকিৎসার ব্যবস্থাকরণ, চা শ্রমিকের জীবনরক্ষার জন্য বিশুদ্ধ পানি ও জলের ব্যবস্থাকরণ ও স্যানিটেশন এবং ঘরবাড়ি নির্মাণকরণ, আক্রোশমূলকভাবে কোনো স্থায়ী, অস্থায়ী শ্রমিককে চাকরিচ্যুৎ করা যাবে না। বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের নিয়োগ দিতে হবে। শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাকর্মীদের ওপর সব ধরনের হামলা ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
স্মারকলিপিতে চা-শ্রমিকরা উল্লেখ করেন, মোমিনছড়া চা-বাগানে বহিরাগত ঠিকাদার দলামিয়া একটি শক্তিশালী বাহিনীর মাধ্যমে চা-বাগানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। দলা বাহিনীর দ্বারা প্রতিদিনই শ্রমিকরা নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ই মার্চ সকালে আক্কল আলী নামের এক শ্রমিক চা-বাগানের মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গেলে কর্তব্যরত মেডিকেল ইনচার্জ রুহুল পারভেজ আক্কল আলীকে চিকিৎসা দিতে নানাবিধ প্রশ্ন করেন। আক্কল আলী ওই ইনচার্জকে বুঝানোর চেষ্টা করছিলেন যে, তিনি সত্যিকারে অসুস্থ। একপর্যায়ে মেডিকেলে থাকা চৌকিদার দলা বাহিনীর ফারুক আহমদ আক্কল আলীকে মারধর করে মেডিকেল থেকে বিদায় করে দেয়। অসুস্থ আক্কল আলী বিষয়টি অন্য শ্রমিকদের জানালে চা-বাগানের শ্রমিকরা এসে জড়ো হয়ে মোমিনছড়া চা-বাগান ব্যবস্থাপক নাসির খানের কাছে বিচারপ্রার্থী হন। এ সময় দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গাড়িযোগে দলামিয়া তার বাহিনী নিয়ে চা- বাগান শ্রমিকদের ওপর হামলা করে তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। শ্রমিকরা জানায়, ওইদিনের হামলায় বেশ কয়েকজন নারী পুরুষ চা-শ্রমিক মারাত্মকভাবে আহত হন, যাদের মধ্যে গর্ভবতী এক মহিলাও ছিলেন। এদের মধ্যে শ্রীমতি সাওতাল নামের একজন নারী শ্রমিক পরদিন ১৩ই মার্চ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুবরণ করে।
সরজমিন গতকাল মোমিনছড়া চা-বাগানে গিয়ে দেখা যায়, চা-বাগানের ফ্যাক্টরি বন্ধ রয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দলবদ্ধ হয়ে সভা সমাবেশ করছে। জানতে চাওয়া হলে চা-বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কার্তিক নায়েক জানান, দলা বাহিনীকে বাগান থেকে অপসারণ করতে হবে, নইলে চা-বাগান বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, আমরা নিরীহ শ্রমিকদের ওপর দলামিয়া নামের ঠিকাদার তার বাহিনীর মাধ্যমে নানা অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই আমরা নীরবেই তা সহ্য করেছি। অত্যাচার, নিপীড়ন সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় আমরা প্রতিবাদী হয়ে উঠতে বাধ্য হয়েছি। এ ব্যাপারে মোমিনছড়া চা-বাগানের স্বত্বাধিকারী সামছউদ্দীন খাঁন ও মুসলিম উদ্দীন খাঁনের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। চা-বাগানের ব্যবস্থাপক নাসির খাঁনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ৩নং ঘিলাছড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজি লেইছ চৌধুরী জানান, মোমিনছড়া চা-বাগানে প্রায় ১৫শ’ স্থায়ী, অস্থায়ী শ্রমিক রয়েছে। ঘটনার দিন খবর পেয়ে তিনি চা-বাগানে ছুটে যান, শ্রমিকদের ওপর অকথ্য নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি দলা বাহিনীকে বাগান থেকে অপসারণের দাবি জানান। এ ব্যাপারে দলামিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, শ্রমিকদের দাবি সম্পূর্ণ অযৗক্তিক, তিনি বলেন, গত ৩০ বছর ধরে আমরা বাগানের প্রতিবেশী হিসেবে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি। চা-শ্রমিকরা কারণে অকারণে বাগান ব্যাবস্থাপকদের, লাঞ্ছিত করে, আমি বাগানে ঠিকাদারী করি, সেই সুবাদে বিভিন্ন সেক্টরে আমার লোকজন কাজ করে। তাদের নানা অপকর্মে আমার লোকজন তাদের প্রতিহত করে মাত্র। মেডিকেলের ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিয়ে বাগান শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে বলে তিনি দাবি করেন। ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সঙ্গে নিয়ে চা-বাগানে যাই, তিনি চা-শ্রমিকদের দাবি অযৗক্তিক উল্লেখ করে বলেন, তারা কারো কথাতেই কর্ণপাত না করে একতরফাভাবে কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছে। চা-শ্রমিকদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, চা-শ্রমিক নির্যাতনকারী দলা বাহিনীর অপসারণ, চা-বাগানের বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, আধুনিক ভবন নির্মাণ, শ্রমিক স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারি ট্রেনিং প্রাপ্ত নার্স ও সব ধরনের উন্নত মানের জীবন জীবিকার জন্য ওষুধ এবং সু-চিকিৎসার ব্যবস্থাকরণ, চা শ্রমিকের জীবনরক্ষার জন্য বিশুদ্ধ পানি ও জলের ব্যবস্থাকরণ ও স্যানিটেশন এবং ঘরবাড়ি নির্মাণকরণ, আক্রোশমূলকভাবে কোনো স্থায়ী, অস্থায়ী শ্রমিককে চাকরিচ্যুৎ করা যাবে না। বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের নিয়োগ দিতে হবে। শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাকর্মীদের ওপর সব ধরনের হামলা ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
No comments