জীবন যুদ্ধে হারতে চান না প্রতিবন্ধী সালমা
প্রথমে
দেখলে মনে হবে হাসিমাখা একটি প্রাণবন্ত মুখ। কিন্তু না। ২০১২ সালে হঠাৎ
মুখ বেঁকে যায় সালমার। সেই সঙ্গে শরীরের বাম পাশ প্যারালাইসড হয়ে অসাড় হয়ে
পড়ে। সালমার মুখ দিয়ে অনবরত লালা ঝরতে থাকে। এখনো তিনি মুখ বুজে থাকতে
পারেন না। সব সময় হা করে থাকতে হয়। জটিল রোগ ও নিজে শরীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া
সত্ত্বেও ২৬ বছরের সালমা খাতুন পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চান। কিন্তু তার এই
প্রবল ইচ্ছায় বাদ সেধেছে আর্থিক সংকট। ছয় মাস ঘুরেও যখন প্রতিবন্ধীর কার্ড
পাননি তখন হতাশা ব্যক্ত করে নিজের জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধা আর ঘৃণা জন্মেছে
এই তরুণীর। সালমা খাতুন ঝিনাইদহ শহরের নতুন হাটখোলাপাড়ার আনোয়ার হোসেন
ওরফে পান্না মোল্লার মেয়ে। তিনি ঝিনাইদহ সরকারি কেসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের
দর্শন (অনার্স) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। কিন্তু শারীরিক
অসুস্থতার কারণে পড়ালেখায় ছেদ পড়েছে। সালমার পরিবারের অভিযোগ, শরীরে জটিল
রোগ ও প্রতিবন্ধী হয়েও এ পর্যন্ত সরকারি কোনো আর্থিক সুবিধা পাননি। নিজের
খালাতো ভাই মাসে মাসে সালমার চিকিৎসায় ব্যয় করেছেন ৫ লাখ টাকা। এখন তিনি
অপারগ। আর কত করবেন? প্রতি মাসে সালমার চিকিৎসা ব্যয় প্রায় ৫/৬ হাজার টাকা।
চিকিৎসা খরচ মেটাতে নিরুপায় হয়ে প্রতিবন্ধী সালমা ঝিনাইদহ শহর সমাজসেবা
অফিসে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু তাওে ফল হয়নি। এখন শিক্ষা ভাতার দিকে চেয়ে
আছেন সালমা। সালমার মা আম্বিয়া খাতুন জানান, ২০০৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস
করার পর বেশ ভালোই কাটছিল সালমার জীবন। ২০১০ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে
ভর্তি হন সরকারি কেসি কলেজে। তারপরই সালমার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। আত্মীয়দের
সহায়তায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পর তারা সালমার জীবন নিয়ে
শঙ্কা প্রকাশ করেন। চিকিৎসকদের আশঙ্কা ব্যার্থ করে দিয়ে এখনো সালমা বেঁেচ
আছেন, তবে প্রতিবন্ধী হয়ে। উন্নত চিকিৎসা করা গেলে টকবগে এই তরুণী সুস্থতার
পাশাপাশি আবার পড়ার টেবিলে ফিরতে পারতো। বোন আসমা খাতুন জানান, আত্মীয়
স্বজনরা আর কত সহায়তা দিবেন। ৬ বছর ধরে তারা চিকিৎসা ব্যায় চালিয়ে যাচ্ছেন।
নিজেদের যা কিছু ছিল সবই ব্যায় হয়েছে সালমার চিকিৎসা ও পড়ালেখায়। এখন সবাই
বিব্রত। সালমাকে বাঁচাতে তিনি দানশীল ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে তিনি
আর্থিক সহায়তা কামনা করেন। অসহায় পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ ০১৯৪৩-১৯৮০২১
(বোন আসমা)।
No comments