উ. কোরিয়ার কূটনীতিককে জিজ্ঞাসা করতে চায় মালয়েশিয়া
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সৎভাই কিম জং-নামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশটির এক কূটনীতিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় মালয়েশিয়ার পুলিশ। হন কাওয়াঙ সঙ নামের ওই কূটনীতিবিদ কুয়ালালামপুরে থাকা উত্তর কোরীয় দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি হিসেবে কর্মরত। ওই কূটনীতিবিদের পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার বিমান সংস্থার এক কর্মীকেও খোঁজা হচ্ছে। ওই দুজনই বর্তমানে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ-প্রধান খালিদ আবু বকর বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যদি তারা সহায়তা না করে, তবে আমাদের কাছে আসার জন্য তাদের বাধ্য করা হবে।’ পুলিশ জানিয়েছে, জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া দুই নারী জানতেন যে তাঁরা বিষপ্রয়োগে অংশ নিচ্ছেন। পুলিশ-প্রধান বলেন, তাঁদের আশঙ্কা, উত্তর কোরিয়ার পাঁচজন নাগরিক ‘ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত’ ছিলেন ওই ঘটনায়। এর মধ্যে ওই কূটনীতিকও ছিলেন। বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুই নারীর মধ্যে একজন একটি কাপড় কিম জং-নামের মুখে লাগিয়ে দিচ্ছেন। এর পরপরই তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক পুলিশ-প্রধানের কাছে জানতে চান, ওই দুই নারী যখন কিম জং-নামের কাছাকাছি এসেছিলেন, তখন কি তাঁদের হাতে বিষাক্ত পদার্থ ছিল?
জবাবে খালিদ আবু বকর বলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই তাঁরা জানতেন। তিনি বলেন, ‘আপনি নিশ্চয়ই ভিডিওটি দেখেছেন। একজন নারী তাঁর হাত যেন শরীরে না লাগে, এমনভাবে দূরে রেখে প্রসাধনকক্ষে যান। হাঁটার সময় তিনি খুব সচেতন ছিলেন। কারণ, তিনি জানতেন এটি বিষ এবং তাঁর হাত ধুতে হবে।’ কুয়ালালামপুরের বিমানবন্দরে ১৩ ফেব্রুয়ারি জং-নাম নিহত হন। এ ঘটনার পর বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার পাসপোর্টধারী দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম বলছে, উত্তর কোরিয়ার দুই নারী গুপ্তচর বিষপ্রয়োগে জং-নামকে হত্যা করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার টিভি চ্যানেল চোসান দাবি করেছে, দুজন নারী কিমকে সুচ দিয়ে বিষ প্রয়োগ করে ট্যাক্সিতে করে পালিয়ে যান। চ্যানেলটির প্রতিবেদনে ওই দুই নারীকে উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা বলে দাবি করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন সরকারি সূত্রও এ দাবিকে সমর্থন করেছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি সূত্র বলেছে, তারা মনে করে উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দারাই এ ‘হত্যাকাণ্ড’ ঘটিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার অনুরোধ সত্ত্বেও মালয়েশিয়া জং-নামের লাশ ফেরত দেয়নি। তারা বলছে, নিহত ব্যক্তির পরিবারের কেউ ডিএনএ নমুনা দিয়ে শনাক্ত করার পরই লাশ নিতে পারবেন। মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে।
No comments