মোদিকে খালেদা বললেন বাংলাদেশে গণতন্ত্র অনুপস্থিত
বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতির বিষয়টিই ভারতের সফররত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে তুলে ধরেছে বিএনপি। গ্লোবাল বিশ্বে বাংলাদেশের বর্তমান সমস্যা এ অঞ্চলের জন্য অস্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে বলেও জানিয়েছে দলটি। বৈঠক শেষে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান গণমাধ্যমকে দেয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। এর আগে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বিকাল ৪টা থেকে দীর্ঘ ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রথম ৩০ মিনিট বিএনপি প্রতিনিধি দলসহ এবং শেষ ১৫ মিনিট দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে গাড়িতে ওঠার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া বলেন, ‘সুন্দর আলোচনা হয়েছে।’ পরে দু’দফা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. মঈন খান। তিনি বলেন, অত্যন্ত চমৎকার পরিবেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকটি সম্পন্ন হয়েছে। ইংরেজিতে যাকে বলে, এ ভেরি করডিয়াল অ্যাটমোস্ফেয়ার। তিনি বলেন, আমরা দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের প্রতিটি বিষয় বৈঠকে উল্লেখ করেছি। সার্কের পরিমণ্ডলে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নের বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। ড. মঈন খান বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়- আজকের বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সে বিষয়টি হচ্ছে- বাংলাদেশে আজকে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি। বাংলাদেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে, সেটা কেবল বাংলাদেশ নয়; আমরা মনে করি- সেটা এ সমগ্র অঞ্চলের জন্য একটি অস্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, আমরা এ কথা প্রায়শ বলি- আজকে আমরা বাস করি একটি গ্লোবাল ভিলেজে। আমি নিজের পরিমণ্ডলে শান্তশিষ্ট হয়ে ঘুমিয়ে থাকব, অন্য কেউ এখানে কোন রকমের সমস্যার সৃষ্টি করবে না; এটা হতে পারে না। কাজেই, আজকে বাংলাদেশে আমরা যেভাবে যে পরিস্থিতিতে আছি, বিরোধী দলের ওপর চলছে অত্যাচার। আমাদের দলের মহাসচিব থেকে শুরু করে স্থায়ী কমিটির সদস্য, তৃণমূল পর্যায়ের হাজার হাজার কর্মীদের ওপরে যেভাবে অত্যাচার-অনাচার করা হচ্ছে, সে বিষয়গুলো গণতন্ত্রের অনুপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনায় আপনা-আপনি ওঠে এসেছে। কাজেই আজকে ভারতে যেভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নিজের জীবনে প্রমাণ করেছেন; তৃণমূল থেকে তিনি যেভাবে ভারতের সর্বোচ্চ পদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন; সেটা সম্ভব হয়েছে কেবল গণতন্ত্রের কারণে। কাজেই এটা অত্যন্ত স্পষ্ট, আজকে কেবল দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল নয়; বিশ্বের কোথাও গণতন্ত্র ব্যতিরেকে কোন মানুষের উপকার হতে পারে না। জনপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হতে পারে না। বাংলাদেশে আজকের এ জনপ্রতিনিধিত্ববিহীন সরকার যেভাবে এদেশে উন্নয়নের কথা বলছে, সে উন্নয়ন অর্থহীন। যদি সেখানে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা না থাকে। সে উন্নয়ন সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। ড. মঈন খান বলেন, আমাদের দেশের যে যুবসমাজ, নারী সমাজ ও শিশু তাদের প্রত্যেকের কল্যাণের জন্য; এদেশের মানুষের মূল যে কর্মসংস্থান, এদেশের মানুষের যে শিক্ষা, সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সবকিছুর জন্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরটি হচ্ছে- এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। একমাত্র মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা এবং মানুষের জবাবদিহিতার মাধ্যমেই বাংলাদেশের সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব হতে পারে। এ বিষয়টিকেই আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ৫ই জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি ভারত সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মঈন খান বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার যে আলোচনা সেটি কোন দাবি-দাওয়ার বিষয়ে নয়। কাজেই আপনারা যে প্রশ্নটি করেছেন, আমি সবিনয়ে সেটা নিচ্ছি না। বিএনপি স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশে যেভাবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী সে ধরনের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান আমরা বাংলাদেশে সৃষ্টি করতে পারিনি। যেখানে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন সরকারের কথায় চলে। যেখানে বাংলাদেশের প্রশাসন সরকারের কথায় চলে। যেখানে বাংলাদেশের ব্যবস্থার কাছে মানুষ বিচার প্রার্থনা করে পায় না, যে দেশে পুলিশবাহিনী রাজনৈতিকভাবে হয়রানি এবং অত্যাচার করে এবং যে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু দলীয় ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এদেশে গণতন্ত্র নেই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সে কথাগুলোই আলোচনায় উঠে এসেছে। বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কি বলেছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মঈন খান বলেন, এ প্রশ্নটি আমাদের করা যুক্তিসঙ্গত হবে না। যখন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রেস কনফারেন্স করা হবে সেখানে আপনারা প্রশ্নটি করলেই যুক্তিযুক্ত হবে। তারা তাদের তরফ থেকে বক্তব্য দেবেন। এটা যুক্তিসংগত নয়, তারা কি বলেছে সেটা আমরা বলব। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অনেক বিষয়ে আলোচনা করেছি। যেসব বিষয় আমাদের আলোচনায় উঠে এসেছে, আমি সেগুলো স্পষ্টভাবেই আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজকে বুঝতে হবে- বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন তথা আমরা যদি একটি মধ্যম আয়ের দেশ বা একটি উচ্চ আয়ের দেশে যেতে চাই, তাহলে কেবল ঢাকা শহরে বড় বড় অবকাঠামো তৈরি করলে সেটা হবে না। মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা দিতে হবে। মানুষের অধিকার মানুষকে ফিরে দিতে হবে। মানুষের যে ভোটের অধিকার সেটা ফিরিয়ে দিতে হবে। এ কথাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধায় এ কথাগুলোই গুরুত্বের সঙ্গে এখানে আলোচিত হয়েছে। ড. মঈন খান বলেন, ভারত আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী। আমরা হয়তো জনসংখ্যার দিক দিয়ে ভারতের চেয়ে ছোট হতে পারি, আয়তনের দিক দিয়ে ছোট হতে পারি। কিন্তু আমরা এ কথাটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি যে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বেশিরভাগ সূচক ভারতের সঙ্গে তুলনা করলে আমরা অনেক উপরে অবস্থান করছি। এমন পরিস্থিতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে, গণতন্ত্র। এক্ষেত্রে আমরা ভারতের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছি। কোন গণতান্ত্রিক আচরণ আমরা সরকারের কাছে পাইনি। দেশের ১৬ কোটি মানুষ এটাই প্রত্যাশা করে। যাতে আগামীতে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়া যায়। তারা যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। কিন্তু এদেশে যদি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার সৃষ্টি না হয় তবে সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
ড. মঈন খান বলেন, আমরা বলেছি, দুটি দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। দেশে কোন সরকার আছে, তা মূল কথা নয়। সরকার আসবে, যাবে। কিন্তু জনগণ চিরদিনই থাকবে। সেজন্য দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বপূর্ণ ও আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হলে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। দুই দেশের মানুষের মধ্যে পারষ্পরিক সম্পর্ক অটুট থাকা প্রয়োজন। ‘গণতন্ত্রহীনতার’ বিষয়টি কেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বলা হল- জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, তিনি (মোদি) গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন নেতা। তার জীবন-আদর্শ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ভারতের তৃণমূল থেকে আজ তিনি সর্বোচ্চ পদে এসেছেন। এটা সম্ভব হয়েছে, ভারতের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করার জন্য। যারা গণতন্ত্রকে মূল্য দেয়, তাদের সঙ্গেই গণতন্ত্রের কথা বলা যায়। তাই আমরা বলেছি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপি নেতা বলেন, যারা গণতন্ত্রকে ধূলিস্যাৎ করেছে, তাদের সঙ্গে গণতন্ত্রের আলোচনা করা অত্যন্ত কঠিন। যদিও আমরা বারবার প্রস্তাব দিয়েছি, কয়েক বছর ধরে, আসুন আমরা আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসন করি। মোদি আঞ্চলিক উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেটাকে যদি বাস্তবায়িত করতে হয়, গণতন্ত্রের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করে উন্নয়ন করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করেছি, গণতন্ত্র ব্যতিরেকে উন্নয়ন টেকসই হতে পারে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার মধ্যে ওয়ান অন ওয়ান আলোচনা হয়েছে। সেখানে তারা পারস্পরিকভাবে কথা বলেছেন, কেবল তারাই ছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দলে অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমান ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ। বিএনপি সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও বিএনপির অবস্থান নিয়ে একটি প্রতিবেদন, মুদ্রিত ও ভিডিও সমন্বয়ে একটি ফাইল হস্তান্তর করেছেন। এদিকে কয়েক দিন ধরে ঢাকা শহরের ব্যাপক যানজটের কারণে বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য আগেভাগেই দুপুর আড়াইটার সময় গুলশানের বাসভবন থেকে সোনারগাঁও হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন খালেদা জিয়া। নির্ধারিত সময়সূচির বেশ আগেভাগেই সোয়া তিনটায় তিনি কাওরান বাজার পৌঁছেন। সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর কার্যালয়ে আধঘণ্টার মতো বিশ্রাম নেন তিনি। পরে বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি প্রতিনিধি দল নিয়ে সোনারগাঁও হোটেলে পৌঁছেন।
মোদিকে খালেদার উপহার
সাক্ষাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মা হীরাবাইয়ের জন্য তাঁতের বোনা জামদানি শাড়ি ও চাদর উপহার দেন খালেদা জিয়া। এছাড়া মোদিকে উপহার দিয়েছেন পাঞ্জাবি ও কোটি। বিএনপি নেতারা জানান, শনিবার রাতে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে এসব উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়।
ড. মঈন খান বলেন, আমরা বলেছি, দুটি দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। দেশে কোন সরকার আছে, তা মূল কথা নয়। সরকার আসবে, যাবে। কিন্তু জনগণ চিরদিনই থাকবে। সেজন্য দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বপূর্ণ ও আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হলে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। দুই দেশের মানুষের মধ্যে পারষ্পরিক সম্পর্ক অটুট থাকা প্রয়োজন। ‘গণতন্ত্রহীনতার’ বিষয়টি কেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বলা হল- জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, তিনি (মোদি) গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন নেতা। তার জীবন-আদর্শ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ভারতের তৃণমূল থেকে আজ তিনি সর্বোচ্চ পদে এসেছেন। এটা সম্ভব হয়েছে, ভারতের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করার জন্য। যারা গণতন্ত্রকে মূল্য দেয়, তাদের সঙ্গেই গণতন্ত্রের কথা বলা যায়। তাই আমরা বলেছি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপি নেতা বলেন, যারা গণতন্ত্রকে ধূলিস্যাৎ করেছে, তাদের সঙ্গে গণতন্ত্রের আলোচনা করা অত্যন্ত কঠিন। যদিও আমরা বারবার প্রস্তাব দিয়েছি, কয়েক বছর ধরে, আসুন আমরা আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসন করি। মোদি আঞ্চলিক উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেটাকে যদি বাস্তবায়িত করতে হয়, গণতন্ত্রের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করে উন্নয়ন করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করেছি, গণতন্ত্র ব্যতিরেকে উন্নয়ন টেকসই হতে পারে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার মধ্যে ওয়ান অন ওয়ান আলোচনা হয়েছে। সেখানে তারা পারস্পরিকভাবে কথা বলেছেন, কেবল তারাই ছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দলে অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমান ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ। বিএনপি সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও বিএনপির অবস্থান নিয়ে একটি প্রতিবেদন, মুদ্রিত ও ভিডিও সমন্বয়ে একটি ফাইল হস্তান্তর করেছেন। এদিকে কয়েক দিন ধরে ঢাকা শহরের ব্যাপক যানজটের কারণে বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য আগেভাগেই দুপুর আড়াইটার সময় গুলশানের বাসভবন থেকে সোনারগাঁও হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন খালেদা জিয়া। নির্ধারিত সময়সূচির বেশ আগেভাগেই সোয়া তিনটায় তিনি কাওরান বাজার পৌঁছেন। সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর কার্যালয়ে আধঘণ্টার মতো বিশ্রাম নেন তিনি। পরে বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি প্রতিনিধি দল নিয়ে সোনারগাঁও হোটেলে পৌঁছেন।
মোদিকে খালেদার উপহার
সাক্ষাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মা হীরাবাইয়ের জন্য তাঁতের বোনা জামদানি শাড়ি ও চাদর উপহার দেন খালেদা জিয়া। এছাড়া মোদিকে উপহার দিয়েছেন পাঞ্জাবি ও কোটি। বিএনপি নেতারা জানান, শনিবার রাতে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে এসব উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়।
No comments