ইয়েমেনে সৌদি আরবের বিমান হামলা শুরু
ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করেছে সৌদি আরব এবং তার আরব মিত্ররা। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত এ ঘোষণা দিয়েছেন। সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদেল আল জুবাইর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলসহ (জিসিসি) ১০টি দেশ বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৭টা থেকে সানায় বিমান হামলা শুরু করে। সৌদি আরব বলেছে, মিসর ও পাকিস্তানসহ পাঁচটি মুসলিম দেশ ইয়েমেনে শিয়া হুথি বিদ্রোহীদের দমনে উপসাগরীয় নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে অংশ নিতে আগ্রহী। উল্লেখ্য, হুথি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের বেশিরভাগ অংশের দখল নিয়েছে। সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ বৃহস্পতিবার জানায়, জর্ডান,
মরক্কো ও সুদানও বিদ্রোহীবিরোধী অভিযানে অংশ নেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে। ইয়েমেনে ক্ষমতাচ্যুত সরকারকে পুনর্বহালের জন্য এ হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি। সৌদি নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী ইয়েমেনের বন্দরে না ভিড়তে বিদেশী জাহাজকে সতর্ক করে দিয়েছে। এছাড়া ইয়েমেনের আকাশসীমাকে ‘নিয়ন্ত্রিত স্থান’ ঘোষণা করা হয়েছে। এ হামলার মাধ্যমে সৌদি আরব ইরানের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ শুরু করল বলে মন্তব্য করছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে সানায় সৌদি ও তার মিত্র দেশগুলোর বিমান হামলায় ২০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। সৌদি রাজকীয় বাহিনীসহ তার পারস্য উপসাগরীয় মিত্র দেশগুলোর ১০০টি জঙ্গি বিমান বৃহস্পতিবার রাত থেকে ইয়েমেনে হামলা চালায়। অন্যদিকে সৌদি সরকার ইয়েমেনে বিমান হামলা চালানোর পর প্রয়োজন হলে স্থল অভিযানও শুরু করতে পারে বলে একটি সৌদি সূত্র আভাস দিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের নিরাপত্তাবিষয়ক ওই সূত্র জানায়, ‘সম্ভবত স্থল হামলার প্রয়োজন হতে পারে। কারণ, ইয়েমেনে সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য কেবল আকাশে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যাবে না। সৌদি সরকার ও তার দশটি মিত্র সরকার ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন হামলায় অংশ নিয়েছে। আরব আমিরাতের ৩০টি, কুয়েতের ১৫টি ও মরক্কোর ৬টি জঙ্গি বিমান এ হামলায় শরিক হয়েছে এবং এ হামলায় মিসর ও পাকিস্তানের যুদ্ধজাহাজও অংশ নিয়েছে।’ সৌদি আরবের বিমান ও নৌবাহিনীর সদস্যসহ মোট দেড় লাখ সৌদি সেনা ইয়েমেনবিরোধী এ হামলায় অংশ নিয়েছে। এদিকে, ইয়েমেনে হামলায় সৌদি আরবকে অস্ত্রপাতি সরবরাহ (লজিস্টিক সাপোর্ট)
ও গোয়েন্দা সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সানার হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে রিয়াদের সামরিক অভিযানে আঞ্চলিক মিত্রদের সমর্থনে ওয়াশিংটন এগিয়ে এসেছে বলে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়। বুধবার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র বেরনাদেত মিহান এক বিবৃতিতে বলেন, উপসাগরীয় জোট (জিসিসি) নেতৃত্বাধীন সামরিক অপারেশনে অস্ত্রপাতি ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এ সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে না। বরং সৌদি আরব ও জিসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করছে। মিহান বলেন, আমরা হুথিদের আহ্বান জানাচ্ছি, তারা সামরিক কার্যক্রম ছেড়ে রাজনৈতিক সংলাপের জন্য সমঝোতার পথে আসুক। এদিকে, ইয়েমেনের পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট আব্দো রাব্বো মানসুর হাদি পালিয়ে ওমানে গেছেন। গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মানসুর হাদির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছে।
No comments