ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তুলকালাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর জের ধরে গতকাল দিনভর শহরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষের একপর্যায়ে রেলস্টেশনে হামলা ও ভাঙচুর করে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা l ছবি: প্রথম আলো |
আগের
দিনের সংঘর্ষে আহত এক ছাত্রের মৃত্যুর জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালিয়েছে মাদ্রাসার
ছাত্ররা। তারা রেলস্টেশন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ
সংগীতাঙ্গনসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। জ্বালিয়ে দিয়েছে
পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান।
দিনভর সহিংসতার পর সন্ধ্যায় প্রশাসনের সঙ্গে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সমঝোতা হয়। দাবি অনুযায়ী, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তাপস রঞ্জন ঘোষ ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, এ ঘটনায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, এর আগের দিন সোমবার বিকেলে শহরের জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকায় একজন বয়স্ক ইজিবাইকচালকের সঙ্গে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রের বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। তা দেখে এক দোকানি এগিয়ে গেলে তাঁর সঙ্গে ওই ছাত্রের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে পরে মাদ্রাসার ছাত্ররা এসে ওই দোকান ভাঙচুর করে। তখন মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগও ব্যবসায়ীদের পক্ষে সংঘর্ষে যুক্ত হয়। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। ওই সংঘর্ষে আহতদের একজন গতকাল ভোররাতে মারা যান। তাঁর নাম মাসুদুর রহমান (২০), তিনি শহরের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার ছাত্র। শহরের ভাদুঘর এলাকায় তাঁর বাড়ি।
মাসুদুরের মৃত্যুর খবর জানার পর গতকাল সকালে ওই মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা সকাল সাড়ে আটটার দিকে শহরের মঠের গোড়া এলাকায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা ‘হরতাল, হরতাল’ বলে স্লোগান দেন। পরে তাঁরা শহরের রেলগেট এলাকা, জেলা পরিষদ মার্কেট, কালীবাড়ি মোড়, টিএ রোড, ঘোড়াপট্টির মোড়, ফকিরাপুল, মঠের ঘোড়া, পুরাতন কাচারি পুকুরপাড়, কুমারশীল মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন তাঁরা।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ মাদ্রাসার ছাত্ররা শহরের হালদারপাড়া এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, পুরাতন জেল রোড এলাকায় সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন, পুরাতন কাচারি পুকুর এলাকার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে থাকা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয় এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার বাড়িতে হামলা করে।
এসব হামলার পর বেলা একটার দিকে মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শহরের টিএ রোডে মাদ্রাসার ছাত্রদের ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা কান্দিপাড়ায় মাদ্রাসার দিকে এগোতে গেলে মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে তাঁদের আবার সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষ থামায়।
এর আগে মাদ্রাসার ছাত্ররা সকাল ১০টার দিকে শহরের রেলগেট এলাকায় রেললাইনের স্লিপার উপড়ে ফেলে এবং লাইনের ওপর গাছের গুঁড়ি ও পরিত্যক্ত স্লিপার স্তূপ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বেলা পৌনে একটার দিকে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে হামলা চালিয়ে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণকারী প্যানেল বোর্ড, প্যানেল বোর্ডের সাপোর্টিং ও কম্পিউটার ভেঙে তছনছ করে দেয়।
রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন মাস্টার এস এম মইদুর রহমান জানান, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। স্টেশনের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘স্টেশনে এখন আর কোনো কিছু নেই। ঢাকার বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্যানেল বোর্ড নষ্ট করে দেওয়ায় ট্রেন এখন মেইন লাইনে (দুই ও তিন নম্বর লাইন) ধীরগতিতে চলবে।’
মাদ্রাসার ছাত্ররা শহরের ফকিরাপুলের ওপর ব্যারিকেড দিয়ে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সদর থানার পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও র্যা বের পাশাপাশি ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
দিনভর সহিংসতার পর সন্ধ্যায় প্রশাসনের সঙ্গে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সমঝোতা হয়। দাবি অনুযায়ী, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তাপস রঞ্জন ঘোষ ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, এ ঘটনায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, এর আগের দিন সোমবার বিকেলে শহরের জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকায় একজন বয়স্ক ইজিবাইকচালকের সঙ্গে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রের বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। তা দেখে এক দোকানি এগিয়ে গেলে তাঁর সঙ্গে ওই ছাত্রের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে পরে মাদ্রাসার ছাত্ররা এসে ওই দোকান ভাঙচুর করে। তখন মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগও ব্যবসায়ীদের পক্ষে সংঘর্ষে যুক্ত হয়। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। ওই সংঘর্ষে আহতদের একজন গতকাল ভোররাতে মারা যান। তাঁর নাম মাসুদুর রহমান (২০), তিনি শহরের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার ছাত্র। শহরের ভাদুঘর এলাকায় তাঁর বাড়ি।
মাসুদুরের মৃত্যুর খবর জানার পর গতকাল সকালে ওই মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা সকাল সাড়ে আটটার দিকে শহরের মঠের গোড়া এলাকায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা ‘হরতাল, হরতাল’ বলে স্লোগান দেন। পরে তাঁরা শহরের রেলগেট এলাকা, জেলা পরিষদ মার্কেট, কালীবাড়ি মোড়, টিএ রোড, ঘোড়াপট্টির মোড়, ফকিরাপুল, মঠের ঘোড়া, পুরাতন কাচারি পুকুরপাড়, কুমারশীল মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন তাঁরা।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ মাদ্রাসার ছাত্ররা শহরের হালদারপাড়া এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, পুরাতন জেল রোড এলাকায় সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন, পুরাতন কাচারি পুকুর এলাকার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে থাকা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয় এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার বাড়িতে হামলা করে।
এসব হামলার পর বেলা একটার দিকে মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শহরের টিএ রোডে মাদ্রাসার ছাত্রদের ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা কান্দিপাড়ায় মাদ্রাসার দিকে এগোতে গেলে মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে তাঁদের আবার সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষ থামায়।
এর আগে মাদ্রাসার ছাত্ররা সকাল ১০টার দিকে শহরের রেলগেট এলাকায় রেললাইনের স্লিপার উপড়ে ফেলে এবং লাইনের ওপর গাছের গুঁড়ি ও পরিত্যক্ত স্লিপার স্তূপ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বেলা পৌনে একটার দিকে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে হামলা চালিয়ে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণকারী প্যানেল বোর্ড, প্যানেল বোর্ডের সাপোর্টিং ও কম্পিউটার ভেঙে তছনছ করে দেয়।
রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন মাস্টার এস এম মইদুর রহমান জানান, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। স্টেশনের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘স্টেশনে এখন আর কোনো কিছু নেই। ঢাকার বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্যানেল বোর্ড নষ্ট করে দেওয়ায় ট্রেন এখন মেইন লাইনে (দুই ও তিন নম্বর লাইন) ধীরগতিতে চলবে।’
মাদ্রাসার ছাত্ররা শহরের ফকিরাপুলের ওপর ব্যারিকেড দিয়ে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সদর থানার পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও র্যা বের পাশাপাশি ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের প্যানেল বোর্ডও ভাঙচুর করা হয়। ছবিটি গতকাল দুপুরে তোলা l প্রথম আলো |
বেলা
দুইটার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সামসুল হক, বিজিবি, পুলিশ ও র্যা
বের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক
ও ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষাসচিব আবদুর রহিম
কাসেমীকে সঙ্গে নিয়ে কর্মকর্তারা শহরের ঘোড়াপট্টি মোড়ে যান। সেখানে
গিয়ে আবদুর রহিম কাসেমী ছাত্রদের শান্তিপূর্ণভাবে নিহতের জানাজা আদায় করার
নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদুল হক ভূঁইয়া ও জেলা
ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম বিল্লাহকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়। বিকেল চারটার দিকে লাশ নিতে গিয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররা আবার উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা হাসপাতালে ভাঙচুর করে। টিএ রোড এলাকায় টহল পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ছবি তুলতে গেলে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমের জেলা প্রতিনিধি মাসুক হৃদয়কে বেধড়ক লাঠিপোটা করেন এক র্যা ব সদস্য।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান, বিজিবি-১২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নজরুল ইসলামসহ র্যা ব ও পুলিশের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।
বৈঠকে মাদ্রাসার শিক্ষকেরা সোমবারের সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসা, নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা, ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে সদরের দায়িত্বে থাকা এএসপি ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার এবং নাসিরনগর উপজেলার ‘হযরত শাহ্জালাল (রাঃ) মসজিদ ও কওমী মাদ্রাসা কমপ্লেক্স’ খুলে দেওয়া এবং সেখানে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার দাবি করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবিগুলো সরকারের সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলে তাঁদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
মধ্যরাতে জেলা প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এম এ মাসুদ জানান, নিহতের পরিবারকে পুলিশের মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকায় এক ইজিবাইকচালকের সঙ্গে মাদ্রাসার ছাত্রের ভাড়া নিয়ে বাদানুবাদ হয়। এ সময় স্থানীয় দোকানি রনি আহমেদ এগিয়ে এলে তাঁর সঙ্গে ওই মাদ্রাসার ছাত্রের কথা-কাটাকাটি হয়। এটিই ছিল ঘটনার সূত্রপাত।
রনি আহমেদ বলেন, ‘সোমবার বিকেলে মাদ্রাসার এক ছাত্র বৃদ্ধ এক ইজিবাইকচালকের সঙ্গে তর্ক করছিল। বিষয়টি সুরাহা করতে আমি এগিয়ে যাই। এ সময় মাদ্রাসা ছাত্রকে আমি এক-দুটা বকা দিয়েছি। তখন অন্যদের আনতে সে ফোন করতে চাইলে আমি তাকে ধমক দিয়ে মোবাইল পকেটে রাখতে বলি। সে নিজেকে কওমি ছাত্র পরিষদের সেক্রেটারি বলে পরিচয় দিলে আমি তাকে চলে যেতে বলি। এরপর সন্ধ্যায় মাদ্রাসার ছাত্ররা আমার দোকানে (বিজয় টেলিকম) হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আমাকে মারধর করে।’
এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়। বিকেল চারটার দিকে লাশ নিতে গিয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররা আবার উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা হাসপাতালে ভাঙচুর করে। টিএ রোড এলাকায় টহল পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ছবি তুলতে গেলে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমের জেলা প্রতিনিধি মাসুক হৃদয়কে বেধড়ক লাঠিপোটা করেন এক র্যা ব সদস্য।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান, বিজিবি-১২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নজরুল ইসলামসহ র্যা ব ও পুলিশের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।
বৈঠকে মাদ্রাসার শিক্ষকেরা সোমবারের সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসা, নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা, ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে সদরের দায়িত্বে থাকা এএসপি ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার এবং নাসিরনগর উপজেলার ‘হযরত শাহ্জালাল (রাঃ) মসজিদ ও কওমী মাদ্রাসা কমপ্লেক্স’ খুলে দেওয়া এবং সেখানে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার দাবি করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবিগুলো সরকারের সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলে তাঁদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
মধ্যরাতে জেলা প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এম এ মাসুদ জানান, নিহতের পরিবারকে পুলিশের মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকায় এক ইজিবাইকচালকের সঙ্গে মাদ্রাসার ছাত্রের ভাড়া নিয়ে বাদানুবাদ হয়। এ সময় স্থানীয় দোকানি রনি আহমেদ এগিয়ে এলে তাঁর সঙ্গে ওই মাদ্রাসার ছাত্রের কথা-কাটাকাটি হয়। এটিই ছিল ঘটনার সূত্রপাত।
রনি আহমেদ বলেন, ‘সোমবার বিকেলে মাদ্রাসার এক ছাত্র বৃদ্ধ এক ইজিবাইকচালকের সঙ্গে তর্ক করছিল। বিষয়টি সুরাহা করতে আমি এগিয়ে যাই। এ সময় মাদ্রাসা ছাত্রকে আমি এক-দুটা বকা দিয়েছি। তখন অন্যদের আনতে সে ফোন করতে চাইলে আমি তাকে ধমক দিয়ে মোবাইল পকেটে রাখতে বলি। সে নিজেকে কওমি ছাত্র পরিষদের সেক্রেটারি বলে পরিচয় দিলে আমি তাকে চলে যেতে বলি। এরপর সন্ধ্যায় মাদ্রাসার ছাত্ররা আমার দোকানে (বিজয় টেলিকম) হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আমাকে মারধর করে।’
শহরের টিএ রোড এলাকায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে মাদ্রাসার ছাত্ররা। ছবিটি গতকাল বিকেলে তোলা -প্রথম আলো |
তবে
কওমি ছাত্র ঐক্য পরিষদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খালেদ
মোহাম্মদ মোশারফ প্রথম আলোকে বলেন, নাসিরনগরের মাদ্রাসা কমপ্লেক্স খুলে
দেওয়ার দাবিতে এবং সেখানে বিদ্যুৎ-সংযোগের দাবিতে কওমি ঐক্য পরিষদ সোমবার
দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
নিয়ে বিকেলে ইজিবাইকে করে তিনি কাউতলী যাচ্ছিলেন। উড়ালসেতু নির্মাণকাজের
জন্য ইজিবাইক আর সামনে যাবে না বললে তিনি নেমে যান। কিন্তু অন্য দুই যাত্রী
না নেমে এগিয়ে যাওয়ার চালকের সঙ্গে তর্ক শুরু করে।
মোশারফের দাবি, ‘আমি ওই যাত্রীদের তর্ক না করে চলে যেতে বলি। তখন বিজয় টেলিকমের রনিসহ কয়েকজন পেছন দিকে থেকে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বিষয়টি পরে মাদ্রাসার ছাত্ররা জানতে পেরে সন্ধ্যায় জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকায় গেলে সংঘর্ষ বাধে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাদ্রাসার ছাত্রদের হামলার পর ব্যবসায়ীরা এক জোট হয়ে প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগ দেন ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এ সময় শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। ওই রাতের সংঘর্ষে ১০ জন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।
তবে সোমবারের সংঘর্ষে ছাত্রলীগের যুক্ত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মাসুম বিল্লাহ। তাঁর দাবি, ‘আমরা মিছিল করে টিএ রোড এলাকা অতিক্রম করার সময় কান্দিপাড়া থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও মাদ্রাসার ছাত্ররা আমাদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে। তখন আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গতকালের পরিস্থিতির নিয়ে সন্ধ্যায় বিবিসি বাংলাকে জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে সহিংস বিক্ষোভ করেছে তারা। ভাঙচুর করেছে, কিছু অগ্নিসংযোগ করেছে। স্থানীয় অন্য রাজনৈতিক যে সংগঠনগুলো আছে, তারাও এতে জড়িয়ে পড়ে। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
মোশারফের দাবি, ‘আমি ওই যাত্রীদের তর্ক না করে চলে যেতে বলি। তখন বিজয় টেলিকমের রনিসহ কয়েকজন পেছন দিকে থেকে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বিষয়টি পরে মাদ্রাসার ছাত্ররা জানতে পেরে সন্ধ্যায় জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকায় গেলে সংঘর্ষ বাধে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাদ্রাসার ছাত্রদের হামলার পর ব্যবসায়ীরা এক জোট হয়ে প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগ দেন ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এ সময় শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। ওই রাতের সংঘর্ষে ১০ জন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।
তবে সোমবারের সংঘর্ষে ছাত্রলীগের যুক্ত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মাসুম বিল্লাহ। তাঁর দাবি, ‘আমরা মিছিল করে টিএ রোড এলাকা অতিক্রম করার সময় কান্দিপাড়া থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও মাদ্রাসার ছাত্ররা আমাদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে। তখন আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গতকালের পরিস্থিতির নিয়ে সন্ধ্যায় বিবিসি বাংলাকে জেলা প্রশাসক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে সহিংস বিক্ষোভ করেছে তারা। ভাঙচুর করেছে, কিছু অগ্নিসংযোগ করেছে। স্থানীয় অন্য রাজনৈতিক যে সংগঠনগুলো আছে, তারাও এতে জড়িয়ে পড়ে। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
No comments