শরণার্থীদের ফেরত পাঠাচ্ছে জার্মানি
নতুন বছরের শুরু থেকে প্রতিদিন অসংখ্য শরণার্থীকে অস্ট্রিয়ায় ফেরত পাঠাচ্ছে জার্মানি। অস্ট্রীয় পুলিশ এ কথা জানিয়েছে। পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শরণার্থীদের অনেকের কাছেই বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। অন্যরা আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে জার্মানিতে আবেদন না করে অন্যান্য দেশ, বিশেষ করে স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলোতে আবেদন করতে চায়। জার্মানির কোলনে বর্ষবরণ উদযাপনের সময় নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় শরণার্থীদের দায়ী করা হয়েছে।
এ নিয়ে চাপে আছেন দেশটির শরণার্থীবান্ধব চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। যেসব শরণার্থী ফেরত পাঠানো হচ্ছে তাদের মধ্যে সিরীয় শরণার্থী তেমন নেই। জার্মানি সাধারণত সিরীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে থাকে। এসব শরণার্থীর অধিকাংশই আফগানিস্তান, মরক্কো ও আলজেরিয়া থেকে আসা বলে জানিয়েছে অস্ট্রীয় পুলিশ। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেছেন, শরণার্থী সমস্যার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। ইউরো মুদ্রা টিকিয়ে রাখতে হলে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে স্বাধীনভাবে যাতায়াতের সুযোগ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কোলন শহরে ১ জানুয়ারি বর্ষবরণ উৎসবে অংশ নেয়া নারীদের ওপর যৌন হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৫৭৯টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে দুটি ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ১৯ জনের মধ্যে ১৪ জন মরক্কো ও আলজেরিয়া থেকে আসা। এদের মধ্যে দশজন শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়প্রার্থী এবং তাদের নয়জন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরের পর জার্মানিতে এসেছেন। আটককৃতদের মধ্যে দু’জন জার্মান ও একজন আমেরিকানও রয়েছেন।
তবে শরণার্থীদের বিরুদ্ধে যৌন হামলার অভিযোগ আনা হলেও অন্যদের বিরুদ্ধে তা আনা হয়নি। ২০১৫ সালে প্রায় ১১ লাখ শরণার্থী আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে জার্মানিতে হাজির হয়েছেন। এদিকে জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় লিপজিগ শহরে মুসলমানবিরোধী বিক্ষোভ করেছে দেশটির ইসলামবিদ্বেষী সংগঠন পেজিডা। সোমবার সন্ধ্যায় সংগঠনটির স্থানীয় গ্র“প লেজিডা এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। নববর্ষের প্রাক্কালে কোলন শহরে নারীদের যৌন হেনস্তার জন্য শরণার্থীরাই দায়ী বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। বিক্ষোভকারীরা জার্মানিতে লাখো শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার কারণে চ্যান্সেলর মার্কেলের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের হাতে জার্মানির পতাকা এবং মুসলমান ও শরণার্থীবিরোধী ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড ছিল। এসব ব্যানার-প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- ‘এখানে ইসলাম স্বাগত নয়’, ‘মার্কেল, মুসলমানদের সঙ্গে নিয়ে বের হয়ে যাও’ ইত্যাদি। এ সময় বিক্ষোভকারীদের অনেকেই মার্কেলের পদত্যাগ দাবি করেন। বিক্ষোভকারীরা যাতে কোনো হামলা বা বিশৃংখল সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য ওই এলাকায় পুলিশ ও জলকামান মোতায়েন ছিল।
No comments