খাবারের বিনিময়ে যৌনকর্মে বাধ্য করছে এইউ সেনারা
যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দুর্ভিক্ষপীড়িত সোমালিয়ায় নারী ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েশিশুদের ধর্ষণ করেছে আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) বাহিনী। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে এই অভিযোগ করেছে। সংস্থাটি বলছে, ধর্ষণের শিকার বেশ কিছু নারী অভিযোগ করেছেন, খাবার ও অর্থ দেওয়ার বিনিময়েও সেনারা তাঁদের সঙ্গে যৌনকর্ম করেছে। এইচআরডব্লিউর অভিযোগের বিষয়ে এইউ বা সোমালিয়ার এইউ মিশনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। দেশটিতে ২২ হাজার এইউ সেনা আছে। তাদের পাঠানো হয়েছে ছয়টি দেশ থেকে। সোমালিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে তারা আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত আল-শেবাব জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সোমালিয়ায় এইউ বাহিনীকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে। এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার নারীদের বেশির ভাগই গ্রাম থেকে পালিয়ে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর আশ্রয়শিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন। ২০১১ সালে দেশটিতে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরুর পর তাঁরা ওই সব শিবিরে আশ্রয় নেন।
২১ জন নারী ও মেয়েশিশুর সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমালিয়ার দালালদের মাধ্যমে আফ্রিকান ইউনিয়নের সৈনিকেরা মানবিক সাহায্য দেওয়ার নামে নারী ও শিশুদের যৌনকাজে বাধ্য করে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসার জন্য তাঁরা এইউ সেনাদের ক্যাম্পে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন। যেসব নারী ও শিশুর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, এর মধ্যে ১২ বছরের এক শিশু উগান্ডার এক সেনার দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার নারীদের মধ্যে মাত্র দুইজন পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। লজ্জায় এবং পুলিশ, পরিবার ও আল-শাবাবের ভয়ে তাঁরা অভিযোগ করেন না। এইচআরডব্লিউ বলছে, নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে চলমান এই নিগ্রহ বন্ধ করতে হবে। সংস্থার আফ্রিকা অঞ্চলের প্রধান ড্যানিয়েল বেকেল বলেন, যৌন নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত ও শাস্তির ব্যবস্থা করার দায়িত্ব আফ্রিকান ইউনিয়ন ও সোমালিয়ার রাজনৈতিক নেতাদের। তিনি বলেন, ‘মোগাদিসুর শিবিরগুলোতে খাদ্যসংকট প্রকট হচ্ছে। পরিবারের ক্ষুধা মেটাতে যেন তাঁদের শরীর বিক্রি না করতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
No comments