গাজীপুর সিটি নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগাম সংকেত by শরিফুল হাসান ও মাসুদ রানা
নিশ্চিত জয়ের পথে এম এ মান্নান
মোট কেন্দ্র ৩৯২
প্রাপ্ত ফল: ২৮৩
মোট কেন্দ্র ৩৯২
প্রাপ্ত ফল: ২৮৩
এম এ মান্নান পেয়েছেন
ভোট: ২,৬৯,৯৫৭
আজমত উল্লা খান পেয়েছেন
ভোট : ১,৮৬,৫৯১
রাত ২টা পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র থেকে পাওয়া ফল
১৫ জুন ছিল শনিবার। সেদিন চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সবগুলোতে হেরেছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর মাত্র তিন সপ্তাহ পর গতকাল আরেক শনিবারে আওয়ামী লীগের দূর্গ বলে খ্যাত গাজীপুরেও একই পরিণতি হয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সর্বশেষ পাওয়া বেসরকারি ফলাফলে মেয়র পদে নিশ্চিত জয়ের পথে রয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান। রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্রে রাত দুইটা পর্যন্ত মোট ৩৯২ কেন্দ্রের মধ্যে ২৮৩টির ফলাফল পাওয়া গেছে। এম এ মান্নান (টেলিভিশন) পেয়েছেন দুই লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান (দোয়াত কলম) পেয়েছেন এক লাখ ৮৬ হাজার ৫৯১ ভোট।
তবে রাত দুইটা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২৩৪ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তাতে এম এ মান্নান পেয়েছেন দুই লাখ ১৬ হাজার ৫৫১ ভোট। আর আজমত উল্লা পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৯৪০ ভোট।
গতকাল শনিবার সকাল আটটা থেকে নবগঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনের ভোট শুরু হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে বিকেল চারটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এখানে মোট ভোটার ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৯ জন। সন্ধ্যার পর থেকে গাজীপুর সদরে বঙ্গতাজ পৌর মিলনায়তনে স্থাপিত অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণা শুরু করেন।
দীর্ঘ দুই দশক পর গাজীপুরে আওয়ামী লীগের এমন ফলাফলের কারণ কী? জেলার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—দুই দলের নেতারাই স্বীকার করেছেন, এর আগে অনুষ্ঠিত চার সিটি নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব পড়েছে গাজীপুরে। তাঁরা মনে করেন, গাজীপুরের নির্বাচনের এই ফল প্রভাব ফেলবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কম ব্যবধানে পরাজয় হলে তা-ও হতো। কিন্তু বড় ব্যবধানের এ পরাজয় সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা সৃষ্টি করবে।
এর আগে ২০০৮ সালের আগস্টে চার সিটিতে নির্বাচনে সবগুলোতে হেরেছিল বিএনপি। এর মাত্র তিন মাস পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছিল বিএনপির। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এখনই সতর্ক না হলে তাঁদের দলেরও একই দশা হতে পারে। নেতাদের কেউ কেউ আবার বলছেন, এখন সতর্ক হওয়ার সময় নেই।
চার সিটিতে পরাজয়ের পর গাজীপুরে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল সরকারি দল। স্থানীয়-কেন্দ্রীয় সব নেতা সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচন মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু ফল দেখে গতকাল রাতে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কোনো নেতা-কর্মীকে আর দেখা যায়নি।
চার সিটির নির্বাচন কতটা প্রভাব ফেলেছে জানতে চাইলে আজমত উল্লার নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও গাজীপুর-২ আসনের সাংসদ জাহিদ আহসান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার সিটির আগে যদি গাজীপুরের নির্বাচন হতো, তাহলে হয়তো আমরা জিতে যেতাম। কিন্তু চার সিটিতে পরাজয়ের প্রভাব গাজীপুরে এসে পড়েছে। তবে এর বাইরে জাতীয় ইস্যুগুলোও এই নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে কাজ করেছে।’ এই নির্বাচনের ফল সংসদ নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই এ কথা বলার সময় আসেনি। তবে এ নির্বাচনের প্রভাব তো অবশ্যই সংসদ নির্বাচনে পড়বে। তার আগে আওয়ামী লীগকে আরও সংগঠিত হতে হবে।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের যে আস্থা নেই, সেটি চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল। ওই জয় এই নির্বাচনে অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে। সাধারণ মানুষ বুঝে গেছে, দেশের কোথাও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা নেই। গাজীপুরে পরাজয়ের মাধ্যমে এই বার্তা আরও অনেক বেশি শক্ত হলো।
বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান বলেন, শুধু গাজীপুরের নির্বাচন নয়, সামনের সব নির্বাচনেই এখন থেকে বিএনপি জয়ী হবে।
গোপালগঞ্জের পর গাজীপুরকে বলা হতো আওয়ামী লীগের বড় ঘাঁটি। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে গাজীপুরের সবগুলো আসনে জয় পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনটি আসন পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৮৬ সালে গাজীপুর পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর কখনোই সেখানে জয় পায়নি বিএনপি। ১৯৯৫ সালের পর টঙ্গী পৌরসভার নির্বাচনেও কখনো হারেনি আওয়ামী লীগ। আর গত ২২ বছরে গাজীপুর শহরের সংসদীয় আসন কিংবা সেখানে স্থানীয় কোনো নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়নি। কিন্তু এবার গাজীপুরের দুর্গে বড় আঘাত হানল বিএনপি।
ভোট: ২,৬৯,৯৫৭
আজমত উল্লা খান পেয়েছেন
ভোট : ১,৮৬,৫৯১
রাত ২টা পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র থেকে পাওয়া ফল
১৫ জুন ছিল শনিবার। সেদিন চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সবগুলোতে হেরেছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর মাত্র তিন সপ্তাহ পর গতকাল আরেক শনিবারে আওয়ামী লীগের দূর্গ বলে খ্যাত গাজীপুরেও একই পরিণতি হয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সর্বশেষ পাওয়া বেসরকারি ফলাফলে মেয়র পদে নিশ্চিত জয়ের পথে রয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান। রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্রে রাত দুইটা পর্যন্ত মোট ৩৯২ কেন্দ্রের মধ্যে ২৮৩টির ফলাফল পাওয়া গেছে। এম এ মান্নান (টেলিভিশন) পেয়েছেন দুই লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান (দোয়াত কলম) পেয়েছেন এক লাখ ৮৬ হাজার ৫৯১ ভোট।
তবে রাত দুইটা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২৩৪ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তাতে এম এ মান্নান পেয়েছেন দুই লাখ ১৬ হাজার ৫৫১ ভোট। আর আজমত উল্লা পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৯৪০ ভোট।
গতকাল শনিবার সকাল আটটা থেকে নবগঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনের ভোট শুরু হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে বিকেল চারটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এখানে মোট ভোটার ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৯ জন। সন্ধ্যার পর থেকে গাজীপুর সদরে বঙ্গতাজ পৌর মিলনায়তনে স্থাপিত অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণা শুরু করেন।
দীর্ঘ দুই দশক পর গাজীপুরে আওয়ামী লীগের এমন ফলাফলের কারণ কী? জেলার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—দুই দলের নেতারাই স্বীকার করেছেন, এর আগে অনুষ্ঠিত চার সিটি নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব পড়েছে গাজীপুরে। তাঁরা মনে করেন, গাজীপুরের নির্বাচনের এই ফল প্রভাব ফেলবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কম ব্যবধানে পরাজয় হলে তা-ও হতো। কিন্তু বড় ব্যবধানের এ পরাজয় সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা সৃষ্টি করবে।
এর আগে ২০০৮ সালের আগস্টে চার সিটিতে নির্বাচনে সবগুলোতে হেরেছিল বিএনপি। এর মাত্র তিন মাস পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছিল বিএনপির। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এখনই সতর্ক না হলে তাঁদের দলেরও একই দশা হতে পারে। নেতাদের কেউ কেউ আবার বলছেন, এখন সতর্ক হওয়ার সময় নেই।
চার সিটিতে পরাজয়ের পর গাজীপুরে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল সরকারি দল। স্থানীয়-কেন্দ্রীয় সব নেতা সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচন মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু ফল দেখে গতকাল রাতে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কোনো নেতা-কর্মীকে আর দেখা যায়নি।
চার সিটির নির্বাচন কতটা প্রভাব ফেলেছে জানতে চাইলে আজমত উল্লার নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও গাজীপুর-২ আসনের সাংসদ জাহিদ আহসান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার সিটির আগে যদি গাজীপুরের নির্বাচন হতো, তাহলে হয়তো আমরা জিতে যেতাম। কিন্তু চার সিটিতে পরাজয়ের প্রভাব গাজীপুরে এসে পড়েছে। তবে এর বাইরে জাতীয় ইস্যুগুলোও এই নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে কাজ করেছে।’ এই নির্বাচনের ফল সংসদ নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই এ কথা বলার সময় আসেনি। তবে এ নির্বাচনের প্রভাব তো অবশ্যই সংসদ নির্বাচনে পড়বে। তার আগে আওয়ামী লীগকে আরও সংগঠিত হতে হবে।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের যে আস্থা নেই, সেটি চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল। ওই জয় এই নির্বাচনে অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে। সাধারণ মানুষ বুঝে গেছে, দেশের কোথাও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা নেই। গাজীপুরে পরাজয়ের মাধ্যমে এই বার্তা আরও অনেক বেশি শক্ত হলো।
বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান বলেন, শুধু গাজীপুরের নির্বাচন নয়, সামনের সব নির্বাচনেই এখন থেকে বিএনপি জয়ী হবে।
গোপালগঞ্জের পর গাজীপুরকে বলা হতো আওয়ামী লীগের বড় ঘাঁটি। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে গাজীপুরের সবগুলো আসনে জয় পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনটি আসন পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৮৬ সালে গাজীপুর পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর কখনোই সেখানে জয় পায়নি বিএনপি। ১৯৯৫ সালের পর টঙ্গী পৌরসভার নির্বাচনেও কখনো হারেনি আওয়ামী লীগ। আর গত ২২ বছরে গাজীপুর শহরের সংসদীয় আসন কিংবা সেখানে স্থানীয় কোনো নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়নি। কিন্তু এবার গাজীপুরের দুর্গে বড় আঘাত হানল বিএনপি।
No comments