ভারতের যে গ্রামে মৃতদের সঙ্গে বসবাস
ভারতের
উত্তর প্রদেশের আগ্রা। সেখানকার আচনেরা ব্লকে চাহ পোখার গ্রাম। এই গ্রামে
বসবাসকারী মুসলিমদের লাশ দাফনের জন্য নেই কোনো কবরস্তান। ফলে মৃতদের বাধ্য
হয়ে তারা দাফন করেন বাড়ির ওপর। কখনো ঘরের সামনে। উঠোনে। ঘরের পিছনে। আবার
কখনো কখনো জায়গা না পাওয়ায় ঘরের ভিতরেও দাফন করা হয় লাশ।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যেখানেই পা ফেলা যাবে এই গ্রামে, সেখানেই কবর। বাধ্য হয়ে তার ওপর দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে বসবাসকারীদের। কেউবা সন্তানের কবরের ওপর চুলা বানিয়ে তাতে রান্না করতে বাধ্য হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের কাছে এসব নালিশ জানিয়ে লাভ হয় নি। কবরস্তানের জন্য একটি জায়গা দেয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা একটি হাজামজা পুকুর। তার ভিতর লাশ দাফনের কোনো অবস্থাই নেই। এ নিয়ে প্রতিবাদ হয়েছে অনেক কিন্তু কোনো কাজ হয় নি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সাংবাদিক অনুজা যশোওয়াল সরেজমিন গিয়েছিলেন ওই গ্রামে। তিনি যেখানে বসে ছিলেন, তা দেখিয়ে সেলিম শাহ নামে একজন বলেছেন, আপনি বসে আছেন আমার দাদীর কবরের ওপর। আমার দাদীকে তার বসতঘরের ভিতরেই দাফন করা হয়েছে।
অনুজা লিখেছে, চাহ পোখার গ্রামে গায়ে গায়ে লাগা কতগুলো ঘর। এ গ্রামটি যেন একটি কবরস্তানে পরিণত হয়েছে। কারণ, এখানে মৃত ব্যক্তিদের দাফন করার জন্য কবরস্তান নেই। ফলে বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যরা লাশ দাফন করেন বাড়িতে, ঘরের ভিতর। এর মধ্য দিয়ে মৃতদের সঙ্গে নিয়েই যেন তাদেরকে বসবাস করতে হচ্ছে। অনেক নারীকে দেখা গেছে তার সন্তানের কবরের ওপর রান্না করতে।
রিংকি বেগমের বাড়িতে একটি ঘরের পিছনেই পরিবারের পাঁচ সদস্যের লাশ দাফন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তার ১০ মাস বয়সী এক ছেলে। সে মারা গেছে জ্বরে। চিকিৎসা পায় নি ওই সন্তান। আরেকজন অধিবাসী গুড্ডি বলেছেন, আমাদের মতো গরীব মানুষ মারা গেলে তাদের কোন মর্যাদা থাকে না। বাড়িতে স্থান সংকুলানের অভাবে বসবাসকারীদের কবরের ওপর বসতে হয়। কবরের ওপর দিয়ে হাঁটতে হয়। এটা অত্যন্ত অমর্যাদাকর একটি বিষয়।
এ গ্রামে বসবাসকারী মুসলিম পরিবারগুলোর বেশির ভাগই গরিব, ভূমিহীন। পুরুষরা চুক্তিভিক্তিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বেরিয়ে যান। তারা বলেছেন, অনেক বছর ধরে একটি কবরস্তানের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের সেই দাবি পূরণ হয় নি। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যে বৈষম্য করছে তার প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠে। তারা লাশ দাফনের জন্য অর্থাৎ কবরস্তানের জন্য একটি পুকুরের ঠিক মধ্যস্থান বরাদ্দ দিয়েছে। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কানে প্রবেশ করে নি তা।
এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে অতীতে প্রতিবাদ বিক্ষোভও হয়েছে। ২০১৭ সালে মারা যান মঙ্গল খান নামে এক ব্যক্তি। গ্রামে কবরস্তানের জন্য জায়গা না দেয়া পর্যন্ত তাকে দাফন করতে অস্বীকৃতি জানায় তার পরিবার। পরে তাদেরকে নিশ্চয়তা দেয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গল খানের লাশ দাফন করা হয় ওই পুকুরের কাছে। কিন্তু ওই যে প্রতিশ্রুতি তা প্রতিশ্রুতিই রয়ে গেছে। কারখানায় কাজ করেন মুনিম খান। তিনি বলেন, আমাদের উত্তরসুরিদের জন্য একটু জমি চাই আমরা। গ্রামে হিন্দুদের দাহ করার জন্য স্থান আছে। কিন্তু আমরা মৃতদের সঙ্গে নিয়ে বসবাস করছি।
মরিয়া হয়ে কিছু অধিবাসী পাশ্ববর্তী সানান গ্রাম ও আচনেরা শহরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেখানে কবরস্তান আছে। কিন্তু সেখানে তাদেরকে পছন্দমত স্থান বেছে নিতে দেয়া হয় না। নিজাম খান নামে একজন মেকানিক বলেন, চাহ পোখারের চেয়ে এই দুটি স্থানে মুসলিমের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের যে কবরস্তান তা পূর্ণ হয়ে গেছে। গ্রামপ্রধান সুন্দর কুমার বলেছেন, মুসলিম পরিবারগুলোর জন্য বহুবার কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় নি।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রবি কুমার এনজি বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবহিত নন। বলেছেন, ওই গ্রামে আমি একজন কর্মকর্তাকে পাঠাবো। প্রকৃত পরিস্থিতি কি তা বিস্তারিত জেনে প্রয়োজন হলে জমি দেবো।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যেখানেই পা ফেলা যাবে এই গ্রামে, সেখানেই কবর। বাধ্য হয়ে তার ওপর দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে বসবাসকারীদের। কেউবা সন্তানের কবরের ওপর চুলা বানিয়ে তাতে রান্না করতে বাধ্য হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের কাছে এসব নালিশ জানিয়ে লাভ হয় নি। কবরস্তানের জন্য একটি জায়গা দেয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা একটি হাজামজা পুকুর। তার ভিতর লাশ দাফনের কোনো অবস্থাই নেই। এ নিয়ে প্রতিবাদ হয়েছে অনেক কিন্তু কোনো কাজ হয় নি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সাংবাদিক অনুজা যশোওয়াল সরেজমিন গিয়েছিলেন ওই গ্রামে। তিনি যেখানে বসে ছিলেন, তা দেখিয়ে সেলিম শাহ নামে একজন বলেছেন, আপনি বসে আছেন আমার দাদীর কবরের ওপর। আমার দাদীকে তার বসতঘরের ভিতরেই দাফন করা হয়েছে।
অনুজা লিখেছে, চাহ পোখার গ্রামে গায়ে গায়ে লাগা কতগুলো ঘর। এ গ্রামটি যেন একটি কবরস্তানে পরিণত হয়েছে। কারণ, এখানে মৃত ব্যক্তিদের দাফন করার জন্য কবরস্তান নেই। ফলে বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যরা লাশ দাফন করেন বাড়িতে, ঘরের ভিতর। এর মধ্য দিয়ে মৃতদের সঙ্গে নিয়েই যেন তাদেরকে বসবাস করতে হচ্ছে। অনেক নারীকে দেখা গেছে তার সন্তানের কবরের ওপর রান্না করতে।
রিংকি বেগমের বাড়িতে একটি ঘরের পিছনেই পরিবারের পাঁচ সদস্যের লাশ দাফন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তার ১০ মাস বয়সী এক ছেলে। সে মারা গেছে জ্বরে। চিকিৎসা পায় নি ওই সন্তান। আরেকজন অধিবাসী গুড্ডি বলেছেন, আমাদের মতো গরীব মানুষ মারা গেলে তাদের কোন মর্যাদা থাকে না। বাড়িতে স্থান সংকুলানের অভাবে বসবাসকারীদের কবরের ওপর বসতে হয়। কবরের ওপর দিয়ে হাঁটতে হয়। এটা অত্যন্ত অমর্যাদাকর একটি বিষয়।
এ গ্রামে বসবাসকারী মুসলিম পরিবারগুলোর বেশির ভাগই গরিব, ভূমিহীন। পুরুষরা চুক্তিভিক্তিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বেরিয়ে যান। তারা বলেছেন, অনেক বছর ধরে একটি কবরস্তানের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের সেই দাবি পূরণ হয় নি। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যে বৈষম্য করছে তার প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠে। তারা লাশ দাফনের জন্য অর্থাৎ কবরস্তানের জন্য একটি পুকুরের ঠিক মধ্যস্থান বরাদ্দ দিয়েছে। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কানে প্রবেশ করে নি তা।
এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে অতীতে প্রতিবাদ বিক্ষোভও হয়েছে। ২০১৭ সালে মারা যান মঙ্গল খান নামে এক ব্যক্তি। গ্রামে কবরস্তানের জন্য জায়গা না দেয়া পর্যন্ত তাকে দাফন করতে অস্বীকৃতি জানায় তার পরিবার। পরে তাদেরকে নিশ্চয়তা দেয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গল খানের লাশ দাফন করা হয় ওই পুকুরের কাছে। কিন্তু ওই যে প্রতিশ্রুতি তা প্রতিশ্রুতিই রয়ে গেছে। কারখানায় কাজ করেন মুনিম খান। তিনি বলেন, আমাদের উত্তরসুরিদের জন্য একটু জমি চাই আমরা। গ্রামে হিন্দুদের দাহ করার জন্য স্থান আছে। কিন্তু আমরা মৃতদের সঙ্গে নিয়ে বসবাস করছি।
মরিয়া হয়ে কিছু অধিবাসী পাশ্ববর্তী সানান গ্রাম ও আচনেরা শহরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেখানে কবরস্তান আছে। কিন্তু সেখানে তাদেরকে পছন্দমত স্থান বেছে নিতে দেয়া হয় না। নিজাম খান নামে একজন মেকানিক বলেন, চাহ পোখারের চেয়ে এই দুটি স্থানে মুসলিমের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের যে কবরস্তান তা পূর্ণ হয়ে গেছে। গ্রামপ্রধান সুন্দর কুমার বলেছেন, মুসলিম পরিবারগুলোর জন্য বহুবার কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় নি।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রবি কুমার এনজি বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবহিত নন। বলেছেন, ওই গ্রামে আমি একজন কর্মকর্তাকে পাঠাবো। প্রকৃত পরিস্থিতি কি তা বিস্তারিত জেনে প্রয়োজন হলে জমি দেবো।
No comments