বিশ্ব কুদস দিবস: ইহুদিবাদের আতঙ্ক
ফিলিস্তিন
ভূখণ্ড ইহুদিবাদীদের দখলে যাবার প্রায় ৭১ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এই সময়ের
মধ্যে ফিলিস্তিনিদেরকে প্রতিদিনই নতুন নতুন অত্যাচার-নির্যাতনের সম্মুখীন
হতে হয়েছে। ফিলিস্তিন জবর দখলের ছয় দশক পার হবার পরও ইসরাইল বিপর্যয়কর
নির্যাতনের ধারা অব্যাহত রেখেছে।
তাদের এই ন্যক্কারজনক আগ্রাসনের প্রতি অকুণ্ঠ পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তা সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের মজলুম জনতা তাদের দেশের ভূখণ্ডকে স্বাধীন করার তথা ইহুদিবাদী দখলমুক্ত করার দৃঢ় ইচ্ছা বাস্তবায়নে বিন্দুমাত্রও হাল ছাড়ে নি। ইরানের জনগণ সেই বিপ্লব বিজয়ের আগে থেকেই ফিলিস্তিনের মজলুম জনগোষ্ঠীকে সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে।
এই পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের ঘটনা স্বৈরাচারী শাহ বিরোধী বিপ্লবী গণ-আন্দোলনের সময় এবং ইসলামী বিপ্লব বিজয় পরবর্তীকালে ইসলামী সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। ইরানের ইসলামী বিপ্লব বিজয় ছিল ইহুদিবাদী ইসরাইলের গালে মারাত্মক চপেটাঘাত। কেননা ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের ফলে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ইসরাইলী স্বার্থে মারাত্মক আঘাত আসে বলে সে সময় বলা হয়েছিল। বিপ্লব বিজয় পরবর্তীকালের ঘটনাপঞ্জী এর সত্যতা ও যথার্থতা প্রমাণ করেছে। কেননা ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনী (রহ) কেবল ইরানের জনগণকেই নয় বরং বিশ্বের সকল মুসলমান ও স্বাধীনচেতা মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনদের সাহায্যে এগিয়ে আসার।
ইরানে ইসলামী বিপ্লবের রূপকার মরহুম ইমাম খোমেনী (রহ) ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্যের বুকে বিষাক্ত টিউমার বা ক্যান্সার বলে অভিহিত করেছেন। ফিলিস্তিনের সংগ্রামী জনগণের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা এবং তাদের অধিকারের প্রতি সাহায্য-সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার জন্যে রমযানের শেষ শুক্রবারে বিচিত্র কর্মসূচি, অনুষ্ঠান ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনীদের প্রতি পরিপূর্ণ সমর্থন ঘোষণার আহ্বান জানান।
বিশ্ববাসী বিশেষ করে মুসলিম বিশ্ব তাঁর এই আহ্বানে ব্যাপক সাড়া দেয় এবং এই দিনকে কুদস দিবস হিসেবে পালন করতে থাকে। প্রায় তিন দশক হতে চললো বিশ্বের মুসলমানরা রমযান মাসের শেষ শুক্রবারে মিছিল, মিটিং, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনীদের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে আসছে। একই দিনে বিশ্বজুড়ে জনগণের এই ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি ফিলিস্তিনীদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জাগ্রত রাখা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতি বিশ্ব মুসলমানের ঘৃণা প্রকাশের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারী শক্তিগুলো ভালো করেই জানে যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কুদস দিবস পালনের ঘটনা প্রমাণ করে ফিলিস্তিনী জনগণের অধিকারের প্রতি বিশ্ব মুসলমানের সমর্থন আছে এবং ইসরাইলের প্রতি রয়েছে তাদের তীব্র ঘৃণা। বিশ্ব মুসলমানের এই সমর্থন ফিলিস্তিনীদের প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা আন্দোলনকে উজ্জীবিত ও প্রাণিত করে। তবে কোনো কোনো আরব এবং মুসলিম দেশ কুদস দিবস পালনের ব্যাপারে তেমন একটা সন্তুষ্ট নয়। এমনকি কোনো কোনো দেশ তো কুদস দিবসের কর্মসূচি পালনে বাধাই দেয়। মনে হয় কুদস দিবস পালনে বাধাদানকারী দেশগুলো এ বিষয়ে অসন্তুষ্ট যে,ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ফিলিস্তিনী জনগণের সমর্থনে বিশ্বব্যাপী এই গণসচেতনতা সৃষ্টিকারী ও গণজাগরণমূলক পদক্ষেপ বা আন্দোলনের ঝাণ্ডা উত্তোলনকারী। কোনো কোনো আরব দেশ মনে করে ফিলিস্তিন সমস্যাটি একান্তই আরবদের ব্যাপার। তাই ফিলিস্তিনী জনগণের সমর্থনে ইরানের এই উদ্যোগকে তারা মেনে নিচ্ছে না। কিন্তু এই দেশগুলো যদি সত্যি সত্যিই ফিলিস্তিনী জনগণের মুক্তির চিন্তা করতো তাহলে তাদের উচিত ছিল ফিলিস্তিনীদের সমর্থনে এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে যে-কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন,সেই পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো এবং সেইসব কর্মসূচিকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা করা।
অবশ্য কোনো কোনো আরব দেশের কুদস দিবস পালনের বিরোধিতার আরো একটি কারণ আছে তাহলো ইসরাইলের সাথে তাদের গোপন ও প্রকাশ্য যোগসাজশ। তারা মনে করে, ইসরাইলকে কিছুটা সুবিধা বা ছাড় দিলে দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিন ভূখণ্ড থেকে পিছু হটে যাবে এবং ফিলিস্তিনের ওপর তারা তাদের দমন অভিযান বন্ধ করে দেবে। কিন্তু ইসরাইলী আধিপত্যবাদীদের বিগত দিনের স্বভাব বা আচরণ প্রমাণ করেছে, তারা যে কেবল ফিলিস্তিনী জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারেই নারাজ তাই নয়,বরং তারা চায় ফিলিস্তিনে বিভিন্ন প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে বংশনিধন করতে। এছাড়াও ইসরাইলী নেতারা বিভিন্ন আরব দেশ এবং ফিলিস্তিনী স্বাধীনতাকামী দলগুলোর সাথে যেসব চুক্তি করেছে সেগুলোকে ঠাণ্ডামাথায় পদদলিত করেছে।
আসলে ইসরাইল আন্তর্জাতিক কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কাই করে না। অসলো চুক্তি অনুযায়ী ফিলিস্তিন সরকারের অস্তিত্বকেই ইসরাইল আজ পর্যন্ত স্বীকার করে নি। এমনকি যেসব ফিলিস্তিনী ইসরাইলীদের অত্যাচারে নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে অন্য কোনো দেশে শরণার্থী হিসেবে জীবনযাপন করছে,তাদেরকে পর্যন্ত তাদের স্বদেশ ভূমিতে প্রত্যাবর্তন করতে দিচ্ছে না। উল্টো তারা অধিকৃত ভূখণ্ডে আরো বেশি ইহুদিবাদী বসতি গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের নির্যাতনের ইতিহাসের কালো পাতাগুলো উল্টালে দেখা যাবে যে, আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে কখনোই দমানো যায় নি,বরং কুদস দিবস পালন কিংবা মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ চাপের মাধ্যমে তাদেরকে কিছুটা দমানো সম্ভব হয়েছে।
মাসজিদুল আকসা হলো মুসলমানদের পবিত্রতম স্থানগুলোর একটি। কারণ এটি ছিল মুসলমানদের প্রথম কেবলা। অথচ ইহুদিবাদী ইসরাইল বেশ কবছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে মাসজিদুল আকসাকে ধ্বংস করে দিয়ে ঐ ধ্বংসাবশেষের ওপর তাদের উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা করতে। সম্প্রতি মসজিদুল আকসা ধ্বংসের এ কার্যক্রম অনেক বেড়ে গেছে। পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করাসহ বিভিন্ন অজুহাতে তারা মাসজিদুল আকসার নীচে দিয়ে টানেল তৈরির জন্যে খননকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইহুদিবাদীরা কুদসকে তাদের রাজধানী মনে করে। তাই তারা সেখান থেকে যে-কোনো উপায়ে ফিলিস্তিনী মুসলমানদের বিতাড়িত করে ইহুদিবাদীদেরকে স্থলাভিষিক্ত করাতে চাচ্ছে। এরিমাঝে বায়তুল মুকাদ্দাসের সাংস্কৃতিক পরিচয় পরিবর্তনের লক্ষ্যে সেখানকার মুসলমানদের কবরগুলো ধ্বংস করতে শুরু করেছে । বর্ণবাদী প্রাচীর নির্মাণের কাজও দ্রুততার সাথে চলছে।
এতোসব ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম সত্ত্বেও কোনো কোনো আরব দেশ আধিপত্যবাদী ইসরাইলের সাথে সমঝোতাকে সম্ভব বলে মনে করে এবং চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে। অথচ বাস্তবতা হলো ইসরাইল, আরব কিংবা ফিলিস্তিনীদের সাথে কোনো চুক্তিই এখন পর্যন্ত রক্ষা করে নি। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইসরাইলীদের সাথে চুক্তির ফলে ফিলিস্তিনীদের জন্যে আজ পর্যন্ত কোনো কিছুই অর্জিত হয় নি। তাই যথার্থ উপায় হলো অধিকৃত অঞ্চলে ফিলিস্তিনীদের সুদৃঢ় উত্থান এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে কুদস দিবসের মতো বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মুহূর্মুহু প্রতিবাদ জ্ঞাপন। এরকম প্রতিবাদের ফলে বিশ্বব্যাপী জনমত সৃষ্টি হবে এবং জনমতের চাপের মুখে ইসরাইলের অবস্থান আগের চেয়ে দুর্বল হবে।
তাদের এই ন্যক্কারজনক আগ্রাসনের প্রতি অকুণ্ঠ পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তা সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের মজলুম জনতা তাদের দেশের ভূখণ্ডকে স্বাধীন করার তথা ইহুদিবাদী দখলমুক্ত করার দৃঢ় ইচ্ছা বাস্তবায়নে বিন্দুমাত্রও হাল ছাড়ে নি। ইরানের জনগণ সেই বিপ্লব বিজয়ের আগে থেকেই ফিলিস্তিনের মজলুম জনগোষ্ঠীকে সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে।
এই পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের ঘটনা স্বৈরাচারী শাহ বিরোধী বিপ্লবী গণ-আন্দোলনের সময় এবং ইসলামী বিপ্লব বিজয় পরবর্তীকালে ইসলামী সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। ইরানের ইসলামী বিপ্লব বিজয় ছিল ইহুদিবাদী ইসরাইলের গালে মারাত্মক চপেটাঘাত। কেননা ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের ফলে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ইসরাইলী স্বার্থে মারাত্মক আঘাত আসে বলে সে সময় বলা হয়েছিল। বিপ্লব বিজয় পরবর্তীকালের ঘটনাপঞ্জী এর সত্যতা ও যথার্থতা প্রমাণ করেছে। কেননা ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনী (রহ) কেবল ইরানের জনগণকেই নয় বরং বিশ্বের সকল মুসলমান ও স্বাধীনচেতা মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনদের সাহায্যে এগিয়ে আসার।
ইরানে ইসলামী বিপ্লবের রূপকার মরহুম ইমাম খোমেনী (রহ) ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্যের বুকে বিষাক্ত টিউমার বা ক্যান্সার বলে অভিহিত করেছেন। ফিলিস্তিনের সংগ্রামী জনগণের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা এবং তাদের অধিকারের প্রতি সাহায্য-সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার জন্যে রমযানের শেষ শুক্রবারে বিচিত্র কর্মসূচি, অনুষ্ঠান ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনীদের প্রতি পরিপূর্ণ সমর্থন ঘোষণার আহ্বান জানান।
বিশ্ববাসী বিশেষ করে মুসলিম বিশ্ব তাঁর এই আহ্বানে ব্যাপক সাড়া দেয় এবং এই দিনকে কুদস দিবস হিসেবে পালন করতে থাকে। প্রায় তিন দশক হতে চললো বিশ্বের মুসলমানরা রমযান মাসের শেষ শুক্রবারে মিছিল, মিটিং, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনীদের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে আসছে। একই দিনে বিশ্বজুড়ে জনগণের এই ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি ফিলিস্তিনীদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জাগ্রত রাখা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতি বিশ্ব মুসলমানের ঘৃণা প্রকাশের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারী শক্তিগুলো ভালো করেই জানে যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কুদস দিবস পালনের ঘটনা প্রমাণ করে ফিলিস্তিনী জনগণের অধিকারের প্রতি বিশ্ব মুসলমানের সমর্থন আছে এবং ইসরাইলের প্রতি রয়েছে তাদের তীব্র ঘৃণা। বিশ্ব মুসলমানের এই সমর্থন ফিলিস্তিনীদের প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা আন্দোলনকে উজ্জীবিত ও প্রাণিত করে। তবে কোনো কোনো আরব এবং মুসলিম দেশ কুদস দিবস পালনের ব্যাপারে তেমন একটা সন্তুষ্ট নয়। এমনকি কোনো কোনো দেশ তো কুদস দিবসের কর্মসূচি পালনে বাধাই দেয়। মনে হয় কুদস দিবস পালনে বাধাদানকারী দেশগুলো এ বিষয়ে অসন্তুষ্ট যে,ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ফিলিস্তিনী জনগণের সমর্থনে বিশ্বব্যাপী এই গণসচেতনতা সৃষ্টিকারী ও গণজাগরণমূলক পদক্ষেপ বা আন্দোলনের ঝাণ্ডা উত্তোলনকারী। কোনো কোনো আরব দেশ মনে করে ফিলিস্তিন সমস্যাটি একান্তই আরবদের ব্যাপার। তাই ফিলিস্তিনী জনগণের সমর্থনে ইরানের এই উদ্যোগকে তারা মেনে নিচ্ছে না। কিন্তু এই দেশগুলো যদি সত্যি সত্যিই ফিলিস্তিনী জনগণের মুক্তির চিন্তা করতো তাহলে তাদের উচিত ছিল ফিলিস্তিনীদের সমর্থনে এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে যে-কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন,সেই পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো এবং সেইসব কর্মসূচিকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা করা।
অবশ্য কোনো কোনো আরব দেশের কুদস দিবস পালনের বিরোধিতার আরো একটি কারণ আছে তাহলো ইসরাইলের সাথে তাদের গোপন ও প্রকাশ্য যোগসাজশ। তারা মনে করে, ইসরাইলকে কিছুটা সুবিধা বা ছাড় দিলে দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিন ভূখণ্ড থেকে পিছু হটে যাবে এবং ফিলিস্তিনের ওপর তারা তাদের দমন অভিযান বন্ধ করে দেবে। কিন্তু ইসরাইলী আধিপত্যবাদীদের বিগত দিনের স্বভাব বা আচরণ প্রমাণ করেছে, তারা যে কেবল ফিলিস্তিনী জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারেই নারাজ তাই নয়,বরং তারা চায় ফিলিস্তিনে বিভিন্ন প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে বংশনিধন করতে। এছাড়াও ইসরাইলী নেতারা বিভিন্ন আরব দেশ এবং ফিলিস্তিনী স্বাধীনতাকামী দলগুলোর সাথে যেসব চুক্তি করেছে সেগুলোকে ঠাণ্ডামাথায় পদদলিত করেছে।
আসলে ইসরাইল আন্তর্জাতিক কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কাই করে না। অসলো চুক্তি অনুযায়ী ফিলিস্তিন সরকারের অস্তিত্বকেই ইসরাইল আজ পর্যন্ত স্বীকার করে নি। এমনকি যেসব ফিলিস্তিনী ইসরাইলীদের অত্যাচারে নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে অন্য কোনো দেশে শরণার্থী হিসেবে জীবনযাপন করছে,তাদেরকে পর্যন্ত তাদের স্বদেশ ভূমিতে প্রত্যাবর্তন করতে দিচ্ছে না। উল্টো তারা অধিকৃত ভূখণ্ডে আরো বেশি ইহুদিবাদী বসতি গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের নির্যাতনের ইতিহাসের কালো পাতাগুলো উল্টালে দেখা যাবে যে, আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে কখনোই দমানো যায় নি,বরং কুদস দিবস পালন কিংবা মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ চাপের মাধ্যমে তাদেরকে কিছুটা দমানো সম্ভব হয়েছে।
মাসজিদুল আকসা হলো মুসলমানদের পবিত্রতম স্থানগুলোর একটি। কারণ এটি ছিল মুসলমানদের প্রথম কেবলা। অথচ ইহুদিবাদী ইসরাইল বেশ কবছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে মাসজিদুল আকসাকে ধ্বংস করে দিয়ে ঐ ধ্বংসাবশেষের ওপর তাদের উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা করতে। সম্প্রতি মসজিদুল আকসা ধ্বংসের এ কার্যক্রম অনেক বেড়ে গেছে। পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করাসহ বিভিন্ন অজুহাতে তারা মাসজিদুল আকসার নীচে দিয়ে টানেল তৈরির জন্যে খননকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইহুদিবাদীরা কুদসকে তাদের রাজধানী মনে করে। তাই তারা সেখান থেকে যে-কোনো উপায়ে ফিলিস্তিনী মুসলমানদের বিতাড়িত করে ইহুদিবাদীদেরকে স্থলাভিষিক্ত করাতে চাচ্ছে। এরিমাঝে বায়তুল মুকাদ্দাসের সাংস্কৃতিক পরিচয় পরিবর্তনের লক্ষ্যে সেখানকার মুসলমানদের কবরগুলো ধ্বংস করতে শুরু করেছে । বর্ণবাদী প্রাচীর নির্মাণের কাজও দ্রুততার সাথে চলছে।
এতোসব ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম সত্ত্বেও কোনো কোনো আরব দেশ আধিপত্যবাদী ইসরাইলের সাথে সমঝোতাকে সম্ভব বলে মনে করে এবং চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে। অথচ বাস্তবতা হলো ইসরাইল, আরব কিংবা ফিলিস্তিনীদের সাথে কোনো চুক্তিই এখন পর্যন্ত রক্ষা করে নি। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইসরাইলীদের সাথে চুক্তির ফলে ফিলিস্তিনীদের জন্যে আজ পর্যন্ত কোনো কিছুই অর্জিত হয় নি। তাই যথার্থ উপায় হলো অধিকৃত অঞ্চলে ফিলিস্তিনীদের সুদৃঢ় উত্থান এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে কুদস দিবসের মতো বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মুহূর্মুহু প্রতিবাদ জ্ঞাপন। এরকম প্রতিবাদের ফলে বিশ্বব্যাপী জনমত সৃষ্টি হবে এবং জনমতের চাপের মুখে ইসরাইলের অবস্থান আগের চেয়ে দুর্বল হবে।
No comments