অনাবাদী জমিতে সূর্যমুখী চাষ ও সম্ভাবনা
মৌসুমের
শুরুতে অনাকাঙ্খিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বীজ ও বীজের মাত্রাতিরিক্ত দাম
থাকায় বরগুনার সূর্যমুখী চাষীদের অনেক বেগ পেতে হয়। তারপরেও সূর্যমুখী
চাষকে উজ্জ্বল সম্ভাবনা হিসেবে দেখছে বরগুনার কৃষি বিভাগসহ সূর্যমুখী
চাষীরা।
বছর কয়েক আগেও ডিসেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৫ মাসেরও বেশি সময় অনাবাদী হয়ে থাকতো বরগুনার অধিকাংশ ফসলী জমি। কিছু কিছু দু’ফসলী জমিতে খেসারী ও মুগ ডাল চাষ হলেও তা দিয়ে খুব একটা লাভের মুখ দেখা হত না কৃষকের। এখন সে সব জমিতেই সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হচ্ছেন বরগুনার অনেক কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১ হাজার ৫৩২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। তারমধ্যে বরগুনা সদরে ৭০০, আমতলীতে ২৩০, তালতলীতে ২৫০, বেতাগীতে ৫০০, বামনায় ৭০০ এবং পাথরঘাটা উপজেলায় ৩৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যমূখীর চাষ হয়েছে। এসব চাষীদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা দিয়ে আসছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
বরগুনা সদর উপজেলার ১০নং নলটোনা ইউনিয়নের কৃষক গাজি মাহমুদও আ: ছত্তার জানান, বছরের শুরুতে বৃষ্টি থাকায় অনেক কৃষকই এবার সুর্যমুখীর চাষ করতে পারেনি। তবে গতবারের চেয়েও এবারের ফলন ভাল দেখা যাচ্ছে। যদি কোন ঝড়-বাদল বা দুর্যোগ না হয় তবে আশা করছি অধিক আয় হবে। সুর্যমুখী চাষ আরও লাভজনক হত যদি বরগুনায় আধুনিক প্রযুক্তির একটি তেল শোধনাগার থাকতো।
বরগুনার একটি সামাজিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কোস্টাল এগ্রো বিজনেস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ আলম বলেন, বরগুনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে ১৯৭০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যে কয়টি বড় আকারের ঘূর্ণিঝড় হয়েছে তার বেশির ভাগই মে ও নভেম্বর মাসে আঘাত হেনেছে। নভেম্বর এর শেষ দিকে সূর্যমুখীর বীজ বপন শুরু হয় এবং মধ্য এপ্রিল থেকে ফসল কাটা হয়। তাই এই সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকির সম্ভাবনা কম থাকে। তাছাড়া যথাযথ প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে চাষ করলে এক’শ দিনের মধ্যে বীজ থেকে বীজ উৎপাদন সম্ভব। এবং প্রতি একর জমিতে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রকারভেদে লাভ হয় ১৪ থেকে ১৮ হাজার টাকা যা অন্য কোন ফসলে সম্ভব নয়। বীজে তেল যেমন পাওয়া যায় ভালো, তেমন তেলের মানও অন্য যেকোন তেলের চেয়ে ভাল।
মাসুদ আলম আরও জানান, সিডর ও আইলা পরবর্তী সময়ে উপকূলীয় এ অঞ্চলে যখন লবণাক্ততার প্রভাব বেড়ে যায় তখন সরকারি কৃষি বিভাগের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা অক্সফ্যাম এবং উন্নয়ন সংগঠন ব্র্যাক বিভিন্ন কর্মসূচীর অধীনে সূর্যমুখী চাষে স্থানীয় কৃষকদের নানাভাবে সহযোগীতা দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্থানীয়ভাবে কোস্টাল এগ্রো বিজনেস লিমিটেড বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সুর্যমুখী চাষীদের সাথে চুক্তিভিত্তিক উৎপাদনের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণসহ কারিগরী সহযোগীতা প্রদানের কাজ শুরু করে। পাশাপাশি কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে সুর্যমুখীর বীজ ক্রয় করে স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাত করে “সান অয়েল” নামে তা বাজারজাত করার কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশে ২১ লাখ টন তেল আমদানি করতে বছরে খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। সূর্যমুখী তেল এই আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে এনে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ সূর্যমুখী বীজে তেল থাকে শতকরা ৪০ ভাগ, যেখানে সয়াবিন তেলে থাকে মাত্র ১৬ ভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনার উপ-পরিচালক সাইনুর আজম খান বলেন, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি এবং বীজের দাম বেশি থাকায় এ বছর সূর্যমূখী চাষীদের বেশ খানিকটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। একটা সময় উন্নয়ন সংগঠন ব্র্যাকের পক্ষ থেকে সূর্যমূখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বিনামূল্যে বীজ, সার এবং নানাবিধ কৃষি সহায়তা দেয়া হত। এখন কৃষকরা নিজেরাই তা চাষ করছে। তবে বর্তমানে এ বীজের দাম প্রতি কেজি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা হওয়ায় তুলনামুলকভাবে অনেক কৃষকের পক্ষে তা কিনে চাষ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, সূর্যমুখীর বীজের সহজলভ্যতা এবং স্থানীয়ভাবে একটি আধুনিক তেল পরিশোধনাগারের ব্যবস্থা করা গেলে সূর্যমুখী চাষে চাষীরা আরও আগ্রহী হয়ে উঠতো।
বছর কয়েক আগেও ডিসেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৫ মাসেরও বেশি সময় অনাবাদী হয়ে থাকতো বরগুনার অধিকাংশ ফসলী জমি। কিছু কিছু দু’ফসলী জমিতে খেসারী ও মুগ ডাল চাষ হলেও তা দিয়ে খুব একটা লাভের মুখ দেখা হত না কৃষকের। এখন সে সব জমিতেই সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হচ্ছেন বরগুনার অনেক কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১ হাজার ৫৩২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। তারমধ্যে বরগুনা সদরে ৭০০, আমতলীতে ২৩০, তালতলীতে ২৫০, বেতাগীতে ৫০০, বামনায় ৭০০ এবং পাথরঘাটা উপজেলায় ৩৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যমূখীর চাষ হয়েছে। এসব চাষীদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা দিয়ে আসছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
বরগুনা সদর উপজেলার ১০নং নলটোনা ইউনিয়নের কৃষক গাজি মাহমুদও আ: ছত্তার জানান, বছরের শুরুতে বৃষ্টি থাকায় অনেক কৃষকই এবার সুর্যমুখীর চাষ করতে পারেনি। তবে গতবারের চেয়েও এবারের ফলন ভাল দেখা যাচ্ছে। যদি কোন ঝড়-বাদল বা দুর্যোগ না হয় তবে আশা করছি অধিক আয় হবে। সুর্যমুখী চাষ আরও লাভজনক হত যদি বরগুনায় আধুনিক প্রযুক্তির একটি তেল শোধনাগার থাকতো।
বরগুনার একটি সামাজিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কোস্টাল এগ্রো বিজনেস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ আলম বলেন, বরগুনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে ১৯৭০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যে কয়টি বড় আকারের ঘূর্ণিঝড় হয়েছে তার বেশির ভাগই মে ও নভেম্বর মাসে আঘাত হেনেছে। নভেম্বর এর শেষ দিকে সূর্যমুখীর বীজ বপন শুরু হয় এবং মধ্য এপ্রিল থেকে ফসল কাটা হয়। তাই এই সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকির সম্ভাবনা কম থাকে। তাছাড়া যথাযথ প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে চাষ করলে এক’শ দিনের মধ্যে বীজ থেকে বীজ উৎপাদন সম্ভব। এবং প্রতি একর জমিতে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রকারভেদে লাভ হয় ১৪ থেকে ১৮ হাজার টাকা যা অন্য কোন ফসলে সম্ভব নয়। বীজে তেল যেমন পাওয়া যায় ভালো, তেমন তেলের মানও অন্য যেকোন তেলের চেয়ে ভাল।
মাসুদ আলম আরও জানান, সিডর ও আইলা পরবর্তী সময়ে উপকূলীয় এ অঞ্চলে যখন লবণাক্ততার প্রভাব বেড়ে যায় তখন সরকারি কৃষি বিভাগের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা অক্সফ্যাম এবং উন্নয়ন সংগঠন ব্র্যাক বিভিন্ন কর্মসূচীর অধীনে সূর্যমুখী চাষে স্থানীয় কৃষকদের নানাভাবে সহযোগীতা দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্থানীয়ভাবে কোস্টাল এগ্রো বিজনেস লিমিটেড বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সুর্যমুখী চাষীদের সাথে চুক্তিভিত্তিক উৎপাদনের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণসহ কারিগরী সহযোগীতা প্রদানের কাজ শুরু করে। পাশাপাশি কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে সুর্যমুখীর বীজ ক্রয় করে স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাত করে “সান অয়েল” নামে তা বাজারজাত করার কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশে ২১ লাখ টন তেল আমদানি করতে বছরে খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। সূর্যমুখী তেল এই আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে এনে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ সূর্যমুখী বীজে তেল থাকে শতকরা ৪০ ভাগ, যেখানে সয়াবিন তেলে থাকে মাত্র ১৬ ভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনার উপ-পরিচালক সাইনুর আজম খান বলেন, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি এবং বীজের দাম বেশি থাকায় এ বছর সূর্যমূখী চাষীদের বেশ খানিকটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। একটা সময় উন্নয়ন সংগঠন ব্র্যাকের পক্ষ থেকে সূর্যমূখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বিনামূল্যে বীজ, সার এবং নানাবিধ কৃষি সহায়তা দেয়া হত। এখন কৃষকরা নিজেরাই তা চাষ করছে। তবে বর্তমানে এ বীজের দাম প্রতি কেজি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা হওয়ায় তুলনামুলকভাবে অনেক কৃষকের পক্ষে তা কিনে চাষ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, সূর্যমুখীর বীজের সহজলভ্যতা এবং স্থানীয়ভাবে একটি আধুনিক তেল পরিশোধনাগারের ব্যবস্থা করা গেলে সূর্যমুখী চাষে চাষীরা আরও আগ্রহী হয়ে উঠতো।
No comments