শিলাবৃষ্টিতে আম চাষিদের ক্ষতি ৩শ’ কোটি টাকা by মো. তারেক রহমান
চার
দফা শিলাবৃষ্টিতে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে সুমিষ্ট আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাই
নবাবগঞ্জের আম চাষিদের। চৈত্র ও বৈশাখ মাসের শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি
হয়েছে আমের। ক্ষতির পরিমাণ তিনশ’ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
এই অবস্থায় এবার চাঁপাই নবাবগঞ্জে আম উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন
সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী চাঁপাই নবাবগঞ্জে এবার প্রায় ২৯ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আম গাছের সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। জেলায় প্রায় শতাধিক জাতের আম চাষ হয়। এরমধ্যে সুস্বাদু গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাত, ল্যাংড়া, ফজলী, আম্রপলি, আশ্বিনা, ক্ষুদি খিরসা, বৃন্দাবনী, লক্ষণভোগ জাতের আমই বেশি চাষ হচ্ছে। দিন দিন আম চাষে জমির পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে চাঁপাই নবাবগঞ্জে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০০৭ সালে জেলার পাঁচ উপজেলায় আম চাষ হতো ২১ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে। ২০১৮তে এসে তা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫১০ হেক্টরে। ১০ বছরে আম চাষে জমি বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর। চলতি আম মৌসুমের শুরু থেকেই এবার প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে চাঁপাই নবাবগঞ্জে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে নির্ধারিত সময়ে অনেক পরে মুকুল আসে বাগানগুলোতে। শেষ পর্যন্ত বাগানগুলোতে ভালো মুকুল এলেও মহার আক্রমণসহ নানা কারণে অনেক বাগানেই পর্যাপ্ত গুটি আসেনি। ফলে মৌসুমের শুরুতেই একদফা বিপর্যয়ের মুখে পড়েন আম চাষিরা। এরপর চৈত্রমাসে হঠাৎ করে তিন দফা শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আমের। সবচেয়ে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে চৈত্রমাসের শেষ দিন বিকালে। ওইদিন চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার দুই পৌর এলাকাসহ আরো আট ইউনিয়নে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়। আম চাষিরা এই শিলাবৃষ্টিকে স্মরণকালের ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি বলে অভিহিত করেছেন।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্য মতে ওই দিনের শিলাবৃষ্টিতে চাঁপাই নবাবগঞ্জ ও শিবগঞ্জ পৌরসভাসহ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা, ঝিলিম ও গোবরাতলা এবং শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট, চককীর্তি, ধাইনগর, নয়ালাভাঙ্গা ও শ্যামপুর ইউনিয়নের দুই হাজার ৮শ’ হেক্টর জমির আমবাগান আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে ২০৫ হেক্টর জমির আম পুরোটাই বিনষ্ট হয়ে গেছে। এর আগের দু’দফা শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয় আমের। সর্বশেষ গত বুধবার রাতেও চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌর এলাকাসহ বেশ কিছু এলাকায় মাঝারি ধরনের শিলাবৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিন চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌর এলাকাসহ বালিয়াডাঙ্গা ও গোবরাতলা ইউনিয়নের রামজীবনপুর, নওদাপাড়া, গোরক্ষ নাথপুর, জামবাড়িয়া, চকঝগড়ু, নসিপুর, বালিয়াডাঙ্গা, শ্রীরামপুর, পালসা, গুণির মোড়সহ বিভিন্ন এলাকার আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে শিলাবৃষ্টির ধ্বংসযজ্ঞ। প্রতিটি বাগানে বিপুল পরিমাণ আম পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভেঙে পড়েছে আম গাছের বিপুল পরিমাণ ডালপাতা। এ ছাড়া এখনো গাছে ঝুলে অনেক আমে রয়েছে শিলার আঘাতের দাগ। ক্ষতি কমাতে বাগানে বাগানে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে দেখা গেছে আম চাষিদের। চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আরামবাগের প্রবীণ আম ব্যবসায়ী আলহাজ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ১৩ই এপ্রিলের শিলাবৃষ্টি ছিল এই এলাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি। তিনি বলেন তার ৬০ বছরের ব্যবসায়ী জীবনে এমন শিলাবৃষ্টি তিনি দেখেননি। আজাইপুরের আম চাষি রাকিব জানান, ১৩ই এপ্রিলের শিলাবৃষ্টিতে তার ১৫ লাখ টাকা আমের মধ্যে ১০ লাখ টাকার আম পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ ব্যবসায়ী জীবনে শিলাবৃষ্টিতে এমন ক্ষতি এর আগে আর কখনো হয়নি।
চাঁপাই নবাবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিওসার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ জানান, চার দফার শিলাবৃষ্টি ও মহাতে এরইমধ্যে চাঁপাই নবাবগঞ্জের ৩৫ শতাংশ আম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ তিনশ’ কোটি টাকার ওপরে। কোনো কোনো বাগান পুরোটাই আম শূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে এবার জেলায় আমের উৎপাদন কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত আম চাষিদের জন্য প্রণোদনা প্রদানের দাবি জানান তিনি। চাঁপাই নবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ফল বিজ্ঞানী ড. শরফ উদ্দিন জানান, শিলায় ক্ষতিগ্রস্ত আমবাগান রক্ষায় সতর্ক থাকতে হবে আম চাষিদের। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত বাগানগুলোই ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে, আতঙ্কিত হওয়ার খুব এটা কারণ নেই জানিয়ে চাঁপাই নবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা জানান, শিলায় ক্ষতি হলেও আমের উৎপাদনে বিপর্যয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি আশা প্রকাশ করেন বলেন, এবার জেলায় পৌনে তিন লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হতে পারে।
চাঁপাই নবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান জানান, বিষমুক্ত আম উৎপাদনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আম পাকাতে কেউ যেন কেমিকেল ব্যবহার করতে না পারে, সেদিকেও দৃষ্টি রাখবে স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী চাঁপাই নবাবগঞ্জে এবার প্রায় ২৯ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আম গাছের সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। জেলায় প্রায় শতাধিক জাতের আম চাষ হয়। এরমধ্যে সুস্বাদু গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাত, ল্যাংড়া, ফজলী, আম্রপলি, আশ্বিনা, ক্ষুদি খিরসা, বৃন্দাবনী, লক্ষণভোগ জাতের আমই বেশি চাষ হচ্ছে। দিন দিন আম চাষে জমির পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে চাঁপাই নবাবগঞ্জে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০০৭ সালে জেলার পাঁচ উপজেলায় আম চাষ হতো ২১ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে। ২০১৮তে এসে তা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫১০ হেক্টরে। ১০ বছরে আম চাষে জমি বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর। চলতি আম মৌসুমের শুরু থেকেই এবার প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে চাঁপাই নবাবগঞ্জে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে নির্ধারিত সময়ে অনেক পরে মুকুল আসে বাগানগুলোতে। শেষ পর্যন্ত বাগানগুলোতে ভালো মুকুল এলেও মহার আক্রমণসহ নানা কারণে অনেক বাগানেই পর্যাপ্ত গুটি আসেনি। ফলে মৌসুমের শুরুতেই একদফা বিপর্যয়ের মুখে পড়েন আম চাষিরা। এরপর চৈত্রমাসে হঠাৎ করে তিন দফা শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আমের। সবচেয়ে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে চৈত্রমাসের শেষ দিন বিকালে। ওইদিন চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার দুই পৌর এলাকাসহ আরো আট ইউনিয়নে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়। আম চাষিরা এই শিলাবৃষ্টিকে স্মরণকালের ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি বলে অভিহিত করেছেন।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্য মতে ওই দিনের শিলাবৃষ্টিতে চাঁপাই নবাবগঞ্জ ও শিবগঞ্জ পৌরসভাসহ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা, ঝিলিম ও গোবরাতলা এবং শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট, চককীর্তি, ধাইনগর, নয়ালাভাঙ্গা ও শ্যামপুর ইউনিয়নের দুই হাজার ৮শ’ হেক্টর জমির আমবাগান আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে ২০৫ হেক্টর জমির আম পুরোটাই বিনষ্ট হয়ে গেছে। এর আগের দু’দফা শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয় আমের। সর্বশেষ গত বুধবার রাতেও চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌর এলাকাসহ বেশ কিছু এলাকায় মাঝারি ধরনের শিলাবৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিন চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌর এলাকাসহ বালিয়াডাঙ্গা ও গোবরাতলা ইউনিয়নের রামজীবনপুর, নওদাপাড়া, গোরক্ষ নাথপুর, জামবাড়িয়া, চকঝগড়ু, নসিপুর, বালিয়াডাঙ্গা, শ্রীরামপুর, পালসা, গুণির মোড়সহ বিভিন্ন এলাকার আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে শিলাবৃষ্টির ধ্বংসযজ্ঞ। প্রতিটি বাগানে বিপুল পরিমাণ আম পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভেঙে পড়েছে আম গাছের বিপুল পরিমাণ ডালপাতা। এ ছাড়া এখনো গাছে ঝুলে অনেক আমে রয়েছে শিলার আঘাতের দাগ। ক্ষতি কমাতে বাগানে বাগানে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে দেখা গেছে আম চাষিদের। চাঁপাই নবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আরামবাগের প্রবীণ আম ব্যবসায়ী আলহাজ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ১৩ই এপ্রিলের শিলাবৃষ্টি ছিল এই এলাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি। তিনি বলেন তার ৬০ বছরের ব্যবসায়ী জীবনে এমন শিলাবৃষ্টি তিনি দেখেননি। আজাইপুরের আম চাষি রাকিব জানান, ১৩ই এপ্রিলের শিলাবৃষ্টিতে তার ১৫ লাখ টাকা আমের মধ্যে ১০ লাখ টাকার আম পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ ব্যবসায়ী জীবনে শিলাবৃষ্টিতে এমন ক্ষতি এর আগে আর কখনো হয়নি।
চাঁপাই নবাবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিওসার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ জানান, চার দফার শিলাবৃষ্টি ও মহাতে এরইমধ্যে চাঁপাই নবাবগঞ্জের ৩৫ শতাংশ আম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ তিনশ’ কোটি টাকার ওপরে। কোনো কোনো বাগান পুরোটাই আম শূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে এবার জেলায় আমের উৎপাদন কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত আম চাষিদের জন্য প্রণোদনা প্রদানের দাবি জানান তিনি। চাঁপাই নবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ফল বিজ্ঞানী ড. শরফ উদ্দিন জানান, শিলায় ক্ষতিগ্রস্ত আমবাগান রক্ষায় সতর্ক থাকতে হবে আম চাষিদের। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত বাগানগুলোই ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে, আতঙ্কিত হওয়ার খুব এটা কারণ নেই জানিয়ে চাঁপাই নবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা জানান, শিলায় ক্ষতি হলেও আমের উৎপাদনে বিপর্যয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি আশা প্রকাশ করেন বলেন, এবার জেলায় পৌনে তিন লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হতে পারে।
চাঁপাই নবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান জানান, বিষমুক্ত আম উৎপাদনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আম পাকাতে কেউ যেন কেমিকেল ব্যবহার করতে না পারে, সেদিকেও দৃষ্টি রাখবে স্থানীয় প্রশাসন।
No comments