কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ অব্যাহত থাকবে
সৌদি আরব বলেছে, কাতারের ওপর অবরোধ অব্যাহত থাকবে। সৌদি জোটের দেয়া ১৩ শর্ত দোহা প্রত্যাখ্যান করায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বুধবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানায় বিবিসি। বৈঠকে চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন, তাদের দাবির ব্যাপারে কাতারের নেতিবাচক জবাবে তারা মর্মাহত। কাতার পরিস্থিতির ব্যাপকতা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মত দেন চার দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরা। সন্ত্রাসে মদদ দেয়ার অভিযোগ তুলে কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপের এক মাস পর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে কায়রোতে বুধবার বৈঠক করেন চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এর আগে কাতারকে দেয়া ১৩টি শর্ত মেনে নেয়ার জন্য ১০ দিনেরে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। সোমবার এ সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে তা আরও দু'দিন বাড়ানো হয়। এ সময়সীমাও শেষ হয় বুধবার। এরপর পূর্ববর্তী ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার বৈঠকে বসে সৌদি আরব ও মিত্র দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠক শেষে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের সাংবাদিকদের বলেন, কাতারের বিরুদ্ধে যথাসময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং সেটা হবে আন্তর্জাতিক আইন মেনেই। তিনি বলেন, কাতার তার নীতি না বদলালে দোহার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধ বহাল থাকবে। কাতারকে দেয়া শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে কাতারের বিখ্যাত আলজাজিরা টিভি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়া, কাতারে অবস্থিত তুরস্কের একটি সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করা ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাস ইত্যাদি। পাশাপাশি মুসলিম ব্রাদারহুড ও ফিলিস্তিনের হামাসের সঙ্গে সম্পর্কছেদ করার শর্তও দেয়া হয়েছে। এসব শর্তের তালিকাকে 'অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য' অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে কাতার। কাতারকে দেয়া সৌদি জোটের শর্ত মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি। দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সৌদি জোটের দেয়া শর্তগুলো খুবই অবাস্তব ও মানা অসম্ভব। তিনি বলেন, 'এটা আসলে সন্ত্রাসবাদের বিষয় নয়। এটা বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ।' শেখ থানি বলেন, এ শর্ত মানা সম্ভব না হলেও সংলাপের মাধ্যমে এই সংকট সমাধান করতে চায় কাতার। সংকটের শুরু থেকেই কাতার এর সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কুয়েতের আমীর শেখ সাবাহ আল আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ দোহার সঙ্গে সৌদি জোটের বিরোধ নিরসনে অন্যতম মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করছেন। সোমবার ১৩ দফা শর্তের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান জানাতে কুয়েত যান কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশটির আমীর শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির লেখা চিঠিটি কুয়েতের আমীরের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। তবে কাতারের আমীরের চিঠিতে কী লেখা আছে তা এখনও জানানো হয়নি।
No comments