এয়ারলাইনসে তুঘলকি কাণ্ড: ভাড়া ১৪,০০০ ট্যাক্স ১৬,০০০ টাকা by আহমেদ জামাল
মালয়েশিয়া
এয়ারলাইনসের ঢাকা-কুয়ালালামপুর ভাড়া ১৪৩১৯ টাকা। আর ট্যাক্স ১৬৫৬৪ টাকা ।
অবাককরা এ কাণ্ড শুধু মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সেরই নয়। ২৬টি এয়ারলাইন্স
শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সারচার্জের নামে এ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে
সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। আর যাত্রীদের দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
ইতিমধ্যে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ট্যাক্সের
নামে এই সারচার্জ বন্ধে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু কোন এয়ারলাইন্সই তা আমলে
নিচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স টিকিট
মূল্যের ক্ষেত্রে ভাড়ার পরিমাণ কমিয়ে ফুয়েল সারচার্জের (ওয়াইকিউ/ওয়াইআর)
নামে ট্যাক্সের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো
ভাড়ার ক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৬০% ফুয়েল সারচার্জ দেখিয়ে সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি
দিচ্ছে। আর এভাবে ট্যাক্সের নামে প্রচুর অর্থ দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে বিদেশে।
এরই প্রেক্ষিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ফুয়েল
সারচার্জকে মূল ভাড়ার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রায় এক বছর আগে নির্দেশনা
দেয়। এ ব্যাপারে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল
এজেন্ট আটাবের একাধিক বৈঠক হওয়ার পরও সমাধান হয়নি। ২০১৪ সালের ১৬ই নভেম্বর
বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ ২৬ দেশি-বিদেশি
এয়ারলাইন্সকে এক চিঠির মাধ্যমে ফুয়েল সারচার্জকে মূল ভাড়ার অন্তর্ভুক্ত করা
এবং সে অনুযায়ী এজেন্সিগুলোকে কমিশন দেয়ার নির্দেশনা দেয়। বেসামরিক বিমান
কর্র্তৃপক্ষের পরিচালক (ফ্লাইট সেপটি অ্যান্ড রেগুলেশন্স) গ্রুপ ক্যাপ্টেন
এসএম নাজমুল আনাম স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় এয়ারলাইন্স পরিচালনাকারী
আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘আইএটিএ’-এর রেজুলেশন উল্লেখ করে বলা হয়, ফুয়েল সারসার্জ
কোনোভাবেই সরকারি কোনো ট্যাক্স বা ব্যাগেজ চার্জের পর্যায়ে পড়ে না। ফলে
ভাড়ায় উল্লিখিত ফুয়েল সারচার্জের ওপর ট্রাভেল এজেন্সিগুলো কমিশন পাওয়ার
অধিকার রাখে। নির্দেশনায় এজেন্সিগুলোকে সারচার্জসহ ভাড়ার ওপর কমিশন দেয়া
অথবা সারচার্জকে ভাড়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়। তবে এই
নির্দেশনা জারির এক বছর পার হলেও এয়ারলাইন্সগুলো তা বাস্তবায়ন করেনি।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ট্রান্সপোর্টেশন অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে চলমান এয়ারলাইন্সগুলো গড়ে ৪৫% হারে সারচার্জ দেখিয়ে ২০১৩ সালে ১৭০০ কোটি, ২০১৪ সালে ১৮৮৩ কোটি এবং চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১১৬ কোটি টাকার রাজস্ব এবং কমিশন ফাঁকি দিয়েছে। এই টাকায় ৭% হারে কমিশন ধরলে এজেন্সিগুলো যথাক্রমে ১১৯ কোটি, ১৩১ কোটি ও ৮২ কোটি টাকার কমিশন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অন্যদিকে সরকার এই ৩৬৯৯ কোটি টাকার বিপরীতে এক টাকা ট্যাক্সও পায়নি। কারণ ট্যাক্স হিসেবে দেখানো টাকার ওপর ট্যাক্স ধরা হয় না।
এদিকে আটাবের পক্ষ থেকে গত ২৪শে নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে দেশ থেকে ফুয়েল সারচার্জের নামে এয়ারটিকিট মূল্যের অর্ধেকেরও বেশি ট্যাক্স ছাড়াই বিদেশে টাকা পাচার হয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তাতে উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর-ঢাকা টিকিট মূল্যের ৬০% সারচার্জ হিসেবে ধরা হয়। মোট ভাড়া যেখানে ৩৬ হাজার ৪৫৬ টাকা সেখানে মূল ভাড়া ধরা হয় ১৪ হাজার ৩১৯ টাকা। আর ফুয়েল সারচার্জ ১৬ হাজার ৫৬৪ টাকা এবং সরকারি ট্যাক্স ফি ধরা হয় ৫৫৭৩ টাকা। কিন্তু কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকা-কুয়ালালামপুর-এর টিকিটের ক্ষেত্রে ভাড়ার মাত্র ১৬% সারচার্জ দেখানো হয়। মোট ভাড়া যেখানে ৩৪ হাজার ৫২ টাকা সেখানে মূল ভাড়া ধরা হয় ৩২ হাজার ১৬৯ টাকা, ফুয়েল সারচার্জ ধরা হয় মাত্র ৩১০ টাকা এবং সরকারি ট্যাক্স ও অন্যান্য ফি ধরা হয় ৫ হাজার ৫৭৩ টাকা। একইভাবে আমিরাত এয়ারলাইন্সের ঢাকা-নিউ ইয়র্ক-ঢাকা’র একটি টিকিটের মূল্যে দেখা যায় মোট ভাড়ার ৪১% ফুয়েল সারচার্জ ধরা হয়। এভাবে ফুয়েল সারচার্জের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা ট্যাক্স ছাড়াই বিদেশে চলে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে আটাবের সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ মাহবুব বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো দীর্ঘদিন ধরে ফুয়েল সারচার্জের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। এটা সমপূর্ণ অবৈধ। তিনি বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশের দিক থেকেই নেয়া হচ্ছে। একই এয়ারলাইন্স যখন অন্যদেশ থেকে টিকিটমূল্য নেয় তখন এই ফুয়েল সারচার্জ নিচ্ছে না। বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে এভাবে সারচার্জ নেয়াটা এক ধরনের প্রতারণা। তিনি বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এয়ারলাইন্সগুলোকে যে আদেশ দিয়েছে সেটা মানতে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে দেশের স্বার্থরক্ষা হচ্ছে না এবং ট্রাভেল এজেন্সিগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইড লাইনে বলা আছে এয়ার টিকিটের ট্যাক্স কোনোভাবে ভাড়ার বেশি হতে পারবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেক এয়ারলাইন্সের ভাড়ার চেয়ে ফুয়েল সারচার্জ বেশি। তাই দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্র্র্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ কার্যকর না হওয়া রহস্যজনক বলে মনে করেন এই আটাব নেতা।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ট্রান্সপোর্টেশন অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে চলমান এয়ারলাইন্সগুলো গড়ে ৪৫% হারে সারচার্জ দেখিয়ে ২০১৩ সালে ১৭০০ কোটি, ২০১৪ সালে ১৮৮৩ কোটি এবং চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১১৬ কোটি টাকার রাজস্ব এবং কমিশন ফাঁকি দিয়েছে। এই টাকায় ৭% হারে কমিশন ধরলে এজেন্সিগুলো যথাক্রমে ১১৯ কোটি, ১৩১ কোটি ও ৮২ কোটি টাকার কমিশন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অন্যদিকে সরকার এই ৩৬৯৯ কোটি টাকার বিপরীতে এক টাকা ট্যাক্সও পায়নি। কারণ ট্যাক্স হিসেবে দেখানো টাকার ওপর ট্যাক্স ধরা হয় না।
এদিকে আটাবের পক্ষ থেকে গত ২৪শে নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে দেশ থেকে ফুয়েল সারচার্জের নামে এয়ারটিকিট মূল্যের অর্ধেকেরও বেশি ট্যাক্স ছাড়াই বিদেশে টাকা পাচার হয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তাতে উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর-ঢাকা টিকিট মূল্যের ৬০% সারচার্জ হিসেবে ধরা হয়। মোট ভাড়া যেখানে ৩৬ হাজার ৪৫৬ টাকা সেখানে মূল ভাড়া ধরা হয় ১৪ হাজার ৩১৯ টাকা। আর ফুয়েল সারচার্জ ১৬ হাজার ৫৬৪ টাকা এবং সরকারি ট্যাক্স ফি ধরা হয় ৫৫৭৩ টাকা। কিন্তু কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকা-কুয়ালালামপুর-এর টিকিটের ক্ষেত্রে ভাড়ার মাত্র ১৬% সারচার্জ দেখানো হয়। মোট ভাড়া যেখানে ৩৪ হাজার ৫২ টাকা সেখানে মূল ভাড়া ধরা হয় ৩২ হাজার ১৬৯ টাকা, ফুয়েল সারচার্জ ধরা হয় মাত্র ৩১০ টাকা এবং সরকারি ট্যাক্স ও অন্যান্য ফি ধরা হয় ৫ হাজার ৫৭৩ টাকা। একইভাবে আমিরাত এয়ারলাইন্সের ঢাকা-নিউ ইয়র্ক-ঢাকা’র একটি টিকিটের মূল্যে দেখা যায় মোট ভাড়ার ৪১% ফুয়েল সারচার্জ ধরা হয়। এভাবে ফুয়েল সারচার্জের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা ট্যাক্স ছাড়াই বিদেশে চলে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে আটাবের সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ মাহবুব বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো দীর্ঘদিন ধরে ফুয়েল সারচার্জের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। এটা সমপূর্ণ অবৈধ। তিনি বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশের দিক থেকেই নেয়া হচ্ছে। একই এয়ারলাইন্স যখন অন্যদেশ থেকে টিকিটমূল্য নেয় তখন এই ফুয়েল সারচার্জ নিচ্ছে না। বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে এভাবে সারচার্জ নেয়াটা এক ধরনের প্রতারণা। তিনি বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এয়ারলাইন্সগুলোকে যে আদেশ দিয়েছে সেটা মানতে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে দেশের স্বার্থরক্ষা হচ্ছে না এবং ট্রাভেল এজেন্সিগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইড লাইনে বলা আছে এয়ার টিকিটের ট্যাক্স কোনোভাবে ভাড়ার বেশি হতে পারবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেক এয়ারলাইন্সের ভাড়ার চেয়ে ফুয়েল সারচার্জ বেশি। তাই দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্র্র্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ কার্যকর না হওয়া রহস্যজনক বলে মনে করেন এই আটাব নেতা।
No comments