আনোয়ারুজ্জামানের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন কয়েস লোদী
ওই ব্রিফিংয়ে তিনি ঘটনার জন্য সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীদের দায়ী করেন। একইসঙ্গে আনোয়ারুজ্জামান অভিযোগ করেন নগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর প্রকাশ্য মদদে তার বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। আনোয়ার দাবি করেন- তার বাসা ভাঙচুরের সময় কেয়ারটেকারকে মারধর করেছে। একইসঙ্গে তার বাসাসহ নেতাদের বাসার সকল মালামাল লুট করেছে। আনোয়ারুজ্জামান দাবি করেন- সিলেটে কারও বাড়িঘরে হামলার ঘটনা কোনো দিন ছিল না। হামলাকারী ছেলেরা ছাত্রদল পরিচয় দিয়ে এসে প্রকাশ্য হামলা ও ভাঙচুর করেছে। ৮ মাস পর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ন্যক্কারজনক বলে জানান তিনি। সিলেটে বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপি’র বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে সেটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন সিলেট বিএনপি’র একাধিক নেতা। তাদের মতে, সিলেটের রাজনৈতিক সম্প্রতিতে সবার আগে আঘাত করেছে আওয়ামী লীগ নেতারা। কয়েক বছর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আপ্তাব ও পাঙ্গাসের নেতৃত্বে মিছিল সহকারে গিয়ে নগরের হাউজিং এস্টেটে সিনিয়র জামায়াত নেতা ডা. সায়েফ ও হাফেজ আব্দুল হাই হারুনের বাসার ভেতরে পরিবারকে রেখে আগুন দিয়েছিল। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল মালেকের তেতলীস্থ বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পাশাপাশি ৪ঠা আগস্ট যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কয়েকশ’ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেছে। আওয়ামী লীগ নেতারা এসব কার্যকলাপ করেছিলেন বলে সিলেটের সম্প্রিতি বিনষ্ট হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যে দেয়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সিলেট নগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। নগরের হাউজিং এস্টেটে তার বাসা। তার বাসার অদূরে হাউজিং এস্টেটের বাসিন্দা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর বাসায়ও হামলা হয়েছে। গতকাল তিনি মানবজমিন-এর কাছে আনোয়ারুজ্জামানের দেয়া বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে বলেন, বাসাবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কূটকৌশল। এ কৌশল তারা অতীতেও প্রয়োগ করেছে। এখানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন জড়িত থাকার যে কথা বলা হচ্ছে সেটি ঠিক নয়। কারণ; ৫ই আগস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় মাঠে কাজ করছেন। সুতরাং ভাঙচুরের প্রশ্নই উঠে না। তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে দীর্ঘ দুঃশাসনের কারণে হাসিনা সরকার গণ-মানুষের ক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পরবর্তীতে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত এ সংগঠনের সদস্যরা ৫ই আগস্টের পর থেকে নানা প্রোপাগান্ডা ও পরিস্থিতি ঘোলাটে করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় সিলেটে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্য মিছিল সেটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হচ্ছে। ৭ মাস পর এসে ওই সংগঠনের কর্মীরা অযাচিত কাজ করছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিএনপিসহ ছাত্রদল এ ঘটনায় গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। নগরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন কীভাবে মিছিল করে অপতৎপরতা চালায় সেটি খতিয়ে দেখতে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীকে আহ্বান জানান।
মিছিল করায় ৮ জন গ্রেপ্তার: বুধবার ভোরে সিলেটে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ব্যানারে মিছিল করার দায়ে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে নগর পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্য রয়েছে- মদিনা মার্কেট এলাকার গার্ডেন গলি বাসার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম, পাঠানটুলা এলাকার আমির খান গলির বাসিন্দা সোহেল আহমদ সানী, সিলেটের টুকেরবাজার নালিয়া এলাকার রমনী মোন করের ছেলে রবিন কর, নাইওরপুল এলাকার বঙ্গবীর ব্লক-বি-৮২ এর বাসিন্দা ফাহিম আহমদ, শামীমাবাদ এলাকার রহমান ভিলার বাসিন্দা রাজন আহমদ রমজান, পাঠানটুলা এলাকার আমির খান গলির বাসিন্দা বশির খান লাল ও খাদিমপাড়া এলাকার সোয়েব আহমেদ। কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় তাদের গতকাল আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
No comments