বিশ্বভারতীতে লাঞ্চ না করেই ফিরলেন প্রেসিডেন্ট
অতিথি আসবেন জানা সত্ত্বেও হেলিপ্যাডে তাকে মর্যাদাপূর্ণ সংবর্ধনা না দেয়ার মতো ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তোলপাড় চলছে। ঘটনাটি মঙ্গলবারের। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর ভিসি সুশান্ত দত্তগুপ্ত ও বরিষ্ট আধিকারিকরা ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে ঘেরাও থাকায় মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদকে হেলিপ্যাডে স্বাগত জানাতে হাজির থাকতে পারেননি। এমনকি হাজির থাকতে পারেননি রেজিস্ট্রার-ও। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ দু’ঘণ্টার জন্য শান্তিনিকেতনে যাবেন এবং ভিসি’র সঙ্গে লাঞ্চ করবেন সেটা আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ছাত্রদের সঙ্গে বোঝাপড়া করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের দেরির কারণেই লজ্জায় পড়তে হয়েছে রাজ্যকে। এমনকি বিরক্ত প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এক ঘণ্টার মাথাতেই কোনরকম লাঞ্চ না করেই ফিরে এসেছিলেন কলকাতায়। বিশ্বভারতীর সাবেক ভিসি সুজিত কুমার বসু বলেন, বিশ্বভারতীতে যা ঘটেছে তা লজ্জাজনক। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টকে ন্যূনতম সৌজন্যও দেখাতে পারিনি। বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সভার সদস্য ও পাঠভবনের শিক্ষক কিশোর ভট্টাচার্য অবশ্য এজন্য ভিসিকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, আমরা ভিসিকে সমস্যা মিটিয়ে নিতে বলেছিলাম। শেষ পর্যন্ত যদিও ভিসি মীমাংসায় রাজি হয়েছেন, কিন্তু সেটা আগে করলে প্রবল অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হতো না। কয়েক দিন ধরেই বিশ্বভারতীতে কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়ার বিরুদ্ধে ছাত্ররা আন্দোলন করায় অশান্তি বিরাজ করছিল। ছাত্রদের অন্দোলনে অধ্যাপকদের একাংশ এবং অভিভাবকরা সমর্থন জানানোয় সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছিল। ভিসি ঘেরাও থাকায় এই প্রথম পৌষমেলার সূচনা হয়েছে ভিসি’র অনুপস্থিতিতেই। ছাতিমতলার প্রার্থনাতেও তিনি অংশ নিতে পারেননি। তবে ২০ ঘণ্টা ঘেরাওয়ের পর ভিসি মুক্ত হয়ে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেন হেলিপ্যাডে। সেখানে তিনি বিদায় জানান প্রেসিডেন্টকে। বিশ্বভারতীতে পৌনে এক ঘণ্টার অবস্থানকালে প্রেসিডেন্ট পৌষমেলার ধারে কাছে যাননি। তাকে উত্তরায়ণ কমপ্লেক্স ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সেখানে প্রেসিডেন্টের সৌজন্যে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অনুষদের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রছাত্রীরা। প্রেসিডেন্ট বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবন তৈরির উদ্যোগকে স্বাগত জানান। ঘণ্টা খানেকের কিছু বেশি সময় সেখানে থেকে তিনি হেলিকপ্টারেই কলকাতায় চলে আসেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার বিমানে ফিরে যান ঢাকায়। গত ১৮ই ডিসেম্বর ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছিলেন। প্রণববাবুর অতিথি হিসেবে রাইসিনা হিলসের প্রেসিডেন্ট হাউসের অতিথিশালাতেই তিনি ছিলেন। তার সঙ্গে এসেছিলেন তা স্ত্রী ও তিন পুত্র, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং বরিষ্ঠ সচিবরা।
No comments