‘আলঙ্কারিক প্রধানমন্ত্রী’ হওয়ার পথে নওয়াজ!
পাকিস্তানে সরকারবিরোধী আন্দোলনে এবার প্রকাশ্যেই চলে এসেছে সেনাবাহিনী। চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ। আন্দোলনকারী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান ও পাকিস্তান আওয়ামি তেহরিকের (পিএটি) প্রধান তাহির উল-কাদরির সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার বৈঠকও হয়েছে সেনাপ্রধানের। এর পরই ইমরান তাঁর অবস্থানে অনড় থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে নওয়াজ শরিফ না সরা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে। নওয়াজের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে পিটিআই ও পিএটি। তাদের অভিযোগ, গত বছর অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে। তাই নওয়াজকে সরতে হবে। চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে সামরিক বাহিনীর মধ্যস্থতার সমালোচনা করছেন কেউ কেউ। কেউ কেউ বলছেন, এটা ‘পরোক্ষ অভ্যুত্থান’।
পিটিআইয়ের প্রেসিডেন্ট জাভেদ হাশমি বলেন, সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতা ‘সব রাজনীতিকের জন্যই লজ্জাজনক’। পাকিস্তানের সামরিক বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, নওয়াজ এখন শুধু ‘আলঙ্কারিক প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে বাকি মেয়াদ টিকে থাকতে পারবেন। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে গত আট বছর যদি কিছু অর্জিত হয়েও থাকে, এখন তার সমাপ্তি ঘটল। নওয়াজের ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, সেনাবাহিনী চলমান সংকট সমাধানে শর্তসাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রীনকে সহায়তা দিতে রাজি হয়। অন্যতম শর্ত হলো: অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং ভারত-আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষানীতির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনীই নেবে। সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে সেনাদের গোলাগুলির কোনো বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবেন না। সার্বিক পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে, বর্তমান সংকট কাটিয়ে উঠতে নওয়াজ সবকিছু মেনেই নিয়েছেন। কয়েক দিন ধরে সেনাপ্রধান রাহিলের সঙ্গে তাঁর একাধিক বৈঠক সেটারই ইঙ্গিত দেয়। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কোনো কর্মকর্তা মনে করেন, সরকারে হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করতে সেনাবাহিনীই ইমরান ও কাদরিকে আন্দোলনে নামিয়েছে। তাঁদের দাবি, ইমরানের বিভিন্ন বক্তৃতা-বিৃবতিতে সে রকম ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
No comments