চীনা দূতের প্রস্তাবে খালেদার সায় by কাফি কামাল
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে চলমান সঙ্কট
নিরসনে মহাসচিব পর্যায়ে আলোচনার উদ্যোগ নিতে পারে কূটনীতিক মহল। সোমবার
রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধী নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে এমন
উদ্যোগের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন চীনা রাষ্ট্রদূত লি জুন।
কূটনীতিকদের
পক্ষ থেকে চীনা রাষ্ট্রদূতের এ উদ্যোগের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব
দেখিয়েছেন বিরোধী নেতা খালেদা জিয়াও। বৈঠকের সময় ও স্থান নিয়ে আলোচনা না
হলেও শিগগিরই এ উদ্যোগ আলোর মুখ দেখতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা
গেছে। বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বলেন,
‘আলোচনার এক পর্যায়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বর্তমান সঙ্কট সমাধানে দুই
দলের মহাসচিবের মধ্যে আলোচনার সম্ভাব্যতা নিয়ে কথা বলেন। জবাবে বিএনপি
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ইতিবাচক সায় দিয়ে বলেন, আলোচনার জন্য বিএনপি
প্রস্তুত। নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে সরকারের
পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি।’ বিএনপি সূত্রে জানা গেছে,
বৈঠকে লি জুন বিরোধী নেতাকে বলেন, বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে আগামী
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ দেখতে চায় চীন। চলমান সঙ্কটের
ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি দু’পক্ষের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে
মহাসচিব পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট উত্তরণের পরামর্শ দেন। বাংলাদেশের
ঐতিহাসিক বন্ধু এ দেশটির রাষ্ট্রদূতের পরামর্শ ও আগ্রহের প্রতি ইতিবাচক
সাড়া দেন বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া।
এর আগে গত ২১শে আগস্ট দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষ দুই নেতাকে মুখোমুখি সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন। বাংলাদেশে চীনা নৌবাহিনীর চিকিৎসা জাহাজ ‘পিস আর্ক’- এর সাতদিনের শুভেচ্ছা সফর উপলক্ষে চীনা দুতাবাসের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লি জুন বলেছিলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি জানি, যে কোন দেশের উন্নতির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কতটা জরুরি। দেশের প্রয়োজনে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগনকেই তাদের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হতে হবে। দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসানোর জন্য দুই দলের ‘বন্ধুদের’ মাধ্যমে তার চেষ্টার কথাও জানিয়েছিলেন সেদিন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনটি রাষ্ট্র প্রভাবশালী বিবেচনা করা হয়। এ রাষ্ট্র তিনটি হলোÑ আমেরিকা, চীন ও ভারত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন অনেকদিন থেকে। কিন্তু অনেকটাই নিরব ছিলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। চীনের এ নিরবতা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা ছিলÑ চীনারা কখনও অন্যদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মুখ খুলেন না। কিন্তু ২১শে আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে চীনা রাষ্ট্রদূতের সে বক্তব্য আলোচনার ঢেউ তুলেছিল রাজনৈতিক মহলে। পৌনে দুইমাস পর এবার মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠকের উদ্যোগের ব্যাপারে চীনা রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বিএনপি। এছাড়াও বৈঠকে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের ধারাবাহিক সহযোগীতার কথা উল্লেখ করে ভবিষ্যতে তা আরও বাড়ানোর কথা বলেন। এমন কি তিনি সিলেটের জনসভার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে বিএনপির আগ্রহ রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের প্রশংসা করে লি জুন আশা করেন আগামীতেও বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণায় এ ধারা বজায় রাখবে। চীন মনে করে উভয় পক্ষ তাদের সদিচ্ছার মাধ্যমে পরস্পরের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করবেন। আলোচনায় খালেদা জিয়া জানান, আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি সন্ত্রাস ও দুর্নীতির প্রতি কঠোর অবস্থান নেবে। প্রতিবেশি দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ, সমতাভিত্তিক ও সহযোগীতামূলক সম্পর্ক সৃষ্টি করবে। ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রসঙ্গে সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ব্যাপারে বিএনপির নীতিও তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে রাজনৈতিক সঙ্কট এড়াতে ওই সময়ে ক্ষমতাসীন বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের মধ্যে সংলাপ হলেও শেষ পর্যন্ত দুইপক্ষের অনড় মনোভাবের কারণে তা ব্যর্থ হয়েছিল।
এদিকে গতরাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আলব্রের্ট কনৎসে। রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় সূত্র জানায়, জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিরোধী নেতার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন আজ
নিয়মিত শারীরিক চেকআপের জন্য আজ রাতে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া। রাত ১১টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ৪৪৭ ফ্লাইটে তিনি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হবেন। চিকিৎসা শেষে আগামী ১৩ বা ১৪ই অক্টোবর তিনি দেশে ফিরতে পারেন। গতরাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে গত ২১শে আগস্ট দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষ দুই নেতাকে মুখোমুখি সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন। বাংলাদেশে চীনা নৌবাহিনীর চিকিৎসা জাহাজ ‘পিস আর্ক’- এর সাতদিনের শুভেচ্ছা সফর উপলক্ষে চীনা দুতাবাসের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লি জুন বলেছিলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি জানি, যে কোন দেশের উন্নতির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কতটা জরুরি। দেশের প্রয়োজনে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগনকেই তাদের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হতে হবে। দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসানোর জন্য দুই দলের ‘বন্ধুদের’ মাধ্যমে তার চেষ্টার কথাও জানিয়েছিলেন সেদিন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনটি রাষ্ট্র প্রভাবশালী বিবেচনা করা হয়। এ রাষ্ট্র তিনটি হলোÑ আমেরিকা, চীন ও ভারত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন অনেকদিন থেকে। কিন্তু অনেকটাই নিরব ছিলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। চীনের এ নিরবতা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা ছিলÑ চীনারা কখনও অন্যদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মুখ খুলেন না। কিন্তু ২১শে আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে চীনা রাষ্ট্রদূতের সে বক্তব্য আলোচনার ঢেউ তুলেছিল রাজনৈতিক মহলে। পৌনে দুইমাস পর এবার মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠকের উদ্যোগের ব্যাপারে চীনা রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বিএনপি। এছাড়াও বৈঠকে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের ধারাবাহিক সহযোগীতার কথা উল্লেখ করে ভবিষ্যতে তা আরও বাড়ানোর কথা বলেন। এমন কি তিনি সিলেটের জনসভার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে বিএনপির আগ্রহ রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের প্রশংসা করে লি জুন আশা করেন আগামীতেও বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণায় এ ধারা বজায় রাখবে। চীন মনে করে উভয় পক্ষ তাদের সদিচ্ছার মাধ্যমে পরস্পরের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করবেন। আলোচনায় খালেদা জিয়া জানান, আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি সন্ত্রাস ও দুর্নীতির প্রতি কঠোর অবস্থান নেবে। প্রতিবেশি দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ, সমতাভিত্তিক ও সহযোগীতামূলক সম্পর্ক সৃষ্টি করবে। ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রসঙ্গে সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ব্যাপারে বিএনপির নীতিও তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে রাজনৈতিক সঙ্কট এড়াতে ওই সময়ে ক্ষমতাসীন বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের মধ্যে সংলাপ হলেও শেষ পর্যন্ত দুইপক্ষের অনড় মনোভাবের কারণে তা ব্যর্থ হয়েছিল।
এদিকে গতরাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আলব্রের্ট কনৎসে। রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় সূত্র জানায়, জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিরোধী নেতার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন আজ
নিয়মিত শারীরিক চেকআপের জন্য আজ রাতে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া। রাত ১১টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ৪৪৭ ফ্লাইটে তিনি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হবেন। চিকিৎসা শেষে আগামী ১৩ বা ১৪ই অক্টোবর তিনি দেশে ফিরতে পারেন। গতরাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
No comments