একটি জীবন বাঁচাতে সাহায্য চাই
উজ্জ্বল, গাঁদা ফুলের নয়নাভিরাম সারির সামনে বসা এক সুশ্রী তরুণীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আমার কাছে মাস দুয়েক আগে বন্ধুত্বের অনুরোধ আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি যেদিন সেই অনুরোধ গ্রহণ করি, তখনো কল্পনাও করিনি ড. শাহনাজ পারভীন নামের এই নারী লড়ছেন ক্যানসারের মতো এক দুরন্ত ব্যাধির সঙ্গে। ফেসবুকে শাহনাজের সঙ্গে বন্ধু হওয়ার দু-এক দিনের মধ্যেই আমার হোম পেজে আসা তাঁর নিউজ ফিড বা স্ট্যাটাস থেকে জানতে পারি, শাহনাজ এ মুহূর্তে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে স্তন ক্যানসার রোগের চিকিৎসাধীন রোগী। এমন কঠিন এক লড়াইয়ের মধ্যে থেকেই দেখি, শাহনাজ প্রতিদিন ফেসবুকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও জীবন প্রেরণাদায়ী নানা স্ট্যাটাস বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেন। মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ড. তান ইয়েহ ইউয়েন ও ড. কেভিন তে-ওর তত্ত্বাবধানে এ বছরের ২৮ জুন তাঁর একটি র্যাডিক্যাল ম্যাসটেকটমি বা অস্ত্রোপচার সম্পূর্ণ হয়। ২৮ জুলাই থেকে তিনি কেমোথেরাপি নেওয়া শুরু করেছেন, যা ছয় মাস অবধি চলবে। কেমোথেরাপির পর তাঁকে দুই মাস রেডিওথেরাপি ও পাঁচ বছর হরমোনথেরাপি নিতে হবে। ইতিমধ্যে নিজের কর্মজীবনের সঞ্চিত ও তাঁর ভাইদের দেয় অর্থ মিলিয়ে ৫০ লাখ টাকার পুরোটাই ব্যয় হয়ে গেছে। অথচ চিকিৎসার জন্য আরও ৫০ লাখ টাকা তাঁর প্রয়োজন। সিঙ্গাপুরে ছোট ভাইয়ের বাসায় থেকে হাসপাতালে যাওয়া-আসার সুযোগ পেলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা চালানো তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। শাহনাজের মা মারা গেছেন ও অশীতিপর বাবা বৃদ্ধ বয়সের শেষ দিনগুলো গুনছেন।
ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের পূর্ণ অধ্যাপক ড. শাহনাজ পারভীন মাত্র ৪৪ বছরের জীবনেই শিক্ষা ও পেশাগত ক্ষেত্রে উজ্জ্বল মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। ২০০৫ সালে ৩৬ বছর বয়সে জার্মানির গিয়েশেনের জাস্টাস-লিয়েবিগ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি কৃষিবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এর আগে ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘এ গ্রেড’ নিয়ে মাস্টার্স এবং ১৯৯৪ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্সে প্রথম শ্রেণীতে পঞ্চম স্থান নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ফেলো নির্বাচিত হওয়া, ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে রিসার্চ মেথোডোলজিতে ফেলোশিপ পাওয়া, জার্মানিতে ডক্টরেট ফেলোশিপ নিয়ে ২০০১ থেকে ২০০৪ অবধি কাজ করা বা ২০১২-এর শেষ দুই মাস জার্মানিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করা তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের মুকুটে কিছু উজ্জ্বল পালক। দেশের কৃষিবিজ্ঞানী ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকসহ সমাজের সর্বস্তরের নাগরিকের কাছে তাই আবেদন—আসুন, এই তরুণ নারীবিজ্ঞানীর মরণজয়ী যুদ্ধে সর্বাত্মক সাহায্যের হাত আমরা সবাই বাড়িয়ে দিই। ড. শাহনাজ পারভীনকে সাহায্যের ঠিকানা: ড. শাহনাজ পারভীন, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, সুইফট কোড: পিইউবিএ.বিডি.ডিএইচ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, এসবি অ্যাকাউন্ট: ০১৪১১০১০৯৭৮৮৯।
অদিতি ফাল্গুনী, ঢাকা।
অদিতি ফাল্গুনী, ঢাকা।
No comments