মুসলিমদের ঘরে ঘরে আনন্দের হাওয়া: গাজায় ক্ষুধা, রক্ত, আর্তনাদ
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করেছে যে, এ কারণে ফিলিস্তিনে হাজার হাজার মানুষ ভয়াবহ অনাহারে ভুগছেন। পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। বিশ্বজুড়ে যখন মুসলিমের ঘরে ঘরে আনন্দের হাওয়া, তখন ফিলিস্তিনিরা কোনোমতে উদোরপুর্তি করার জন্য খাবার পাচ্ছে না। এরই মধ্যে ইসরাইলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০,২০৮ ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন ১,১৩,৯১০ জন। তবে গাজার মিডিয়া অফিসের হিসাবে নিহতের সংখ্যা ৬১,৭০০। এই সংখ্যা কয়েকগুন বাড়তে পারে। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে যে অসংখ্য গাজাবাসী আটকা পড়ে আছেন তাদেরকে এই সংখ্যার মধ্যে ধরা হয়নি। মুসলিম বিশ্বে না হলেও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে পালিত হয়েছে আল কুদস দিবস। পবিত্র রমজান মাষের শেষ শুক্রবারকে জুমাতুল বিদা ও আল কুদস দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এটি হলো জায়নবাদী ইভেন্টের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনপন্থি একটি ইভেন্ট। শিকাগোর বিক্ষোভ থেকে স্লোগান দেয়া হচ্ছিল- ‘বর্ণবাদ: দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য খারাপ, ফিলিস্তিনের জন্যও খারাপ’। বিক্ষোভের আশপাশে অনেক মানুষ ছিলেন। তারা বলেছেন, ভয়ে তারা অংশ নিতে পারেননি। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তার প্রশাসন এই বিক্ষোভ থেকে বহু মানুষকে গ্রেপ্তার করে দেশ থেকে বের করে দিতে পারে। এরই মধ্যে মাহমুদ খলিল নামে একজন সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে প্রশাসন। তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তবু যারা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করছিলেন।
ওদিকে মিশিগানের কংগ্রেসওমেন রাশিদা তায়েব সহ মিশিগান রাজ্যের মন্ত্রী এবং অন্য নির্বাচিত কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন অভিবাসন বন্দিশিবির থেকে মাহমুদ খলিলকে মুক্তি দিতে। এ মাসের শুরুর দিকে খলিলকে আটক করা হয়। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে যোগ দেয়ার অপরাধে তাকে আটক করা হয়। রাশিদা তায়েব সহ অন্যরা যৌথ স্বাক্ষরে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, খলিলকে আটক একই সঙ্গে তার অধিকার ও আত্মমর্যাদার জন্য অপমানজনক। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চাইলে এটা তার বিরুদ্ধে হুমকি। আইনকে লঙ্ঘন করে মাহমুদ খলিলকে টার্গেট করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে দায়ী করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, গাজায় ইসরাইলি সরকার সব রকম শাস্তি আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেয়ার কারণে খলিলকে টার্গেট করা হয়েছে এটা পরিষ্কার। তাকে টার্গেট করা হয়েছে কারণ, তিনি একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিনি। তাকে টার্গেট করা হয়েছে তার জাতীয়তার জন্য।
ওদিকে ইসরাইলের অব্যাহত হামলায় গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অবরোধ দেয়ার ফলে কোনো চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছাতে পারছে না সেখানে। হাসপাতালগুলো ভরে যাচ্ছে হতাহত মানুষে। নেই ওষুধ। জীবন বাঁচাতে রক্তের ভীষণ প্রয়োজন। আহতদেরকে কোনোমতে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রাণপণ লড়াই করছেন চিকিৎসকরা। ওদিকে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজ ইসরাইল বিরোধী অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর প্রেক্ষিতে, ওই সেন্টারটির একাডেমিক লিডারশিপ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
No comments