দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়, তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ লুটপাটের স্বাধীনতা: নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগের বিগত ১৫-১৬ বছরের শাসনামলে যাঁরা নানা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তাঁরা গত বছরের ৫ আগস্ট অবশ্যই নতুন করে স্বাধীন হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ ইসলাম বলেন, যাদের ব্যাংক ব্যালান্স অক্ষুণ্ন ছিল, যারা আপসমূলে বিরোধী রাজনীতি করেছে, তাদের কাছে হয়তো ৫ আগস্টকে স্বাধীনতা মনে হয় না। কারণ, তারা হয়তো সব সময় স্বাধীন ছিল। আগের আমলে ছিল, এখনো আছে। তাদের কাছে প্রথম স্বাধীনতাও গুরুত্বপূর্ণ না, দ্বিতীয় স্বাধীনতাও গুরুত্বপূর্ণ না; তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে লুটপাটের স্বাধীনতা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে এনসিপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম এ কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল দেখলাম যে প্রথম স্বাধীনতা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক। আমরা যারা গত ১৬ বছরে এই ঘটনাগুলোর ভিকটিম ছিলাম, আমাদের কাছে এটা অবশ্যই স্বাধীনতা। ৫ আগস্ট আমরা আসলে নতুন করে স্বাধীন হয়েছি। যারা এই গত ১৫-১৬ বছর নির্যাতিত হয়েছি, নিপীড়িত হয়েছি।’

২০২১ সালের ‘আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে’ শহীদদের তালিকা প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও বিচারের দাবিতে রাজধানীর বাংলামোটরের দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।

২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও সরকারের কাছে সেই হত্যার বিচার এবং যথাযথ মর্যাদা প্রত্যাশা করেন। সেই শহীদদের তালিকা ও সংখ্যা প্রকাশ করা এবং দোষীদের বিচার ও যথাযথ মূল্যায়নের বিষয়টি যেন সরকার আমলে নেয়, সেই দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা এখনো ভারতে অবস্থান করছেন উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ভারত গণহত্যাকারীদের নিজ দেশে আশ্রয় দিয়ে কোনো ভালো উদাহরণ তৈরি করছে না। বাংলাদেশে বিচার কার্যক্রম এগোচ্ছে এবং বিচার কার্যক্রম এগোলে কূটনৈতিকভাবে যাঁরা দোষী, যাঁরা অপরাধী, মামলার আসামি যাঁরা রয়েছেন, শেখ হাসিনাসহ তাঁদের ফেরত চাওয়া হলে ভারত সরকার সহযোগিতা করবে, এটা প্রত্যাশা থাকবে। আর এটার মাধ্যমেই বোঝা যাবে যে ভারত বাংলাদেশের প্রতি কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী।

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে দেশে হিন্দু নির্যাতনের গল্প প্রচার করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম।

জাতীয় নাগরিক পার্টিতে সমন্বয়হীনতা নেই: আখতার হোসেন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই বলে দাবি করেছেন দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তাঁর ভাষ্য, গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতৃত্বের সবাই এই দলের হাল ধরেছেন। এটি একক কোনো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জ যাওয়ার পথে নগরের মাহীগঞ্জ এলাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান আখতার হোসেন।

সম্প্রতি এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে নিজ এলাকা পঞ্চগড় ভ্রমণ ও এ বিষয়ে দলটির দুই নেতার পাল্টাপাল্টি ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে আখতার হোসেনের কাছে জানতে চান ওই সাংবাদিক। জবাবে আখতার হোসেন বলেন, ‘যদি নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে থাকেন, সেটি আমরা দলগতভাবে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করব। আমাদের দলের বিভিন্ন সদস্যবৃন্দের মধ্যকার কথাবার্তা নিয়ে অনেকের মধ্যে মনে হচ্ছে—দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতার জায়গা তৈরি হয়েছে। বিষয়টা এমন নয়।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন দলটির প্রস্তুতি নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠকেরা সারা দেশে কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছেন। তাঁরা মানুষের দেশের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। তাঁরা আশাবাদী অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনের নিবন্ধন পেতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি সেগুলো পূরণ করতে পারবে।

এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার ও বিচার কার্যক্রমের দৃশ্যমান অগ্রগতি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা আছে।’ তিনি বলেন, এই ফ্যাসিবাদী, এই একনায়কতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক সংবিধানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসনকাঠামো পরিচালিত হোক, এটা আর দেশের মানুষ চান না।

জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বর অথবা জুনের মধ্যে যে নির্বাচন করার কথা বলেছেন সেটি নিয়েও কথা বলেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সরকারের তরফে যদি সদিচ্ছা থাকে এই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করা সম্ভব। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যদি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান করে নির্বাচনের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব নির্বাচিত হওয়ার পর আজ প্রথমবারের মতো রংপুরে যান আখতার হোসেন। দুপুরে নগরের সাতমাথা থেকে জনসংযোগ শুরু করেন তিনি। পরে ভ্যানযোগে পীরগাছা ও কাউনিয়ার কয়েকটি জায়গায় জনসংযোগ শেষে টেপামধুপুর বাজারের কারবালা মাঠে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেওয়ার কথা আছে তাঁর।

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি নিয়ে এগোবে এনসিপি

ঈদের পরে আরও কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানের বিষয়ে কথাবার্তায় সতর্ক থাকবেন দলটির নেতারা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পক্ষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। কিন্তু নির্বাহী আদেশের বদলে তারা চায় বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে আপাতত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল চায় দলটি। এই দাবিতে তারা কর্মসূচি পালন করে যাবে।

বিচার চলাকালে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো যাতে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে না পারে, সেটিও চায় এনসিপি। তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের যেকোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে এনসিপির নেতারা সতর্ক থাকবেন। সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে যেসব প্রচার চালানো হচ্ছে, সেগুলো তাঁরা সমর্থন করবেন না। তবে বিরাজনীতিকরণ ও রাজনীতির সামরিকীকরণের যেকোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে অবস্থান থাকবে দলটির।

এনসিপির শীর্ষস্থানীয় তিনজন নেতার সঙ্গে আলাপ করে দলের এই রাজনৈতিক অবস্থানের বিষয়টি জানা গেছে।

জানতে চাইলে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে এনসিপি আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে বিচারিক প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন ধাপ পার করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দিকেই আমাদের এগোতে হবে।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতাদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি যাত্রা শুরু করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। দলটির নেতারা বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি করে আসছেন। তবে ২০ মার্চ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

পরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের নিন্দা জানায়। তবে দলীয়ভাবে এনসিপি নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বদলে নিবন্ধন বাতিলের দাবি সামনে আনার সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেছে। দলের সূত্র বলছে, তাঁরা চান না আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাক। আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ারও বিপক্ষে এনসিপির নেতারা। তাঁরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার হওয়ার পর বিচারিক প্রক্রিয়ায় দল নিষিদ্ধে সময় লাগবে। নিবন্ধন বাতিল করা হলে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে না।

এনসিপি নেতারা আরও মনে করেন, অধ্যাপক ইউনূস যেহেতু বলেছেন, আওয়ামী লীগকে অন্তর্বর্তী সরকারের নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই, সেহেতু সেই অবস্থান বদলের সুযোগ কম। তবে চাপ তৈরি করে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করানোর সুযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে তাঁদের অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। কারণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে দল নিষিদ্ধ না করার কথা বলা হয়েছে। এরপর তাঁরা চিন্তাভাবনা করে নিবন্ধন বাতিলের দাবিটিকে সামনে আনার সিদ্ধান্ত নেন। এই নেতা আরও মনে করেন, পরে আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে সেটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার সুযোগ থাকবে না।

আওয়ামী লীগ যাতে রাজনীতিতে সক্রিয় না হতে পারে এবং তাদের পুনর্বাসনের কোনো চেষ্টা যাতে কেউ করতে না পারে, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকবে এনসিপি। ২২ মার্চ পুরান ঢাকায় এক ইফতার অনুষ্ঠানে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের কোনো ধরনের পরিকল্পনা করা হলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

একই দিন বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে এক কর্মসূচি থেকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, তাঁরা নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চান না। দলটির দ্রুত বিচার দাবি করেন তিনি।

দলীয় সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর আরও কর্মসূচি দেবে এনসিপি।

সেনাবাহিনী নিয়ে কথা বলতে সতর্কতা

২০ মার্চ দিবাগত রাতে হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে বিতর্ক তৈরি করেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘রিফাইন্ড (পরিশুদ্ধ) আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। তাঁদের সেনানিবাসে ডেকে নিয়ে এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

হাসনাতের এই বক্তব্যের পর নানা আলোচনা তৈরি হয়। পরে সেনা সদর দপ্তর সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, হাসনাতের পোস্ট ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্টান্টবাজি বৈ অন্য কিছু নয়।’ ১১ মার্চ সেনাপ্রধানের সঙ্গে হাসনাত ও সারজিস আলমের (এনসিপির মুখ্য সংগঠক, উত্তরাঞ্চল) বৈঠকটি হয়েছিল। তবে তাঁদের ডেকে নেওয়া হয়নি; বরং হাসনাত ও সারজিসের আগ্রহেই বৈঠকটি হয়েছিল।

সেনা সদর ‘ডেকে নিয়ে যাওয়া এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয় নিয়ে তাদেরকে প্রস্তাব বা চাপ প্রয়োগের’ দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে আরও বলেছিল, হাসনাতের বক্তব্য ‘অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার।’

পরদিন সারজিস ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে লেখেন, ওই বৈঠক তাঁদের ডেকে নেওয়া হয়নি। তাঁরাই দেখা করতে চেয়েছিলেন। ‘চাপ দেওয়া হয়েছে’ বলেও তিনি মনে করেন না। হাসনাতের ফেসবুক পোস্টকে শিষ্টাচার–বিবর্জিত বলে উল্লেখ করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

দলের ভেতরে আলোচনার বদলে প্রকাশ্যে বক্তব্য এনসিপির নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করে। এরপর এনসিপির নীতিনির্ধারকেরা সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বিষয়ে একমত হন।

এনসিপির দুজন শীর্ষস্থানীয় নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সেনাপ্রধানকে অপসারণের যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, সেগুলো তাঁরা সমর্থন করবেন না। কারণ, এর ফলে দেশ আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে। তবে তাঁরা বার্তা দেবেন যে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোই নেবে, অন্য কেউ নয়।

২২ মার্চ শাহবাগে এক কর্মসূচিতে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের অবস্থান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়। সেনাবাহিনীকে যারা অপব্যবহার করতে চায়, আমাদের অবস্থান তাদের বিরুদ্ধে।’

ঈদের পরে কী কর্মসূচি

সেনা অভ্যুত্থানের গুজব, আওয়ামী লীগের ‘পুনর্বাসন’ ও আওয়ামী লীগের ঝটিকা কর্মসূচি প্রতিহত করতে ঈদের পরে মাঠপর্যায়ে কর্মসূচি রাখার চিন্তা রয়েছে এনসিপিতে। তবে কী কর্মসূচি পালিত হবে, তা ঠিক হয়নি।

দলের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের বিচার ও নিবন্ধন বাতিলের দাবিকে সামনে রেখে কর্মসূচিগুলো দেব।’

২০২১ সালের ‘আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের’ তালিকা প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও বিচারের দাবিতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়, রূপায়ণ টাওয়ার, বাংলামোটর
২০২১ সালের ‘আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের’ তালিকা প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও বিচারের দাবিতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়, রূপায়ণ টাওয়ার, বাংলামোটর। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

No comments

Powered by Blogger.