২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: বসতভিটা বিক্রি করে ঢাকায় জজ মিয়া
২১শে
আগস্ট গ্রেনেড হামলার বলি সেনবাগের জজ মিয়া বসতভিটা বিক্রি করে রাজধানীতে
পালিয়ে গেছে। সর্বহারা হয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পৈতৃক নিবাসের
বসতবাড়ির একমাত্র মাথা গোঁজার জায়গাটুকু হারিয়ে সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড়
ইউনিয়নের বীরকোট গ্রামের টেন্ডল বাড়ির জালাল আহমদ জজ মিয়া দীর্ঘ সময়
কারাভোগের পর বর্তমানে সর্বস্বান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় এক
বস্তিতে বসবাস করছেন। জজ মিয়া বাঁচার তাগিদে মা আর ছোট বোনকে নিয়ে
দেশটিভির গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে চাকরি করছিলেন। কিন্তু স্বল্প বেতনে তার
পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন কষ্টসাধ্য হওয়ায় চাকরিটি ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে
অন্যত্র চাকরির আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সারা দেশে জজ মিয়া আলোচিত হলেও এলাকায়
বা আত্মীয়স্বজনদের কেউই তার পরিবারের খোঁজখবর জানেন না। বীরকোট গ্রামের
মৃত আবদুর রশিদ ও জোবেদা খাতুনের ৪ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে জজ মিয়া দ্বিতীয়।
প্রায় একযুগ আগে তার বাবা মারা যাওয়ার পর সামান্য পুুঁজি নিয়ে ঢাকার
মতিঝিলে ফলের ব্যবসা করতেন জজ মিয়া।
২০০৪ সলের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হওয়ার প্রায় ৯ মাস পর ২০০৫ সালের ৯ই জুন সেনবাগ থানার এ এস আই কবির হোসেন বীরকোট গ্রামের রাজামিয়ার চা দোকান থেকে গ্রেপ্তার করে জজ মিয়াকে। পরে থানা থেকে জজ মিয়াকে সিআইডির এএসপি আব্দুর রশিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর কয়েক দিনের মাথায় জজ মিয়া ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকারোক্তির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। নানা নাটকীয়তার পর ২০০৮ সালের ১১ই জুন আদালতে সিআইডির দাখিল করা চার্জশিটে ২২ জনকে আসামি করা হলে অব্যাহতি দেয়া হয় জজ মিয়াকে। তখন জজ মিয়া মুক্তির বিষয়টি আটকে যায় ঢাকার সূত্রাপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা (১০৮, তাং- ২৭-১২-৯৮) মামলায়। এ মামলায় কোনোদিন জজ মিয়াকে আদালতে হাজির না করা হলেও ২০০৫ সালের ২রা নভেম্বর আদালত তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। দীর্ঘ তদন্তের পর সিআইডির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল জজ মিয়া ঐ হামলায় জড়িত। যদিও তখনই এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। এর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তদন্তে মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। মামলা ভিন্নখাতে চাপানোর নায়ক তৎকালীন জোট সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট সিআইডির তিন তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আব্দুর রশিদ, এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সরকার মামলা করে।
সেই সময়ে গ্রেনেড হামলা মামলায় ওই তিন জনকে আসামি করে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সঙ্গে অভিযুক্ত করা হয় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে জজ মিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দিলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার সময়ে তদন্ত শেষে সম্পূরক চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয় জজ মিয়াকে। দীর্ঘ ৪ বছর ২ মাস ২৫ দিন কারাভোগের পর ২০০৯ সালের ২০শে জুলাই কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান জজ মিয়া। কারামুক্তির পর ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে বীরকোট তার পৈতৃক বাড়িতে এসে আত্মীয়দের ঘরে উঠেন জজ মিয়া। কারণ, মামলার খরচ জোগাতে ভিটেমাটিসহ সবকিছুই হারাতে হয়েছে জজ মিয়ার পরিবারকে। মঙ্গলবার জজ মিয়ার পৈতৃক নিবাস বীরকোট গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বিক্রীত বসতঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করলে জানাযায় জজ মিয়া জেলে থাকা অবস্থায় তার পরিবার বসতবাড়ির জায়গাটুকু তার জেঠাতো ভাই রফিক উল্যার কাছে বিক্রি করে দেয়। সরজমিনে অনুসন্ধানে আরো কিছু জানতে চাইলে বেরিয়ে আসে জজ মিয়ার মামলার স্বাক্ষী বীর কোট গ্রামের সাবেক মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তাফা চৌধুরীর কথা। পরে গোলাম মোস্তফা চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি জানান, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়ানো জজ মিয়া ঘটনার দিন ও সময়ে তার বাড়ির পাশে বাবুলের দোকানে আমাদের সঙ্গে বসে চা খেতে খেতে টেলিভিশনের পর্দায় খবরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঘটে যাওয়া গ্রেনেড হামলার দৃশ্য দেখছিলেন।
কিন্তু গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে জড়িয়ে তার পরিবারটিকে সর্বস্বান্ত করা হয়েছে। এর পর কেউই তার খোঁজখবর রাখেননি। মুঠোফোনে আলাপ করলে জজ মিয়ার মা জোবেদা খাতুন জানান, আমার নিরপরাধ ছেলেটিকে ধরে নিয়ে সিআইডির লোকেরা কত নাটক সাজাইছে। আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় আটকিয়ে আমার পুরো পরিবারটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি জানান, আমি বাড়িঘর বিক্রি করে দিতে হয়েছে। জোট সরকারের আমলে সর্বস্বান্ত হয়ে বর্তমান সরকারের নিকট একটু মাথা গোঁজার জায়গার জন্য বহু আবেদন করেও না পেয়ে বর্তমানে বস্তিতে বসবাস করছেন বলে জানান জোবেদা খাতুন। ছেলের ভবিষ্যৎ পথচলা ও নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করলেন মা জোবেদা। এদিকে বহুল আলোচিত জজ মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপ করলে তিনি জানান, আমাকে নিয়ে সিআইডির নাটকের কথা এদেশের মানুষ জানেন। মিথ্যা মামলায় পড়ে আমার জীবন থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো চলে গেছে। তিনি বলেন আমি কখনো কোনো রাজনীতি বা দলাদলিতে ছিলাম না। টুকিটাকি ব্যবসা করে কোনোরকমে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতাম। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় তাদের লেলিয়ে দেয়া সিআইডি কর্মকর্তাদের সাজানো মামলায় আমাকে বলি করা হয়েছে। তাদের নাটকের বলি হয়ে দীর্ঘ সময় কারাভোগের পর বর্তমানে আমি নিঃস্ব। বর্তমান সরকারের কাছ থেকে একটু মাথাগোঁজার জায়গা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি চাকরি পেলে সংসার জীবনে পদার্পণ করে সুখী জীবনযাপন করতে পারব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জালাল আহমদ জজ মিয়া।
২০০৪ সলের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হওয়ার প্রায় ৯ মাস পর ২০০৫ সালের ৯ই জুন সেনবাগ থানার এ এস আই কবির হোসেন বীরকোট গ্রামের রাজামিয়ার চা দোকান থেকে গ্রেপ্তার করে জজ মিয়াকে। পরে থানা থেকে জজ মিয়াকে সিআইডির এএসপি আব্দুর রশিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর কয়েক দিনের মাথায় জজ মিয়া ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকারোক্তির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। নানা নাটকীয়তার পর ২০০৮ সালের ১১ই জুন আদালতে সিআইডির দাখিল করা চার্জশিটে ২২ জনকে আসামি করা হলে অব্যাহতি দেয়া হয় জজ মিয়াকে। তখন জজ মিয়া মুক্তির বিষয়টি আটকে যায় ঢাকার সূত্রাপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা (১০৮, তাং- ২৭-১২-৯৮) মামলায়। এ মামলায় কোনোদিন জজ মিয়াকে আদালতে হাজির না করা হলেও ২০০৫ সালের ২রা নভেম্বর আদালত তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। দীর্ঘ তদন্তের পর সিআইডির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল জজ মিয়া ঐ হামলায় জড়িত। যদিও তখনই এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। এর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তদন্তে মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। মামলা ভিন্নখাতে চাপানোর নায়ক তৎকালীন জোট সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট সিআইডির তিন তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আব্দুর রশিদ, এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সরকার মামলা করে।
সেই সময়ে গ্রেনেড হামলা মামলায় ওই তিন জনকে আসামি করে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সঙ্গে অভিযুক্ত করা হয় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে জজ মিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দিলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার সময়ে তদন্ত শেষে সম্পূরক চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয় জজ মিয়াকে। দীর্ঘ ৪ বছর ২ মাস ২৫ দিন কারাভোগের পর ২০০৯ সালের ২০শে জুলাই কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান জজ মিয়া। কারামুক্তির পর ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে বীরকোট তার পৈতৃক বাড়িতে এসে আত্মীয়দের ঘরে উঠেন জজ মিয়া। কারণ, মামলার খরচ জোগাতে ভিটেমাটিসহ সবকিছুই হারাতে হয়েছে জজ মিয়ার পরিবারকে। মঙ্গলবার জজ মিয়ার পৈতৃক নিবাস বীরকোট গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বিক্রীত বসতঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করলে জানাযায় জজ মিয়া জেলে থাকা অবস্থায় তার পরিবার বসতবাড়ির জায়গাটুকু তার জেঠাতো ভাই রফিক উল্যার কাছে বিক্রি করে দেয়। সরজমিনে অনুসন্ধানে আরো কিছু জানতে চাইলে বেরিয়ে আসে জজ মিয়ার মামলার স্বাক্ষী বীর কোট গ্রামের সাবেক মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তাফা চৌধুরীর কথা। পরে গোলাম মোস্তফা চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি জানান, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়ানো জজ মিয়া ঘটনার দিন ও সময়ে তার বাড়ির পাশে বাবুলের দোকানে আমাদের সঙ্গে বসে চা খেতে খেতে টেলিভিশনের পর্দায় খবরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঘটে যাওয়া গ্রেনেড হামলার দৃশ্য দেখছিলেন।
কিন্তু গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে জড়িয়ে তার পরিবারটিকে সর্বস্বান্ত করা হয়েছে। এর পর কেউই তার খোঁজখবর রাখেননি। মুঠোফোনে আলাপ করলে জজ মিয়ার মা জোবেদা খাতুন জানান, আমার নিরপরাধ ছেলেটিকে ধরে নিয়ে সিআইডির লোকেরা কত নাটক সাজাইছে। আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় আটকিয়ে আমার পুরো পরিবারটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি জানান, আমি বাড়িঘর বিক্রি করে দিতে হয়েছে। জোট সরকারের আমলে সর্বস্বান্ত হয়ে বর্তমান সরকারের নিকট একটু মাথা গোঁজার জায়গার জন্য বহু আবেদন করেও না পেয়ে বর্তমানে বস্তিতে বসবাস করছেন বলে জানান জোবেদা খাতুন। ছেলের ভবিষ্যৎ পথচলা ও নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করলেন মা জোবেদা। এদিকে বহুল আলোচিত জজ মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপ করলে তিনি জানান, আমাকে নিয়ে সিআইডির নাটকের কথা এদেশের মানুষ জানেন। মিথ্যা মামলায় পড়ে আমার জীবন থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো চলে গেছে। তিনি বলেন আমি কখনো কোনো রাজনীতি বা দলাদলিতে ছিলাম না। টুকিটাকি ব্যবসা করে কোনোরকমে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতাম। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় তাদের লেলিয়ে দেয়া সিআইডি কর্মকর্তাদের সাজানো মামলায় আমাকে বলি করা হয়েছে। তাদের নাটকের বলি হয়ে দীর্ঘ সময় কারাভোগের পর বর্তমানে আমি নিঃস্ব। বর্তমান সরকারের কাছ থেকে একটু মাথাগোঁজার জায়গা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি চাকরি পেলে সংসার জীবনে পদার্পণ করে সুখী জীবনযাপন করতে পারব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জালাল আহমদ জজ মিয়া।
No comments