কাঠগড়ায় গাভী ও বাছুর

হাস্যকর বিষয় নয়। কার্যত আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে একটি গাভী ও তার বাছুরকে। সরাসরি এই দুটি প্রাণিকে ট্রাকে করে উপস্থাপনা করা হয় আদালতে। আক্ষরিক অর্থে কাঠগড়ায় নয়, তবে আদালতকক্ষের বাইরে বেঁধে রাখা হয়। এরপর শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। না, গরু দুটির বিচার নয়। আইনি জটিলতা এর মালিকানা নিয়ে। দু’ব্যক্তি দাবি করেছেন এই গাভি ও বাছুরটির মালিক তারা।
এর মধ্যে একজন পুলিশের কনস্টেবল ওম প্রকাশ। অন্যজন শিক্ষক শ্যাম সিং। মালিকানা নিয়ে এই বিরোধ মিটাতেই প্রাণি দুটিকে হাজির করা হয় যৌধপুরের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মদন চৌধুরীর আদালতে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ওম প্রকাশ ও শ্যাম সিং দু’জনেই গাভি ও বাছুরটির মালিকানা দাবি করেন। এ নিয়ে শহরের মান্দোর পুলিশ স্টেশনে মামলা হয়েছে। এরই শুনানি চলছে। মামলা গিয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। সেই আদালতের বাইরে নিয়ে শুক্রবার বেঁধে রাখা হয় গাভী ও তার বাছুরকে। বেরিয়ে আসেন ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি মালিক দাবি করা দু’ব্যক্তিকে গরু দুটির পাশে দাঁড়াতে বলেন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন কার প্রতি গরু দুটির টান বেশি। আর এ থেকে তিনি প্রকৃত মালিক নির্ধারণ করে রায় দিতে পারেন।
তার নির্দেশ মতো ওম প্রকাশ ও শ্যাম সিং গিয়ে দাঁড়ান গরু দুটির পাশে। ম্যাজিস্ট্রেট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন কিছু সময়। তবে তিনি কোনো রায় দেন নি। তিনি শুধু পর্যবেক্ষণ করেছেন। এখন তিনি মালিকানা দাবি করা দুই ব্যক্তির বক্তব্য দেখবেন। ১৫ই এপ্রিল এ মামলার রায় দেয়ার কথা রয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে গরুর মালিকানা নিয়ে এই সঙ্কট। পুলিশ স্টেশনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা এ সমস্যা সমাধানে নিজস্ব পদ্ধতিতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনোই সমাধান হয় নি। আমরাও মালিকানা দাবি করা দুই ব্যক্তিকে গরুর পাশে দাঁড়াতে বলেছি। এরপর গাভীটিকে ছেড়ে দিয়েছি। দেখেছি সে বা তার বাছুরটি তাদের কারো প্রতিই কোনো আকর্ষণ দেখায় না। এরপরই গরু দুটিকে গরুর আশ্রয়ের একটি শিবিরে নিয়ে রাখা হয়, যা সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রিত। বলা হয়, মালিকানা দাবিদার দুইজনের একজন গোপনে ওই গাভীর দুধ দহন করে নিয়ে যান। এ অভিযোগে এমন স্থানে নিয়ে রাখা হয়।
এ অবস্থায় মামলাটি যায় আদালতে। কিন্তু মেট্রোপলিটন কোর্ট এমন বিচারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হয়। তখন সুপ্রিম কোর্ট মেট্রোপলিটন কোর্টের প্রতি নির্দেশনা দেয়। শেষ পর্যন্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি আমলে নেন।

No comments

Powered by Blogger.