‘সংকটময় মুহূর্তে বাংলাদেশ’ -এএফপিকে শহিদুল আলম
ভিন্নমতের
কারণে সবেমাত্র জেল থেকে বেরিয়েছেন ড. শহিদুল আলম। তাকে ভয়শূন্য সাংবাদিক
হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন। নিজের দেশ বাংলাদেশ যতই
নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তিনি আশঙ্কা করছেন, এই নির্বাচনে জালিয়াতি
হতে পারে। এক্ষেত্রে তিনি নিজেকে অবগুণ্ঠিত করে রাখেননি। দক্ষিণ এশিয়ার এ
দেশটিতে আগামী ৩০শে ডিসেম্বর ১০ কোটিরও বেশি ভোটার ভোট প্রয়োগ করবেন।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক চর্চার অন্যতম এটা।
শহিদুল আলম পুরস্কার বিজয়ী ফটো সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যে ভীতির পরিবেশ গ্রাস করছে, তা অনেককেই ব্যালট বাক্স থেকে দূরে রাখবে এবং চোখ রাঙানির মুখে থাকা স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম বাংলাদেশে সেলফ সেন্সরশিপে বেশি আগ্রহী হবে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে ঢাকা থেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি অবাধ ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করি। কিন্তু আমি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত, যেভাবে ভোট হতে যাচ্ছে, পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে, তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন হয়তো তেমন হবে না।
বিরোধীরা বলছে, তাদের প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন পূর্ববর্তী দমনপীড়নে তাদের সমর্থকদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণা শুরু থেকেই সহিংস হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক র্যালি।
টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভিন্ন মতাবলম্বীদের বরদাশ্ত করছেন না বলে অভিযোগ আছে। প্রায় এক দশক ক্ষমতায় থেকে তিনি ক্রমশ কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠছেন বলেও অভিযোগ আছে।
এ সপ্তাহে টাইম ম্যাগাজিন ‘পারসনস অব দ্য ইয়ার’-এ মুক্ত সংবাদের ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়নদের পাশাপাশি শহিদুল আলমের নামও উল্লেখ করেছে। তিনি অন্যায়ের শিকার হয়েছেন এটা নতুন নয়।
আগস্টে বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ গ্রাস করছিল বাংলাদেশকে। তখন ওই পরিস্থিতি সরকার যেভাবে মোকাবিলা করেছিল তার সমালোচনা করে একটি টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন শহিদুল আলম।
বাসা ঘেরাও করে মধ্যরাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তাকে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিবৃতি দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছরের জেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই ফটোগ্রাফারকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ বলে আখ্যায়িত করে তার নিন্দা জানিয়েছিলেন প্রকাশ্যে।
শহিদুল আলম বলেন, আমি মনে করি এমন অসুস্থতা সংক্রামক, আমার মতো অনেক মানুষ আছেন যারা আমার মতোই অসুস্থ। তাদের বেরিয়ে আসতে হবে এবং সত্য কথা বলতে হবে।
শহিদুল আলমকে আটক করায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তার মামলাটিকে নিবিড়ভাবে দেখা হয়।
শহিদুল আলমের বয়স ৬৩ বছর। তিনি বলেছেন, তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে এতটাই নির্মমভাবে প্রহার করা হয়েছে, তাকে আদালতে তোলার আগে পোশাক ধুয়ে নিতে হয়েছে। তিনি নিজের মনোবল প্রকাশ করতে অপেক্ষমাণ ক্যামেরাগুলোর দিকে বজ্রমুষ্টি উঁচু করে তোলেন।
জেলে থাকার কথা তুলে ধরে তিনি এএফপিকে বলেন, আমাকে আঘাত করা হয়েছে। চোখ বেঁধে ফেলা হয়েছিল। হ্যান্ডকাফ পরানো হয়েছিল। আমাকে ওয়াটারবোর্ডিংয়ের হুমকি দেয়া হয়েছিল।
তবে নিরাপত্তা হেফাজতে তাকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
‘মানুষকে কথা বলতে হবে’
১০৮ দিন পর তাকে জেল থেকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে নভেম্বরে।
নির্যাতন ও গুরুতর জেলের মুখে থাকা সত্ত্বেও শহিদুল আলম মাথা নত করতে অস্বীকার করেন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ একটি সংকটময় মুহূর্তে।
জালিয়াতির নির্বাচন অভিযোগে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। ফলে শেখ হাসিনা কোনো চ্যালেঞ্জ ছাড়াই নির্বাচিত হন।
তবে এবার প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও বাংলাদেশের দু’বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ছাড়াই। খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি। তার সমর্থকরা দাবি করেন, নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কাউকে এখনো মনোনয়ন দেয়নি বিরোধী দল। দলটির অন্য গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব রয়েছেন নির্বাসনে অথবা জেলে বন্দি।
শহিদুল আলম বলেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দলে দলে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এটা শুভ লক্ষণ নয়। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের খাঁটি মনোবাসনার ইঙ্গিত মেলে না এতে।
জটিল বিষয় হলো, বঙ্গোপসাগরের তীরে ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে প্রকৃতপক্ষে যা ঘটছে তা নিয়ে প্রতিশোধের আশঙ্কায় কথা বলছে না বাংলাদেশের মিডিয়া।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য কুখ্যাত আইন করে ভিন্ন মতাবলম্বীদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করছেন শেখ হাসিনা এমন অভিযোগ করছে অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। তারা আরো বলছে, এ কাজে তিনি পুলিশ ও আদালতকে ব্যবহার করছেন।
শহিদুল আলম বলেন, বাংলাদেশ ও এর গণতান্ত্রিক চ্যাম্পিয়নদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা ঘটছে এবং সামনের সপ্তাহগুলোতে যে লড়াই হবে সে দিক থেকে দৃষ্টি হারানো যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা একটি স্বাধীন দেশে বসবাস করি। তাহলে কেন মানুষ তার নিজের ইচ্ছেমতো কথা বলতে পারবে না? দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক এটা নিশ্চিত করা উচিত আমার ও প্রত্যেকের। তা যেন ঘটে তা নিশ্চিত করতে আমাদের সবার সবটুকু ব্যবহার করতে হবে।
শহিদুল আলম পুরস্কার বিজয়ী ফটো সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যে ভীতির পরিবেশ গ্রাস করছে, তা অনেককেই ব্যালট বাক্স থেকে দূরে রাখবে এবং চোখ রাঙানির মুখে থাকা স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম বাংলাদেশে সেলফ সেন্সরশিপে বেশি আগ্রহী হবে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে ঢাকা থেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি অবাধ ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করি। কিন্তু আমি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত, যেভাবে ভোট হতে যাচ্ছে, পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে, তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন হয়তো তেমন হবে না।
বিরোধীরা বলছে, তাদের প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন পূর্ববর্তী দমনপীড়নে তাদের সমর্থকদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণা শুরু থেকেই সহিংস হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক র্যালি।
টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভিন্ন মতাবলম্বীদের বরদাশ্ত করছেন না বলে অভিযোগ আছে। প্রায় এক দশক ক্ষমতায় থেকে তিনি ক্রমশ কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠছেন বলেও অভিযোগ আছে।
এ সপ্তাহে টাইম ম্যাগাজিন ‘পারসনস অব দ্য ইয়ার’-এ মুক্ত সংবাদের ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়নদের পাশাপাশি শহিদুল আলমের নামও উল্লেখ করেছে। তিনি অন্যায়ের শিকার হয়েছেন এটা নতুন নয়।
আগস্টে বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ গ্রাস করছিল বাংলাদেশকে। তখন ওই পরিস্থিতি সরকার যেভাবে মোকাবিলা করেছিল তার সমালোচনা করে একটি টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন শহিদুল আলম।
বাসা ঘেরাও করে মধ্যরাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তাকে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিবৃতি দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছরের জেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই ফটোগ্রাফারকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ বলে আখ্যায়িত করে তার নিন্দা জানিয়েছিলেন প্রকাশ্যে।
শহিদুল আলম বলেন, আমি মনে করি এমন অসুস্থতা সংক্রামক, আমার মতো অনেক মানুষ আছেন যারা আমার মতোই অসুস্থ। তাদের বেরিয়ে আসতে হবে এবং সত্য কথা বলতে হবে।
শহিদুল আলমকে আটক করায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তার মামলাটিকে নিবিড়ভাবে দেখা হয়।
শহিদুল আলমের বয়স ৬৩ বছর। তিনি বলেছেন, তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে এতটাই নির্মমভাবে প্রহার করা হয়েছে, তাকে আদালতে তোলার আগে পোশাক ধুয়ে নিতে হয়েছে। তিনি নিজের মনোবল প্রকাশ করতে অপেক্ষমাণ ক্যামেরাগুলোর দিকে বজ্রমুষ্টি উঁচু করে তোলেন।
জেলে থাকার কথা তুলে ধরে তিনি এএফপিকে বলেন, আমাকে আঘাত করা হয়েছে। চোখ বেঁধে ফেলা হয়েছিল। হ্যান্ডকাফ পরানো হয়েছিল। আমাকে ওয়াটারবোর্ডিংয়ের হুমকি দেয়া হয়েছিল।
তবে নিরাপত্তা হেফাজতে তাকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
‘মানুষকে কথা বলতে হবে’
১০৮ দিন পর তাকে জেল থেকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে নভেম্বরে।
নির্যাতন ও গুরুতর জেলের মুখে থাকা সত্ত্বেও শহিদুল আলম মাথা নত করতে অস্বীকার করেন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ একটি সংকটময় মুহূর্তে।
জালিয়াতির নির্বাচন অভিযোগে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। ফলে শেখ হাসিনা কোনো চ্যালেঞ্জ ছাড়াই নির্বাচিত হন।
তবে এবার প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও বাংলাদেশের দু’বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ছাড়াই। খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি। তার সমর্থকরা দাবি করেন, নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কাউকে এখনো মনোনয়ন দেয়নি বিরোধী দল। দলটির অন্য গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব রয়েছেন নির্বাসনে অথবা জেলে বন্দি।
শহিদুল আলম বলেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দলে দলে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এটা শুভ লক্ষণ নয়। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের খাঁটি মনোবাসনার ইঙ্গিত মেলে না এতে।
জটিল বিষয় হলো, বঙ্গোপসাগরের তীরে ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে প্রকৃতপক্ষে যা ঘটছে তা নিয়ে প্রতিশোধের আশঙ্কায় কথা বলছে না বাংলাদেশের মিডিয়া।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য কুখ্যাত আইন করে ভিন্ন মতাবলম্বীদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করছেন শেখ হাসিনা এমন অভিযোগ করছে অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। তারা আরো বলছে, এ কাজে তিনি পুলিশ ও আদালতকে ব্যবহার করছেন।
শহিদুল আলম বলেন, বাংলাদেশ ও এর গণতান্ত্রিক চ্যাম্পিয়নদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা ঘটছে এবং সামনের সপ্তাহগুলোতে যে লড়াই হবে সে দিক থেকে দৃষ্টি হারানো যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা একটি স্বাধীন দেশে বসবাস করি। তাহলে কেন মানুষ তার নিজের ইচ্ছেমতো কথা বলতে পারবে না? দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক এটা নিশ্চিত করা উচিত আমার ও প্রত্যেকের। তা যেন ঘটে তা নিশ্চিত করতে আমাদের সবার সবটুকু ব্যবহার করতে হবে।
No comments