সিদ্ধিরগঞ্জে এক অপহরণ চক্রের ভয়ংকর আস্তানা
টিনের ছাউনির একতলা বাড়ি। পেছনের অংশে ডোবা। সামনে খোলা মাঠ। এমনই এক নির্জন বাসায় দুই শিশুসহ চারজনকে খুন করেছে একটি অপহরণকারী চক্র। বাড়িটি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাসারী এলাকায় অবস্থিত। র্যাব-পুলিশের কাছে শিশু অপহরণকারী চক্রের সদস্য আর স্থানীয়ভাবে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত জাকির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মর্জিনা বেগম ওরফে বানেছার বাড়ি এটি।
এই বাসায় চারজনকে খুন করা হয়েছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এক আসামি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, বাড়িটি একটি সুসংগঠিত অপহরণ চক্রের আস্তানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে খুন হওয়া ওই চারজন হলো নাজমুল (৮), আকাশ (১৬), জাহিদ (১৮) ও জুয়েল (১৯)। নাজমুল ও আকাশ নামের দুই শিশুকে অপহরণের পর এখানে খুন করা হয়। আর অপহরণকারী চক্রের সদস্য জাহিদ ও জুয়েলকে এই বাসায় ডেকে এনে খুন করা হয় বলে অভিযোগ আছে। সম্প্রতি জাকির ও বানেছাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব-১১-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আলেপ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের জাকির হোসেন ও বানেছা শিশু অপহরণকারী চক্রের প্রধান হোতা। তাঁদের বাসাতেই ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে একে একে চারজনকে খুন করা হয়। খুন করার পর শিশু দুটির লাশ কাঁচপুর ব্রিজের নিচে ফেলে দেন অপহরণকারীরা। বাকি দুজনের লাশ ফেলা হয় ডেমরা এলাকায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নাসির উদ্দিন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, জাকির হোসেনের সিদ্ধিরগঞ্জের বাসায় খুন করার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি টিটু। গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দেন। নাসির উদ্দিন বলেন, দুই বছর আগে জাকির-বানেছা দম্পতি শিশু অপহরণ চক্র গড়ে তোলেন। এই চক্রের সদস্যরা শিশুদের অপহরণ করে এনে প্রথমে জাকিরের বাসায় রাখতেন। পরে এই বাসা থেকে দালালেরা শিশুদের কিনে নিয়ে যেতেন। বাসায় ফেলেই খুন করা হয়েছে বলে চক্রের সদস্য টিটু জানিয়েছেন।
খুনের প্রধান পরিকল্পনাকারী জাকির ও বানেছা। সরেজমিনে দেখা যায়, জাকির-বানেছার টিনশেডের একতলা বাড়িটি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। বাসায় ঢোকার প্রধান গেট বন্ধ। সামনের দেয়ালে জমির মালিকানা-সংক্রান্ত সাইনবোর্ড। তাতে লেখা, জামির মালিক বানেছা। স্বামীর নাম জাকির হোসেন। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানালেন, জাকির-বানেছা দম্পতি প্রায় ১২ বছর ধরে এই বাসায় ভাড়া ছিলেন। সাত মাস আগে ইউনুছ নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা দিয়ে বাড়িটি কিনেছেন। তা ছাড়া সম্প্রতি কাঁচপুরে ১০ কাঠা জমিও কিনেছেন এই দম্পতি। বাসাটির সামনে বাগমারা রোডের মজিবুর রহমান নামের এক চায়ের দোকানদার বললেন, বাসায় ঢোকার প্রধান গেট অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। জাকির-বানেছা এলাকায় বাবা (ইয়াবা) ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। বানেছা প্রকাশ্যে ইয়াবা বিক্রি করতেন। মাদক ব্যবসার কারণে বাইরের লোকজন ওই বাসায় যেত না। শিশুদের অপহরণ করে বাসায় এনে খুন করা হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না। স্থানীয় আরেক দোকানদার আবদুল খালেক বলেন, এলাকার সবাই এই দুজনকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে চেনে। ওই বাসায় কী হতো, এলাকার সাধারণ মানুষ কেউ জানে না। তবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত অনেক মাদক বিক্রেতার এখানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
জাকির-বানেছার বাসায় যেভাবে চার খুন
আদালত-পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে, জাকির-বানেছার নিমাইকাসারীর বাসায় চারজন খুনের কথা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে স্বীকার করেছেন চক্রের সদস্য টিটু। জবানবন্দিতে টিটু বলেছেন, জাকির হোসেনের সিদ্ধিরগঞ্জের বাড়িতে খুন করা হয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এই খুন করা হয়। র্যাবের এএসপি আলেপ বলেন, চক্রের সদস্য টিটু স্বীকার করেছেন, তিনি নিজে চার খুনেই জড়িত ছিলেন। অপহরণ করে দুই শিশুকে জাকির হোসেনের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর শিশু দুটিকে খুন করে লাশ কাঁচপুর ব্রিজ থেকে ফেলে দেন টিটু, দেলু ও জাকির। নাজমুল নামের শিশুটিকে রূপগঞ্জের ভুলতা থেকে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে নিয়ে আসা হয়। আর আকাশকে সিদ্ধিরগঞ্জের বাগমারা থেকে আনা হয়। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে একই দিন এ দুই শিশুকে খুন করে অপহরণকারী চক্র। খুনের পর সেদিন রাত ১১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের জাকিরের বাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয় দুজনের লাশ। গাড়ি চালিয়েছিলেন দেলু। গাড়িতে জাকিরও ছিলেন। ওই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, খুন হওয়া এ দুই শিশুর পুরো ঠিকানা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। পুরো ঠিকানা বের করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাহিদ ও জুয়েলের খুনের ব্যাপারে র্যাব কর্মকর্তা আলেপ বলেন, খুন হওয়া এই দুজনই জাকির হোসেনের দলের লোক ছিলেন।
জাকির-বানেছার বাসায় যেভাবে চার খুন
আদালত-পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে, জাকির-বানেছার নিমাইকাসারীর বাসায় চারজন খুনের কথা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে স্বীকার করেছেন চক্রের সদস্য টিটু। জবানবন্দিতে টিটু বলেছেন, জাকির হোসেনের সিদ্ধিরগঞ্জের বাড়িতে খুন করা হয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এই খুন করা হয়। র্যাবের এএসপি আলেপ বলেন, চক্রের সদস্য টিটু স্বীকার করেছেন, তিনি নিজে চার খুনেই জড়িত ছিলেন। অপহরণ করে দুই শিশুকে জাকির হোসেনের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর শিশু দুটিকে খুন করে লাশ কাঁচপুর ব্রিজ থেকে ফেলে দেন টিটু, দেলু ও জাকির। নাজমুল নামের শিশুটিকে রূপগঞ্জের ভুলতা থেকে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে নিয়ে আসা হয়। আর আকাশকে সিদ্ধিরগঞ্জের বাগমারা থেকে আনা হয়। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে একই দিন এ দুই শিশুকে খুন করে অপহরণকারী চক্র। খুনের পর সেদিন রাত ১১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের জাকিরের বাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয় দুজনের লাশ। গাড়ি চালিয়েছিলেন দেলু। গাড়িতে জাকিরও ছিলেন। ওই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, খুন হওয়া এ দুই শিশুর পুরো ঠিকানা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। পুরো ঠিকানা বের করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাহিদ ও জুয়েলের খুনের ব্যাপারে র্যাব কর্মকর্তা আলেপ বলেন, খুন হওয়া এই দুজনই জাকির হোসেনের দলের লোক ছিলেন।
গ্রেপ্তার টিটু বলেছেন, টাকাপয়সার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে জেরে জাহিদকে বাসায় ডেকে এনে খুন করা হয়। পরে তাঁর লাশ ফেলে দেওয়া হয় ডেমরার রাজধানী ফিলিং স্টেশনের পেছনে। ২ জানুয়ারি তাঁর লাশ উদ্ধার করে ডেমরা থানার পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, জাহিদের বাড়ি বরিশালে। তিনি জাকির হোসেনের হয়ে মাদক বিক্রি করতেন। মাদকের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে তাঁকে খুন করেছেন টিটু, জাকিরসহ অন্যরা। র্যাব কর্মকর্তা আলেপ বলেন, একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে দেলু ও জুয়েলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত ডিসেম্বরে জাকিরের বাসায় ডেকে এনে জুয়েলকে হত্যা করেন টিটু, দেলুসহ অন্যরা। জাকিরের বাসায় খুন করার পর লাশ ডেমরা এলাকায় পুঁতে রাখা হয়। গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাহিদ খুনের অভিযোগে ডেমরা থানার মামলায় জাকিরসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে ডেমরা থানার পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা থানার এসআই তহিদুল ইসলাম গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, জাহিদ খুনের মামলায় শিগগিরই জাকিরসহ ছয়জনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
শিশু বায়েজিদকে খুঁজতে গিয়েই সিদ্ধিরগঞ্জের আস্তানার সন্ধান
গত বছরের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জ বন্দর এলাকা থেকে ৮ বছর বয়সী বায়েজিদ নামের এক শিশুকে অপহরণ করে জাকির চক্র। পরে বায়েজিদকে খুঁজতে গিয়েই সিদ্ধিরগঞ্জের এই আস্তানার সন্ধান পায় র্যাব। র্যাব কর্মকর্তা আলেপ বলেন, বায়েজিদকে অপহরণ করার পর তার মা একদিন তাঁর কাছে আসেন। তিনি জানান, অপহরণকারীরা তাঁর মুঠোফোনে মুক্তিপণ চেয়েছেন। যে নম্বর থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল, সেই নম্বরে তিনি নিজে ১ হাজার ৫০০ টাকা পাঠান। পরে সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাসারী এলাকা থেকে ওই টাকা তোলেন টিটু নামের এক অপহরণকারী। পরে টিটুকে কমলাপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। টিটুই সিদ্ধিরগঞ্জের এই আস্তানার সন্ধান দেন।
ফোন করে পরিবারগুলোর কাছে টাকা চান টিটু
ইমন শিকদার (১৩)। তার বাবার নাম বাবুল শিকদার। বাড়ি বরিশাল। সে বরিশালের বিমানবন্দর এলাকার একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। গত ২০ নভেম্বর বরিশাল থেকে ঢাকায় আসার জন্য লঞ্চে ওঠে। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ মেলেনি। শিশু ইমনের নানা আবদুল মান্নান খান প্রথম আলোকে বলেন, টিটু নামের একজন ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছেন, কিন্তু টাকা দিতে পারেননি। একই কথা জানালেন রাজধানীর মানিকনগরের বাসিন্দা সানির বাবা সাইদুল। ২২ ডিসেম্বর তাঁর ছয় বছরের ছেলে সানি অপহৃত হয়। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ চেয়েছেন। এ দুটি শিশুর মতো আরও কয়েকটি শিশুকে অপহরণ করে বিদেশে পাচার করার কথা স্বীকার করেছেন টিটু ও অন্যরা। গ্রেপ্তার হওয়া জেসমিন ৭০-৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে চক্রের সদস্য শাহাবুদ্দিন ও মনিরের কাছে সাতটি শিশু বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন। শাহাবুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করলে অনেক শিশুর সন্ধান মিলবে।
অপহরণের পর মুক্তিপণ
রাজধানীর মধ্য বাড্ডা থেকে রাকিব হোসেন ইমরানকে (৮) অপহরণ করা হয়। তার বাবা আবদুল জলিল হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণকারীরা মুক্তিপণ নিয়ে তাঁর ছেলেকে ৪ জানুয়ারি ছেড়ে দেয়। জুবায়ের ইসলাম (১৪) নামের এক কিশোরকে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণ নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয় বলে জানান তার বাবা রকিবুল ইসলাম। নাজমুল (১০) নামের শিশুটিকে সাভার থেকে অপহরণ করার পর মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয় এই অপহরণকারী চক্র। মুক্তিপণ দিয়ে আরও সাতটি শিশু মুক্তি পেয়েছে বলে অভিভাবকেরা র্যা বকে জানিয়েছেন। অপহরণ ও খুনের ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাব-১১-এর সিইও লে. কর্নেল কামরুল হাসান বলেন, এই চক্র ভয়ংকর। এরা শিশুদের খুন করছে, বিদেশে পাচার করছে।
শিশু বায়েজিদকে খুঁজতে গিয়েই সিদ্ধিরগঞ্জের আস্তানার সন্ধান
গত বছরের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জ বন্দর এলাকা থেকে ৮ বছর বয়সী বায়েজিদ নামের এক শিশুকে অপহরণ করে জাকির চক্র। পরে বায়েজিদকে খুঁজতে গিয়েই সিদ্ধিরগঞ্জের এই আস্তানার সন্ধান পায় র্যাব। র্যাব কর্মকর্তা আলেপ বলেন, বায়েজিদকে অপহরণ করার পর তার মা একদিন তাঁর কাছে আসেন। তিনি জানান, অপহরণকারীরা তাঁর মুঠোফোনে মুক্তিপণ চেয়েছেন। যে নম্বর থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল, সেই নম্বরে তিনি নিজে ১ হাজার ৫০০ টাকা পাঠান। পরে সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাসারী এলাকা থেকে ওই টাকা তোলেন টিটু নামের এক অপহরণকারী। পরে টিটুকে কমলাপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। টিটুই সিদ্ধিরগঞ্জের এই আস্তানার সন্ধান দেন।
ফোন করে পরিবারগুলোর কাছে টাকা চান টিটু
ইমন শিকদার (১৩)। তার বাবার নাম বাবুল শিকদার। বাড়ি বরিশাল। সে বরিশালের বিমানবন্দর এলাকার একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। গত ২০ নভেম্বর বরিশাল থেকে ঢাকায় আসার জন্য লঞ্চে ওঠে। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ মেলেনি। শিশু ইমনের নানা আবদুল মান্নান খান প্রথম আলোকে বলেন, টিটু নামের একজন ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছেন, কিন্তু টাকা দিতে পারেননি। একই কথা জানালেন রাজধানীর মানিকনগরের বাসিন্দা সানির বাবা সাইদুল। ২২ ডিসেম্বর তাঁর ছয় বছরের ছেলে সানি অপহৃত হয়। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ চেয়েছেন। এ দুটি শিশুর মতো আরও কয়েকটি শিশুকে অপহরণ করে বিদেশে পাচার করার কথা স্বীকার করেছেন টিটু ও অন্যরা। গ্রেপ্তার হওয়া জেসমিন ৭০-৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে চক্রের সদস্য শাহাবুদ্দিন ও মনিরের কাছে সাতটি শিশু বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন। শাহাবুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করলে অনেক শিশুর সন্ধান মিলবে।
অপহরণের পর মুক্তিপণ
রাজধানীর মধ্য বাড্ডা থেকে রাকিব হোসেন ইমরানকে (৮) অপহরণ করা হয়। তার বাবা আবদুল জলিল হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণকারীরা মুক্তিপণ নিয়ে তাঁর ছেলেকে ৪ জানুয়ারি ছেড়ে দেয়। জুবায়ের ইসলাম (১৪) নামের এক কিশোরকে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণ নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয় বলে জানান তার বাবা রকিবুল ইসলাম। নাজমুল (১০) নামের শিশুটিকে সাভার থেকে অপহরণ করার পর মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয় এই অপহরণকারী চক্র। মুক্তিপণ দিয়ে আরও সাতটি শিশু মুক্তি পেয়েছে বলে অভিভাবকেরা র্যা বকে জানিয়েছেন। অপহরণ ও খুনের ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাব-১১-এর সিইও লে. কর্নেল কামরুল হাসান বলেন, এই চক্র ভয়ংকর। এরা শিশুদের খুন করছে, বিদেশে পাচার করছে।
No comments