তামিলনাড়ুর বিধানসভায় ভাঙচুর, স্পিকারকে হেনস্তা
শেষ পর্যন্ত আস্থা ভোটে জয় হলো তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এরাপড্ডি পালানিসামির। তবে তার আগে দিনভর তাণ্ডব চলল বিধানসভায়। স্পিকারকে হেনস্তা হতে হলো। ছিঁড়ে দেওয়া হলো সভার কাগজপত্র। ভাঙা হলো আসবাব। দুবার মুলতবি হলো সভা। শেষ পর্যন্ত বিরোধীশূন্য বিধানসভায় নেওয়া হলো আস্থা ভোট। ১২২ জন বিধায়কের ধ্বনি ভোটে জিতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী পালানিসামি। তামিলনাড়ুর ইতিহাসে গত ২৯ বছরে এটাই প্রথম আস্থা ভোট। গতকাল শনিবার বেলা তিনটায় তৃতীয়বারের জন্য সভার কাজ শুরু হলে স্পিকার ডিএমকের ৮৮ ও মুসলিম লিগের একজন সদস্যকে সভা থেকে বের করে দেন। প্রতিবাদে কংগ্রেসের সদস্যরাও ওয়াকআউট করেন। আস্থা ভোটের বিরোধিতা করেন অস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী পনিরসেলভামসহ ১১ জন। গোলমালের শুরু বেলা ১১টায়। স্পিকার পি ধনপাল জানিয়ে দেন, আস্থা ভোট নেওয়া হবে ডিভিশনের সাহায্যে। স্পিকারের সিদ্ধান্ত শোনামাত্রই বিরোধী দল ডিএমকে ও পনিরসেলভামের অনুগামীরা গোপন ব্যালটের দাবি জানাতে থাকেন।
শুরু হয় গোলমাল। ডিএমকের সদস্যরা স্পিকারকে ঘিরে ফেলেন। তাঁর টেবিল থেকে উপড়ে ফেলা হয় মাইক্রোফোন। টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলা হয় সভার কাগজপত্র। ভাঙা হয় চেয়ার। স্পিকারকে জবরদস্তি তুলে দেওয়া হয় তাঁর আসন থেকে। ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। তাঁর জামা ছিঁড়ে যায়। মার্শালরা কোনো রকমে আগলে তাঁকে সভার বাইরে নিয়ে যান। সভা মুলতবি হয়ে যায় বেলা একটা পর্যন্ত। দুপুরে সভা বসলে স্পিকার প্রথমেই জানান কীভাবে তাঁকে হেনস্তা হতে হয়েছে। ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে জামা। এরপরই তিনি বিরোধী সদস্যদের সভা থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং পালানিসামিকে আস্থা ভোটের প্রস্তাব পেশ করতে বলেন। স্পিকারের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন ডিএমকের সদস্যরা। শুরু হয়ে যায় মার্শালদের সঙ্গে বিধায়কদের ধাক্কাধাক্কি। এর ফলে সভা ফের মুলতবি করে দেওয়া হয় বেলা তিনটা পর্যন্ত।
তিনটায় সভা শুরু হলে বিরোধীশূন্য বিধানসভায় পালানিসামি আস্থা প্রস্তাব পেশ করেন। তার আগে পনিরসেলভাম ও তাঁর অনুগামীরা ভোট পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তাঁদের দাবি, বিধায়কদের বন্দী করে রাখা হয়েছিল। হোটেল থেকে সোজা তাঁদের বিধানসভায় নিয়ে আসা হয়েছে। স্পিকার সেই দাবি নাকচ করে দেন। নাকচ করা হয় গোপন ব্যালটের দাবিও। স্পিকার জানান, কীভাবে আস্থা ভোট নেওয়া হবে তা ঠিক করার দায়িত্ব তাঁরই। পালানিসামি আস্থা ভোটে জিতে যাওয়ায় তামিলনাড়ুতে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল, আপাতত তার অবসান হলো। জেলে যেতে হলেও দলে যে তাঁর অধিকার নিরঙ্কুশ, শশীকলা তা প্রমাণ করলেন।
No comments