দুর্ভোগে সাড়ে তিন লাখ মানুষ
নাটোরের লালপুর-বনপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। লালপুরের চকনাজিরপুর এলাকা থেকে গত শুক্রবার তোলা ছবি। প্রথম আলো |
নাটোরের বনপাড়া-লালপুর সড়কের ১১ কিলোমিটার অংশে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় পিচ উঠে গেছে। এ সড়ক দিয়ে লালপুর উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ জেলা শহরে চলাচল করে। নাটোর-বনপাড়া লালপুর সড়ক ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই সড়কের ১৯ কিলোমিটার নাটোর-ঢাকা মহাসড়কের অংশ। বাকি ১৮ কিলোমিটার বনপাড়া থেকে লালপুরের ত্রিমোহিনী পর্যন্ত গেছে। এই ১৮ কিলোমিটারের মধ্যে ১১ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেহাল। গত শুক্রবার বিকেলে বনপাড়া-লালপুর সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ১৮ কিলোমিটার সড়কের ১১ কিলোমিটারের অধিকাংশ স্থানে পিচঢালাই নেই। সড়কজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। বিশেষ করে ভূঁইয়াপাড়া, চকনাজিরপুর, দিয়াড়পাড়া ও ওয়ালিয়া এলাকার অবস্থা বেশি খারাপ। এসব এলাকায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে এসব গর্ত পানিতে ভরে যায়। তখন যানবাহনের চাকা গর্তে আটকে যায়। তারপরও এ অবস্থাতেই চলছে বাস, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, ইজিবাইকসহ নানা ধরনের যানবাহন। এই সড়কের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আবদুল সালাম বলেন, দূরত্ব হিসাবে লালপুর থেকে বনপাড়ায় পৌঁছাতে আধা ঘণ্টার বেশি লাগার কথা নয়। কিন্তু এক বছর ধরে এই পথ পেরোতে তাঁদের এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। জ্বালানি ও অটোরিকশা মেরামত খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। নবনপাড়া থেকে লালপুরের ত্রিমোহিনী পর্যন্ত সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। যাত্রীদের অভিযোগ,
কয়েক মাস ধরে সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ। গর্তের কারণে গাড়ি হেলেদুলে চলে। এ জন্য অনেক বাস আর ওই পথে যেতে চায় না। এ সুযোগে ভাড়া বেড়ে গেছে। গত শুক্রবার ভাড়ায়চালিত একটি গাড়ির চালক জমসেদ আলী লালপুর থেকে নাটোর শহরে ফিরে এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘সড়ক মেরামত না হলে আমি আর গাড়ি নিয়ে লালপুর যাব না। ভাঙাচোরা রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে আমার শরীর ও গাড়ি দুটোই শেষ।’ চকনাজিরপুর এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী মামুনুর রশিদ বলেন, পেশাগত কারণে তিনি ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু প্রতিদিন মাইক্রোবাসে নাটোর আদালতে যাতায়াত করেন। রাস্তার গর্তে পড়ে প্রায় তাঁদের মাইক্রোবাসটি বিকল হয়ে যায়। সড়ক বিভাগ মাঝে মাঝে কিছু ইট গর্তে ফেলে দিয়ে যায়। দুদিন যেতে না-যেতেই অবস্থা আবার আগের মতো হয়ে যায়। সড়ক ও জনপথ বিভাগ নাটোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জিকরুল ইসলাম বলেন, বড় ধরনের সংস্কার করা না হলে সড়কটি টেকসই হবে না। এ জন্য দরকার বড় বরাদ্দ। কিন্তু কেন্দ্র থেকে সে তুলনায় বরাদ্দ পাওয়া যায় না। তাই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে ইট দিয়ে গর্তগুলো ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। এ বছর বৃষ্টি বেশি হওয়ায় সমস্যাটা বেড়েছে। তবে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে সড়কটির সংস্কার করা হবে। (নাটোর-১) লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনের সাংসদ মো. আবুল কালাম বলেন, সড়কটির টেকসই সংস্কার ছাড়া সমস্যার সমাধান হবে না। তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের জন্য তদবির করছেন। আগামী সংসদ অধিবেশনে আবারও সমস্যাটি তুলে ধরবেন।
No comments