দুঃস্বপ্ন তাড়া করছে মানিককে

চট্টগ্রাম আবাহনী ছেড়ে হঠাৎ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সুখের মুখ দেখতে পারলেন না। দুঃসময়ের পাকেচক্রে হাবুডুবু খাচ্ছেন শফিকুল ইসলাম মানিক। বেচারা ভাগ্যটাও পাচ্ছেন না পাশে। এএফসি কাপে এখন পর্যন্ত চারটি ম্যাচ খেলে সব কটিই হেরেছে তাঁর দল। কিন্তু দুটি হার নিয়ে শেখ জামাল কোচের বিস্তর আফসোস, ‘এভাবে আমরা হারব ভাবাই যায়নি। অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়।’ মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর এফএর সঙ্গে ঢাকায় দুবার এগিয়েও হার ৪-৩ গোলে। গোলরক্ষক সোহেল শেষ সময়ে দুটি বাজে গোল খেয়ে দলকে হতাশায় ডোবান। ১২ এপ্রিল কুয়ালালামপুরে সেই সেলাঙ্গরের সঙ্গেই টুর্নামেন্টে প্রথম পয়েন্ট পেতে পেতেও ৮৯ মিনিটে গোল খেয়ে হতাশার হার (২-১)। মানিকের সঙ্গী এখন সেই হতাশা, ‘কিছুই ভালো লাগছে না। বারবার তাড়া করছে দুঃস্বপ্ন।’ ঢাকায় ফিরে শেখ জামালের কোচ কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপের খেলা দেখতে এসে মলিন মুখে বলছিলেন, ‘প্রতিপক্ষ ৫৮ মিনিটে ১০ জনের দল হয়ে যায়। ম্যাচ তখন ১-১। আমাদের জেতার ভালো সম্ভাবনা ছিল, দলও ভালো খেলছিল। কিন্তু ৭০ মিনিটে পোস্ট থেকে অনেকটা দূরে ইয়াসিন পেছন থেকে অহেতুক ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখায় আমরাও হয়ে গেলাম ১০ জনের দল।’ ঢাকায় ফিলিপাইনের সেরেস লা সাল্লের বিপক্ষেও ইয়াসিন লাল কার্ড দেখেছেন। বারবার খেলোয়াড়দের কিছু ভুলের মূল্যই আসলে দিতে হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের। তবে সবাইকে ছাপিয়ে কোচের মুখে ইয়াসিনের কথাই বেশি, ‘ও সর্বশেষ ম্যাচে আরও সতর্ক থাকলে হয়তো স্কোর অন্য রকম হতে পারত।’ আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলেছেন, কোচ হিসেবেও উত্তাপটা অনেকে আগেই পেয়েছেন মানিক। তবে এবার শেখ জামালে এসে এএফসি কাপে টানা ৪ ম্যাচ এভাবে হারবেন ভাবেননি। সামনেও আশার আলো নেই। ২৬ এপ্রিল ঢাকায় টেম্পাইনস রোভার্স ও ১০ মে সেরেস লা সাল্লের সঙ্গে শেষ ম্যাচ খেলবে শেখ জামাল। ওই দুটি ম্যাচে একাদশ মাঠে নামাবেন কীভাবে সেটিই বড় চিন্তা। নানা কারণে তাঁর হাতে পর্যাপ্ত খেলোয়াড় নেই। কুড়িয়ে-কাঁচিয়ে মালয়েশিয়ায় নিতে পেরেছিলেন ১৫ জন খেলোয়াড়, বিমান ওঠার আগে ধারে পান শেখ রাসেলের জামাল ভূঁইয়াকে। শেষ দুটি ম্যাচে সম্ভবত জামালকে আর পাওয়া যাবে না। লাল কার্ডের কারণে মাঠের বাইরে ইয়াসিনও। তাই বাস্তবতা মেনে মানিক বলছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফুটবল অনেক কঠিন। এখানে জোড়াতালি দিয়ে দল গড়লে হবে না। তাই শেষ দুটি ম্যাচ নিয়েও চিন্তায় আছি।’ আদালতের রায়ে ৮ ফুটবলারকে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনাও প্রায় শূন্যের কোঠায়। ঘুরে দাঁড়ানোর বাস্তব সম্ভাবনা তাই খুবই ক্ষীণ। অথচ এই শেখ জামাল কলকাতার আইএফএ শিল্ড মাতিয়েছে, ভুটানের কিংস কাপ জিতে সমীহ কুড়িয়েছে। এই এএফসি কাপের বাছাইয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কিরগিজস্তানে গিয়ে। সেই দলটিই এখন পথহারা। মানসম্মত খেলোয়াড়ের অভাবে ধুঁকছে। হায় শেখ জামাল!
হারের বৃত্তে শেখ জামাল
০-৪ টেম্পাইনস রোভার্স (সিঙ্গাপুর)
০-২ সেরেস লা সাল্লে­ (ফিলিপাইন)
৩-৪ ও ১–২ সেলাঙ্গর (মালয়েশিয়া)

No comments

Powered by Blogger.