আইএসবিরোধী যুদ্ধে কুর্দি নারী
কাঁধে ঝুলছে রাইফেল। কোমর–বন্ধনীতে মজুত গ্রেনেড। পুরোদস্তুর যুদ্ধের সাজে তেকোশিন। এক কুর্দি নারী যোদ্ধা তিনি। উত্তর ইরাকের পাহাড়ি অঞ্চলে লড়ছেন ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। তেকোশিনের লক্ষ্য, তাঁর ভাষায়, নারীদের স্বাধীন করা। আইএসের বিপক্ষে পুরুষের পাশাপাশি লড়াই করছেন তেকোশিনের মতো আরও বেশ কয়েকজন নারী। বিশেষ করে নারীদের প্রতি আইএস জঙ্গিদের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন তাঁরা। উত্তর ইরাকের মাখমুর পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) যোদ্ধাদের তুমুল লড়াই চলছে এখন। কট্টর সুন্নি ইসলামপন্থী আইএস যোদ্ধারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইরাক ও প্রতিবেশী সিরিয়ার বড় একটা অংশ। আইএস তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় শরিয়া আইন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।
তাদের ঘোষিত ‘খেলাফত রাষ্ট্রে’ নারী স্বাধীনতার ওপর নেমে এসেছে কঠোর বিধিনিষেধের খড়্গ। কুর্দি পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা যোদ্ধা তেকোশিন (২৭) বলেন, ‘আইএস জঙ্গিরা শুধু কুর্দিস্তানের জন্যই হুমকি নয়, এরা নারী স্বাধীনতার ঘোর বিরোধী। নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আইএস জঙ্গিরা নারীদের বাজারে যেতে দেয় না। হিজাব পরতে বাধ্য করে। আর ঠিক এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে নারীদের যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আমরা নারীরা এই জঙ্গিপনা রুখতে চাই।’ পিকেকের অন্তত ৫০ জন নারী যোদ্ধা লড়াই করছেন কুর্দিস্তানের পাহাড়ি মাখমুর শহরে। পিকেকে নিজেও যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের তালিকাভুক্ত ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’। ১৯৮৪ সালে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই শুরু করেছিল তারা। ২০১২ সালে শুরু করে শান্তি আলোচনা। তেকোশিন জানালেন, সাধারণত একটি দলে চারজন নারী যোদ্ধা থাকে। তিনি এমনই একটি দলের কমান্ডার। লড়াই শুরু হলে পুরুষ যোদ্ধাদের সঙ্গেও যোগ দেন তাঁরা। বিবাহিতা কিনা জানতে চাইলে হেসে ওঠেন তেকোশিন। তারপর বলেন, ‘বিয়ে করতে সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। এর পরও এখানে বেশির ভাগ নারীই অবিবাহিত। আমি মাত্র ১৪ বছর বয়সে পিকেকেতে যোগ দিয়েছিলাম।’ সূত্র: এএফপি
No comments