অস্ত্রবিরতি ঘোষণার পর সামরিক হামলা
পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এক মাসের জন্য অস্ত্রবিরতি ঘোষণার একদিন পর গতকাল রোববার খাইবারের বারা এলাকায় হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। জঙ্গি নেতা মোল্লা তামানচের গোপন আস্তানায় চালানো এ হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা আবার শুরুর লক্ষ্যে টিটিপি গত শনিবার এই ঘোষণা দেয়। তামানচের নেতৃত্বে গত শনিবার পোলিও টিকাদান কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত কর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ভয়াবহ হামলায় ১২ জন নিহত হয়। গত মাসে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর সেনাবাহিনী তালেবানদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর গুঞ্জনের মধ্যেই এই ঘোষণা এল। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলো মনে করে, পোলিও কর্মসূচির আড়ালে দেশটিতে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আবার পোলিওতে ব্যবহূত ওষুধের কারণে মানুষ সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারায় বলে পাকিস্তানিদের মধ্যে একটি ধারণা প্রচলিত। পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকার কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বরদাশত করবে না। এ ধরনের যেকোনো তৎপরতার জবাব দেওয়া হবে।
শনিবার হামলার কয়েক ঘণ্টা পর টিটিপি এক মাসের অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয় এবং অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনকেও অস্ত্রবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানায়। তালেবানের সঙ্গে সরকারের শান্তি আলোচনা গত মাসে শুরু হলেও সাফল্যের মুখ দেখেনি। কারণ, জঙ্গিদের কাছে আটক ২৩ জন সেনাকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার পর সেনাবাহিনী পাকিস্তানের গোলযোগপূর্ণ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জঙ্গিদের গোপন আস্তানায় বিমান হামলা শুরু করে। টিটিপির মুখপাত্র শহীদুল্লাহ শহীদ বলেন, সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তালেবান ওই অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আলোচনায় অংশ নেওয়া সরকারি প্রতিনিধিদলের এক সদস্য বলেন, তালেবান ও অন্য জঙ্গিরা অস্ত্রবিরতির প্রতি সম্মান দেখালে আলোচনা আবার শুরু করতে তাঁদের কোনো সমস্যা নেই। তবে পাকিস্তানের অনেকেই টিটিপির ওই অস্ত্রবিরতির ঘোষণাকে সন্দেহের চোখে দেখছে। কারণ, সমমনা অন্য জঙ্গিদের ওপর সংগঠনটির কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই এ ধরনের অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করা হলেও তা পাকিস্তানজুড়ে বাস্তবায়নের সুযোগ সীমিত। রয়টার্স ও বিবিসি।
No comments