শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে কিছু প্রশ্ন by ড. তারেক শামসুর রেহমান
ছাত্র বিক্ষোভের মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'আউটার ক্যাম্পাস' হিসেবে পরিচিত রাজশাহী ক্যাম্পাসকে নতুন করে অনুমোদন নিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ওই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি চিঠি দিয়েছে। খবরটি রাজশাহী থেকে আমাদের জানিয়েছেন দৈনিক যায়যায়দিনের সংবাদদাতা গত ২২ আগষ্ট। ওই বিশ্ববিদ্যালয়টির নানা অনিয়ম যখন একাধিক সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে এবং খোদ রাষ্ট্রপতি যখন ২৮ জুলাই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে যোগ দিতে তার অনীহা প্রকাশ করেন, তখন ইউজিসি কী করে 'নতুন করে অনুমোদন নিতে' ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠায়, তা আমার বোধগম্য নয়।
বলা ভালো রাষ্ট্রপতি পদাধিকার বলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর এবং এর মধ্যেই তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম তদন্ত করে দেখার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অনিয়মের মধ্যে একটি হচ্ছে 'আউটার ক্যাম্পাস' খোলা ও অবৈধভাবে ছাত্র ভর্তি করানো। রাষ্ট্রপতি যখন গুণগত শিক্ষার কথা বলেন, যখন এদেশের শিক্ষাবিদদের একটা বড় অংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর 'সার্টিফিকেট' বাণিজ্য নিয়ে উৎকণ্ঠিত, তখন ইউজিসির এই চিঠি পাঠানো এই সংস্থাটির ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। মঞ্জুরি কমিশনে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। প্রয়াত অধ্যাপক আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে আমরা যখন মঞ্জুরি কমিশনে ছিলাম, তখন আমরা চেষ্টা করেছি এই 'সার্টিফিকেট বাণিজ্য' বন্ধ করার। বর্তমান ইউজিসি'র চেয়ারম্যানও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়মের কথা বার বার বলে আসছেন; কিন্তু তারপরও 'নতুন করে অনুমোদন নিতে' ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠানো কেন হয়, তা বুঝতে আমি অক্ষম। সবচেয়ে আতঙ্কের খবর যা, তা হচ্ছে, শুধু ওই বিশ্ববিদ্যালয়টিই নয়, বরং একই সঙ্গে আরও ৪ থেকে ৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় একই সঙ্গে 'আউটার ক্যাম্পাস'-এর অনুমোদন চেয়ে আবেদন করে বসেছে। এখানে অনেক প্রশ্ন এসে যায়। এক. যেখানে রাষ্ট্রপতি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়মের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে ইউজিসির পুনরায় 'অনুমোদন নেয়ার' জন্য (আউটার ক্যাম্পাসের) চিঠি পাঠানো ঠিক হয়েছে কিনা? দুই. ইউজিসি কি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'আউটার ক্যাম্পাস' প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিতে চায়? তিন. ইউজিসি কি মনে করে 'আউটার ক্যাম্পাস' শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করবে? চার. মঞ্জুরি কমিশন যখন নতুন করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি অভিন্ন আইন তৈরির কাজ শেষ করেছে, তখন সংসদে ওই আইনটি পাস হওয়ার আগেই ইউজিসি কি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'আউটার ক্যাম্পাস'-এর অনুমোদন দিতে যাচ্ছে? এর আগে তো ইউজিসি নোটিশ দেয় 'আউটার ক্যাম্পাস' বন্ধ করে দিয়েছিল। ইউজিসি কি সেই চিঠি প্রত্যাহার করে নিয়েছে? পাঁচ. একজন চেয়ারম্যানসহ ইউজিসির মোট সদস্য সংখ্যা ছয়। পাঁচজন পূর্ণকালীন সদস্য কি এই চিঠির ব্যাপারে অবগত? চিঠি পাঠানোর বিষয়টি কি নির্বাহী আদেশে হয়েছে, নাকি মঞ্জুরি কমিশনের মাসিক সভায় অনুমোদিত হয়েছে? এর নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা মঞ্জুরি কমিশনে কর্মরত আমার পুরনো সহকর্মীদের আছে। আমি এ নিয়ে কোনো বিতর্কে যেতে চাই না। আমার উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে। শিক্ষামন্ত্রী এইচএসসি'র ফলাফল প্রকাশ করার সময়ও (২৬ জুলাই) সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা নিয়ে কোনো ব্যবসা করতে দেয়া হবে না। শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য; কিন্তু 'শিক্ষা নিয়ে যে ব্যবসা' হচ্ছে, তিনি তো তা জানেন; কিন্তু কি উদ্যোগ নিয়েছেন, তিনি এই ব্যবসা বন্ধ করার? জনমনে এ প্রশ্ন থাকবেই। 'আউটার ক্যাম্পাস' এর নামে হচ্ছে 'ব্যবসা'। হাজার হাজার 'সার্টিফিকেট বিক্রি' হচ্ছে, যাদের অনেকেরই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার কোনো যোগ্যতা নেই, শুধু টাকার বিনিময়ে তারা 'সার্টিফিকেট' কিনেছেন। এসব 'সার্টিফিকেট' আবার কেউ কেউ ব্যবহার করছেন তাদের পদোন্নতির জন্য। সচিবালয়ে কর্মরত অনেক বিএ পাস আমলা এখন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটধারী। ক্লাসে কোনোদিন উপস্থিত তারা থাকেননি; কিন্তু একখানা সার্টিফিকেট তারা জোগাড় করেছেন। এই 'আউটার ক্যাম্পাস' আর দূরশিক্ষণ কার্যক্রম হচ্ছে 'ব্যবসার' বড় জায়গা। ইউজিসি এটা জানে। এটা বন্ধে কেন কোনো বড় উদ্যোগ নেয়া হয় না-এটা বুঝতে আমি অক্ষম। ইউজিসি যে আইন করতে যাচ্ছে, যার অনেকটা আমরা শেষ করে দিয়ে এসেছিলাম, সেখানে এই 'সার্টিফিকেট বাণিজ্য'-এর বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। 'সর্ষের মধ্যে যে ভূত' রয়েছে, তা চিহ্নিত করে তাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এরই মধ্যে যে আইনের একটি খসড়া প্রণয়ন করেছে, এটাকে ভিত্তি করে কিছু রদ-বদল করা যায়। তবে এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষার মান, শিক্ষক নিয়োগ, ট্রাষ্টি বোর্ড, উপাচার্য নিয়োগ এবং অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন ইত্যাদি বিষয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো নেয়া সমীচীন বলে আমি মনে করি। ১. একটি অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন। ইউজিসিতে থাকাকালীন উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক ওয়ার্কশপে আমি অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে বলা হয়েছিল, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন ছাড়া শিক্ষার মান নির্ধারণ করা যায় না। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ বাদে প্রতিটি দেশে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল রয়েছে। এই কাউন্সিল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান যাচাই করে রেটিং করে। এতে করে ছাত্ররা বুঝতে পারে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান কত। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান নির্ধারণের জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনে নির্বাহী আদেশে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন করতে হবে। ৬ থেকে ৭ সদস্য নিয়ে এই কাউন্সিল গঠিত হবে এবং এর সদস্যরা মঞ্জুরি কমিশনের সদস্যদের পদমর্যাদা ভোগ করবেন। অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের জন্য আলাদা প্রশাসনিক কাঠামো থাকবে। ইউজিসির কোনো কর্তৃত্ব এই কাউন্সিলের উপর থাকবে না। এরা স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবেন। প্রয়োজনে এই কাউন্সিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরও রেটিং করতে পারবে। এদের কর্মপরিধির মধ্যে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান যাচাই করা, শিক্ষকদের মান যাচাই করা, পরীক্ষা পদ্ধতি বিশ্লেষণ করা, শিক্ষা কার্যক্রম মনিটর করা ইত্যাদি। ২. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি পৃথক উচ্চতর শিক্ষা কমিশন গঠন করা। এখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একজন প্রতিনিধি নিশ্চিত করা হবে। এই কমিশন ইউজিসির নিয়ন্ত্রণ বা কর্তৃত্বের বাইরে থাকবে। এই কমিশন গঠিত হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে ইউজিসির কোনো ভূমিকা থাকবে না। ইউজিসি শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে কাজ করবে। প্রস্তাবিত উচ্চতর শিক্ষা কমিশন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিলেবাস, উপাচার্য নিয়োগ, শিক্ষক নিয়োগ, তথা সব শিক্ষা কার্যক্রম দেখ-ভাল করবে এবং সরকারকে উপদেশ দেবে। ৩. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চতর শিক্ষা কমিশন মূল দায়িত্ব পালন করবে। তারা ৩ জনের একটি প্যানেল চ্যান্সেলরের কাছে পাঠাবে। যোগ্যতা হিসেবে ন্যূনতম ১৫ বছরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কোনো ব্যবসায়ী বা সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপাচার্য হতে পারবেন না। দু'টার্মের বেশি (এক টার্ম ৩ বছর) উপাচার্য থাকতে পারবেন না। প্রো-উপাচার্য থাকতে পারেন, তিনি আর্থিক বিষয়াদি দেখাশোনা করবেন। ট্রেজারার থাকার প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে ট্রেজারার নিয়োগ করা হলে প্রো-উপাচার্যের প্রয়োজন নেই। ৪. বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য একটি ট্রাষ্টি বোর্ড ও একটি সিন্ডিকেট থাকবে। ট্রাষ্টি বোর্ডের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়াদি তথা অবকাঠামোগত উন্নয়ন। অন্যদিকে সিন্ডিকেট একাডেমিক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এখানে উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধি থাকতে পারে। তবে সিন্ডিকেটে একাডেমিসিয়ানরাই থাকবেন। একটি একাডেমিক কাউন্সিলও থাকবে। ৫. প্রস্তাবিত উচ্চতর শিক্ষা কমিশন শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি সুপারভাইজ করবে এবং নির্বাচনী বোর্ডে তাদের মনোনীত বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বউদ্যোগে নির্বাচনী বোর্ডের সভা ডাকতে পারবে। ৫. একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাম্পাস থাকবে। পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় কোনো আউটার ক্যাম্পাস থাকতে পারবে না। কোনো রিজিওনাল সেন্টারও থাকতে পারবে না। প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে অন্য নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। আউটার ক্যাম্পাসগুলো গুটিয়ে এক ক্যাম্পাসে নিয়ে আসতে হবে। ৫. কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই দূরশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। দূরশিক্ষণের নামে দুর্নীতি হচ্ছে। এখানে যে সার্টিফিকেট দেয়া হয়, তাতে দূরশিক্ষণের কথা লেখা থাকে না। ৬. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আয়-ব্যয় নিয়মিত 'অডিট' হবে। আয়ের একটা অংশ কর্তৃপক্ষকে ছাত্রদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে। ৭. প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষক থাকতে হবে। প্রতিটি বিভাগে একজনের অতিরিক্ত 'ভাড়া করা' শিক্ষক থাকতে পারবে না। কোনো 'পার্টটাইম' শিক্ষক থাকতে পারবে না। 'ভাড়া করা' শিক্ষক যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসেন, তাহলে তাকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমতি ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে হবে। ওই শিক্ষক কোনো অবস্থাতেই দ্বিতীয় কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে পারবেন না। একটি বিভাগে অধ্যাপকসহ ন্যূনতম ১০ জন শিক্ষক থাকতে হবে। ৮. প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব একাডেমিক ভবন থাকতে হবে। ভাড়া বাড়িতে কোনো অবস্থাতেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা যাবে না। ৫ কোটি টাকা এফডিআর করে রাখার বিধান বাধ্যতামূলক করা হবে এবং কোনো অবস্থাতেই এফডিআরটি ভাঙানো যাবে না। এভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যদি একটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা যায়, তাহলে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব। মনে রাখতে হবে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন অনেক বেশি ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। তাই বলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মানোন্নয়নের প্রয়োজন নেই-এ কথাটা আমি বলছি না। এখানেও মানোন্নয়নের প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে তরুণ প্রভাষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি। একই সঙ্গে সরাসরি প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার আগে তাদের ন্যূনতম দুই থেকে তিন বছর বিভাগে গবেষণাসহকারী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। পাস করেই যিনি 'শিক্ষক' হন, তার মাঝে ছাত্রসুলভ আচরণ থেকে যায়। ঠিকমত তারা ক্লাস নিতে পারেন না। এমনকি ক্লাসে তারা 'নোট' নিয়ে যান এবং ছাত্রদের সামনে সেটাই পড়ে যান। গবেষক হিসেবে একজন সিনিয়র শিক্ষকের অধীনে কাজ করলে অন্তত তার পক্ষে অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব। তাই নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার আগে এসব বিষয় ভেবে দেখা প্রয়োজন। আগে প্রয়োজন শিক্ষার মানোন্নয়নের দিকে নজর দেয়া। মঞ্জুরি কমিশনের এ ব্যাপারে তৎপর হওয়াও প্রয়োজন। শিক্ষার যদি মানোন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া না হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সৃষ্টি হবে একটি বড় দূরত্ব। এমনকি দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও একটি দূরত্ব তৈরি হয়ে যেতে পারে। এই দূরত্ব মেধা বিকাশে কোনো সাহায্য করবে না। নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হোক, ক্ষতি নেই; কিন্তু আগে প্রয়োজন শিক্ষার মানোন্নয়ন করা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সার্টিফিকেট' বাণিজ্য বন্ধ করা। সেই সঙ্গে তরুণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাও জরুরি। লেখক : বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য ই-মেইল : tsrahmanbd@yahoo.com
No comments