সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বাসন -সমতার নীতি নিশ্চিত করতে হবে
রাজনৈতিক বা অন্য কোনো বিধিবহির্ভূত বিবেচনায় কাউকে চাকরিচ্যুত করা হলে তাঁর বা তাঁদের চাকরি ফিরে পাওয়ার যে ন্যায়সংগত অধিকার, তা অস্বীকার করা চলে না। বিগত জোট সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদে সশস্ত্র বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুতি বা অন্যবিধ উপায়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রতিকার প্রদানের একটি উদ্যোগ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গ্রহণ করেছে। বিষয়টি যে কমিটির মাধ্যমে করা হচ্ছে, তা ইতিবাচক। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাতে গত সাত বছরের যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা খুবই অস্বস্তিকর। এতে জনমনে এ ধারণা তৈরি হতে পারে যে এ উদ্যোগ নিছক দলীয় বিবেচনায় গ্রহণ করা হচ্ছে।
এখন সংগত প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে একই কারণে বা একই বিবেচনায় এর আগে যাঁরা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের কী হবে? অনেকে বলেছেন, এটা ১৯৮০ বা ১৯৯১ সাল থেকে ধরা হোক। এ ক্ষেত্রে আমরা অবশ্য অস্বস্তির সঙ্গে লক্ষ করি যে অতীতের কোনো অনিয়মের প্রতিকারের কথা উঠলে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে অতীতের কর্মকাণ্ডের ব্যাপ্তির প্রসারণ ঘটানো হয়। কখনো আমরা শুনি, অমুক বিষয়ে অনিয়মের তদন্ত ১৯৭২ সাল থেকে শুরু করতে হবে। আমাদের শাসনব্যবস্থার কোনো একটি পর্বের গুণগত মান অন্য একটি পর্ব থেকে খুব বড় মাপে ফারাক করা যায় না। এ কথাও সত্য, একটি ভুল দিয়ে আরেকটি ভুলের যথার্থতা দেওয়া যায় না।
জেনারেল এরশাদের স্বৈরাচারী আমলে সশস্ত্র বাহিনীর যেসব মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল, তাঁদের প্রতিকার দেওয়া অসম্ভব ছিল না; কিন্তু তা করা হয়নি। বরং চোখে পড়ার মতো করে বিশেষ পরিবার ও তাদের আত্মীয়কুল, দলীয় বা গোষ্ঠীগত আনুগত্য ইত্যাদি সশস্ত্র বাহিনীতে পুনর্বহাল বা পদোন্নতিলাভের ক্ষেত্রে বিবেচ্য হয়েছে। মেধা ও যোগ্যতা অনেক ক্ষেত্রে পরাস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে বলেই প্রতীয়মান হয়।
আমাদের বক্তব্য হলো, সংসদীয় কমিটিকে সর্বাগ্রে অবশ্যই আইনের চোখে সমতার নীতি অনুসরণ করতে হবে। রাজনৈতিক ও দলীয় বিবেচনায় কেউ চাকরি খোয়ালে বা হেনস্থা হলে এর প্রতিকার একইভাবে রাজনৈতিক ও দলীয় বিবেচনায় নিশ্চিত করা কাম্য নয়। কারণ, এটা আইনের শাসনের দাবি নয়। সে কারণেই সরকার ও সংসদীয় কমিটিকে কঠোরভাবে সাত বছর বা কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষে আবেদন গ্রহণ এবং তা বিবেচনা করা অনৈতিক ও অন্যায্য। প্রতিকার দিতে হবে কেবল আইনের চোখে ‘সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি’ হিসেবে; কোনোক্রমেই দলীয় বা প্রীতিভাজন ব্যক্তি বিবেচনায় নয়।
তবে সশস্ত্র বাহিনীতে এ ধরনের কিছু করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, বা হিতে বিপরীত হতে পারে কি না, তা নির্মোহভাবে খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। তথাকথিত রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা আর গোপন কোনো বিষয় নয়। এখন আমরা রাজনৈতিক বিবেচনায় সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের চাকরিতে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যয়পরায়ণতা দাবি করব। সবচেয়ে বড় কথা, শুধু পুরোনো অনিয়মের প্রতিকারের উদ্যোগ নয়, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অনিয়ম ও অন্যায় না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান সরকারের আমলে এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি হবে না—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এখন সংগত প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে একই কারণে বা একই বিবেচনায় এর আগে যাঁরা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের কী হবে? অনেকে বলেছেন, এটা ১৯৮০ বা ১৯৯১ সাল থেকে ধরা হোক। এ ক্ষেত্রে আমরা অবশ্য অস্বস্তির সঙ্গে লক্ষ করি যে অতীতের কোনো অনিয়মের প্রতিকারের কথা উঠলে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে অতীতের কর্মকাণ্ডের ব্যাপ্তির প্রসারণ ঘটানো হয়। কখনো আমরা শুনি, অমুক বিষয়ে অনিয়মের তদন্ত ১৯৭২ সাল থেকে শুরু করতে হবে। আমাদের শাসনব্যবস্থার কোনো একটি পর্বের গুণগত মান অন্য একটি পর্ব থেকে খুব বড় মাপে ফারাক করা যায় না। এ কথাও সত্য, একটি ভুল দিয়ে আরেকটি ভুলের যথার্থতা দেওয়া যায় না।
জেনারেল এরশাদের স্বৈরাচারী আমলে সশস্ত্র বাহিনীর যেসব মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল, তাঁদের প্রতিকার দেওয়া অসম্ভব ছিল না; কিন্তু তা করা হয়নি। বরং চোখে পড়ার মতো করে বিশেষ পরিবার ও তাদের আত্মীয়কুল, দলীয় বা গোষ্ঠীগত আনুগত্য ইত্যাদি সশস্ত্র বাহিনীতে পুনর্বহাল বা পদোন্নতিলাভের ক্ষেত্রে বিবেচ্য হয়েছে। মেধা ও যোগ্যতা অনেক ক্ষেত্রে পরাস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে বলেই প্রতীয়মান হয়।
আমাদের বক্তব্য হলো, সংসদীয় কমিটিকে সর্বাগ্রে অবশ্যই আইনের চোখে সমতার নীতি অনুসরণ করতে হবে। রাজনৈতিক ও দলীয় বিবেচনায় কেউ চাকরি খোয়ালে বা হেনস্থা হলে এর প্রতিকার একইভাবে রাজনৈতিক ও দলীয় বিবেচনায় নিশ্চিত করা কাম্য নয়। কারণ, এটা আইনের শাসনের দাবি নয়। সে কারণেই সরকার ও সংসদীয় কমিটিকে কঠোরভাবে সাত বছর বা কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষে আবেদন গ্রহণ এবং তা বিবেচনা করা অনৈতিক ও অন্যায্য। প্রতিকার দিতে হবে কেবল আইনের চোখে ‘সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি’ হিসেবে; কোনোক্রমেই দলীয় বা প্রীতিভাজন ব্যক্তি বিবেচনায় নয়।
তবে সশস্ত্র বাহিনীতে এ ধরনের কিছু করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, বা হিতে বিপরীত হতে পারে কি না, তা নির্মোহভাবে খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। তথাকথিত রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা আর গোপন কোনো বিষয় নয়। এখন আমরা রাজনৈতিক বিবেচনায় সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের চাকরিতে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যয়পরায়ণতা দাবি করব। সবচেয়ে বড় কথা, শুধু পুরোনো অনিয়মের প্রতিকারের উদ্যোগ নয়, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অনিয়ম ও অন্যায় না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান সরকারের আমলে এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি হবে না—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
No comments