হাসিনার খোঁজ পাচ্ছে না সরকার
ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতারা ট্রাভেল পাস নিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ট্রাভেল পাস ইস্যু করবে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ মিশন ট্রাভেল পাস ইস্যু করতে পারে শুধু দেশে ফেরার জন্য, অন্য দেশে যাওয়ার জন্য নয়। অন্য দেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্টের প্রয়োজন পড়ে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা খোলাসা করেই বলেন, বাংলাদেশ মিশন কেবলমাত্র পাসপোর্টহীন ব্যক্তিদের দেশে ফেরার জন্যই ট্রাভেল পাস ইস্যু করতে পারে, অন্য দেশে যাওয়ার জন্য নয়। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, তারা যদি দেশে ফিরতে চান, ট্রাভেল পাস ইস্যু করা যেতে পারে এবং তারা দেশে ফিরে আসতে পারেন। আদালত চাইলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবেও বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
২০ হাজার ভিসা আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির আশ্বাস ইতালির: এদিকে ঢাকার ইতালি দূতাবাস ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ হাজার ভিসা আবেদন নিষ্পত্তি করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অনেক ভিসা আবেদন আটকে আছে। ২০ হাজার ভিসা কেস রোম থেকে ক্লিয়ার্ড (নিষ্পত্তি) হয়েছে। সে ভিসাগুলো দেয়ার অগ্রগতি খুব কম। ইতালি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার কথা হয়েছে, উনি আশ্বস্ত করেছেন যে ডিসেম্বরের মধ্যে এ ভিসাগুলো দিয়ে দিবেন। এ ছাড়া ইতালি দূতাবাস অতিরিক্ত দুই-তিনজন কর্মকর্তা নিয়ে আসছেন কাজ করতে, তারা এলে কাজের গতি বাড়বে। ইতালি দূতাবাসে প্রায় ৪০ হাজার ভিসা আবেদন জমা আছে। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষারত ইতালির ওয়ার্ক ভিসাপ্রত্যাশীদের মধ্যে থেকে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার সকালে সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে ভিসা ইস্যুকরণে দীর্ঘসূত্রতার কারণে তাদের নানাবিধ ভোগান্তিসহ এ সমস্যার দ্রুত সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতার অনুরোধ জানান ভিসাপ্রত্যাশীরা। তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রতিনিধিদলকে মিছিল-মিটিং ও ঘেরাও কর্মসূচি না করার জন্য বলেছি। এগুলো করলে ভিসাপ্রত্যাশীদের কোনো লাভ হবে না, দেশেরও কোনো লাভ হবে না। কারণ, তারা যদি ভয় পায়, তাহলে বরং আরও অফিসার চলে যাবেন। দেখা যাবে, ভিসা ইস্যু হচ্ছেই না। উপদেষ্টা বলেন, আমরা ইতালি দূতাবাসকে চাপ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হবে। তৌহিদ হোসেন বলেন, ভিসা দেয়া বা না দেয়া একটি দেশের সার্বভৌম অধিকার। ভিসা কেন দেয়া হয়েছে বা দেয়া হয়নি, সেটা আমরা জিজ্ঞাসা করতে পারি না।
লেবানন থেকে ফ্লাই করা রিস্কি, বিকল্প পথে ফেরতের চেষ্টাও করছে সরকার: ওদিকে লেবানন থেকে প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, লেবানন থেকে যারা ফিরে আসতে চান, তাদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তাদের (প্রবাসীদের) বলা হয়েছে, ওয়ার জোন (যুদ্ধকবলিত এলাকা) থেকে তারা যেন একটু উত্তরে সরে যান। আমরা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) অনুরোধ করেছি, তারা যেন ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দেয়, যাতে তারা চলে আসতে পারেন। লেবানন থেকে ফিরতে আগ্রহী প্রবাসী বাংলাদেশিদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে এমনটা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সমস্যা হলো বৈরুত এয়ারপোর্ট থেকে ফ্লাই করা রিস্কি। সে কারণে বিকল্প পথে ফ্লাই করা যায় কিনা, সে চেষ্টাও করছি। উল্লেখ্য, লেবাননে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আতঙ্কে রয়েছেন। কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
No comments