পাকিস্তানে ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাফল্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাফল্যের
প্রমাণ চাওয়া এবং এ নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরকার ও
বিরোধী পক্ষের মধ্যে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতীয় বিমান
হামলায় বিজেপি ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাকিস্তানে ৩০০/৩৫০ সন্ত্রাসী নিহত
হয়েছে বলে দাবি করা হলেও বিরোধীরা প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি ও নিহতের সংখ্যা নিয়ে
প্রশ্ন তুলেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের
মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিমান হামলায় প্রকৃত
হতাহতের সংখ্যা জানতে চেয়ে প্রশ্ন তোলায় উনি পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন
বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ও অন্যরা।
গতকাল (রোববার)
বিহারের পাটনায় এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও অভিযোগ করেছেন
বিরোধীরা পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন, এরফলে সেনাবাহিনীর মনোবল নষ্ট হচ্ছে।
ডেরেক ও’ব্রায়েন
অন্যদিকে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র
ডেরেক ও’ব্রায়েন এমপি বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘দেশের স্বাধীনতার
লড়াইয়ে যারা টেবিলের নীচে লুকিয়েছিল, তাদের কাছ থেকে এখন দেশপ্রেমের
প্রমাণপত্র নিতে হবে?’
গতকাল (রোববার) তিনি
বলেন, ‘দিল্লি বিজেপির সভাপতি ও বিজেপি এমপি মনোজ তেওয়ারি যেভাবে
সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ভোট চাচ্ছেন, তা অত্যন্ত লজ্জার! মোদি, অমিত শাহ
ভারতীয় জওয়ানদের শুধু অপমানই করছেন না, তাদের সামনে রেখে নির্লজ্জ রাজনীতিও
করছেন!’
বিমান হামলায় নিহত
সন্ত্রাসীর সংখ্যা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি এমপি সুরিন্দর সিং
আলুওয়ালিয়া বলেছেন, ‘কতজন সন্ত্রাসী মারা গেছে তা বিবেচ্য নয়, পাকিস্তানকে
শিক্ষা দেয়াই উদ্দেশ্য ছিল।’
অমিত শাহ
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ অবশ্য গতকাল
(রোববার) বলেন, মোদি সরকার ১৩ দিনের মাথায় বিমান বাহিনীর অভিযান চালিয়ে
আড়াইশ’র বেশি সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।’
বিমান হামলার সাফল্য
প্রসঙ্গে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা দিগ্বিজয় সিং প্রশ্ন তুলে বলেছেন,
‘বিমানবাহিনীর হামলা হামলা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না। কিন্তু খোলা জায়গায় হামলা
হলে স্যাটেলাইটের ছবিতে তা প্রকাশ পাবে। আমেরিকা যেভাবে ওসামা বিন লাদেনকে
হত্যা করে গোটা বিশ্বের সামনে প্রমাণ দিয়েছে, সরকার সেভাবে প্রমাণ দিক।’
পি চিদাম্বরম
সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেসের
সিনিয়র নেতা পি চিদাম্বরম বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল
হতাহত সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
বিবৃতিতে বলা হয়েছে কোনো নাগরিক বা সেনা হতাহত হয়নি। তাহলে হতাহতের সংখ্যা
৩০০/৩৫০ কে বলেছিল? একজন গর্বিত নাগরিক হিসেবে আমি আমার সরকারকে বিশ্বাস
করতে প্রস্তুত। কিন্তু, যদি আমরা চাই যে বিশ্বও তা বিশ্বাস করুক, তাহলে
বিরোধী দলকে আঘাত করার পরিবর্তে সরকারকে এনিয়ে চেষ্টা চালাতে হবে।
কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা
কপিল সিব্বল আজ (সোমবার) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস, লন্ডন
বেসড জেনস ইনফরমেশন গ্রুপ, ওয়াশিংটন পোস্ট, ডেইলি টেলিগ্রাফ, দ্য
গার্ডিয়ান ও রয়টার্স-এর নাম উল্লেখ করে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, এদের
রিপোর্টে বালাকোটে সন্ত্রাসীদের ক্ষতির প্রমাণ নেই বলে মন্তব্য করা হয়েছে,
তাহলে কী তারা পাকিস্তানের সমর্থক?
No comments