ভারত নেপালের উৎসব ম্লান করে দিয়েছে by অস্টিন মেয়ার
জ্বালানি সংগ্রহের জন্য নেপালিদের দীর্ঘ লাইন |
১৩
অক্টোবর থেকে নেপালের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ছুটি শুরু হয়, স্থানীয় ভাষায় যাকে
বলে দাশিয়ান। এই পক্ষকালব্যাপী উৎসব শুরু হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মানুষের
খুশি থাকার কথা, কিন্তু এবার ব্যাপারটা তেমন নয়। বহু নেপালিই ১৩ অক্টোবর
গ্যাসের লাইনে দাঁড়িয়ে সারা দিন কাবার করে দিয়েছেন।
ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর ওপর অঘোষিত অবরোধ আরোপ করায় নেপালের জ্বালানি সরবরাহ কমে গেছে, অথচ বছরের এ সময়টি নেপালিদের উৎসবের পক্ষ। ফলে এবার এই দাশিয়ানের সময়টা নেপালিদের জীবনে এক ভিন্ন অনুভূতি নিয়ে এসেছে। কাঠমান্ডুর চক্ষু চিকিৎসক সন্দুক রুইত বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি, ভূমিকম্পের পর কিছু পুনর্বাসন কার্যক্রম হয়েছে, কিন্তু এবার আমরা আরও পিছিয়ে গেলাম। অর্থনীতি পিছিয়ে পড়েছে, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।’
নেপালের সড়কে ঘোরাঘুরি করলে দেখবেন, গাড়ি-ঘোড়া খুবই কম। যানবাহনগুলো গ্যাসের লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, কখনো কখনো ২৭ ঘণ্টা পর্যন্তও দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। আর লাইনগুলো অবিশ্বাস্য রকম লম্বা। আপনি যদি গাড়ি নিয়ে শহরে ঘোরেন, তাহলে দেখবেন, মানুষ হাত নেড়ে লিফট চাইছে। নেপালে প্রায় সব ধরনের জ্বালানি ভারত থেকে আসে—বিমানের জ্বালানি, পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস সবই।
ছানির অস্ত্রোপচার নেপালিদের জীবন বদলে দিচ্ছে, সেটা দেখার জন্য আমি নেপালে এসেছিলাম, তখন বেশ আনন্দই পেয়েছিলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মানুষ অন্ধত্বের দশা থেকে ২০/২০ দৃষ্টিশক্তি লাভ করেছে, তারা ধ্বংস থেকে পুনরুত্থানের দিকে ধাবিত হয়েছে। যে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে নেপাল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, এটা ছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা, যার মধ্যে পরিত্রাণের ব্যাপারও ছিল। ওই ভূমিকম্পে নেপাল ধ্বংস হয়ে গেছে; দেশটির অবকঠামো, অর্থনীতি ও জনগণ বহুদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে।
যে হাসপাতালে দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধারের মতো অলৌকিক ব্যাপার ঘটছিল, সেখানেও অবরোধের চাপ অনুভূত হয়েছে। ২১ বছর বয়সী নেপালি নাগরিক অমিত লামা বলেছেন, ‘ভারতের ওপর এত বেশি নির্ভরশীল হলে এখানে থাকা সহজ নয়। সবকিছুর দামই এখন বেড়ে গেছে—সবজি, ফল থেকে শুরু করে পেট্রল পর্যন্ত।’ ছানির সার্জন রুইত ও জিওফ্রে তেবিনের ভাষ্য হচ্ছে, তাঁরা যত মানুষকে তাঁদের হিমালয়ান ক্যাটার্যাক্ট প্রকল্পে আশা করেছিলেন, তত মানুষ সেখানে ছানির চিকিৎসা করাতে আসছেন না। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার মতো পেট্রল মানুষের হাতে নেই।
ভারত ও নেপালের বন্ধুত্ব শতাব্দীপ্রাচীন, ভারতীয়দের দেবতা রাম ও দেবী সীতার বিয়ে হয়েছিল নেপালে, গৌতম বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল এই নেপালে। ১৯৫০ সালে দেশ দুটির মধ্যে শান্তি ও বন্ধুত্ব চুক্তি হয়েছে, আবার ভারতের বিহার ও উত্তর প্রদেশের শ্রমিকেরা সারা নেপালময় কাজ করেন। এসব তথ্য দেওয়ার কারণ হচ্ছে, দেশ দুটির মধ্যকার সম্পর্ক যে বেশ প্রাচীন, সেটা বোঝানো।
কিন্তু এই হঠাৎ শত্রুতা ও অবরোধের কারণ কী? এই সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে নেপাল নতুন এক সংবিধান গ্রহণ করেছে, যে কারণে সেখানে নানা রকম হাঙ্গামা সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার এটি পছন্দ করেনি। কারণ হিন্দু-অধ্যুষিত নেপাল একটি ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান গ্রহণ করেছে। নেপালের দক্ষিণের সমতলের মদেশি অধিবাসীরা আবার এতে সন্তুষ্ট নয়। তারা মনে করছে, এই সংবিধানে তাদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়নি। এ অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত আছে, আবার এই মদেশিদের সঙ্গে ভারতের পারিবারিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে।
ভারত দৃশ্যত নেপালের ওপর প্রতিশোধ নিতে দেশটিতে বাণিজ্যিক যানবাহন ঢোকা সীমিত করে দিয়েছে। অন্যদিকে মদেশিরা সীমান্তে এই সংবিধানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে, ফলে গত কয়েক সপ্তাহে সেখানে কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছে। ভারত এই অবরোধ আরোপের কথা অস্বীকার করেছে, তারা বলছে, নেপাল সীমান্তের ভেতরে বিপদের কারণে যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে গেছে।
রুইত বলেছেন, ‘এটা নেপালের ইতিহাসের ভিন্ন এক অধ্যায়, যেখানে আমরা ভারতকেও ভিন্ন আচরণ করতে দেখছি। ভারতের এই আচরণের কারণে বিপুলসংখ্যক নেপালি আঘাত পেয়েছে, যেটা বহুকাল তাদের মনে থেকে যাবে।’ নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বন্ধন ছিঁড়ে যাচ্ছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও এই পাহাড়ি দেশটির প্রায় তিন কোটি মানুষের মধ্যে যে সংহতি দেখা যাচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। নেপালের অন্যতম বৃহৎ সংবাদপত্রের সম্পাদক ও প্রধান সুভাষ ঘিমাইর বলেন, ‘মানুষ মনে করে, দক্ষিণের একটি বিশাল দেশ আমাদের ওপর বলপ্রয়োগ করছে। আমজনতা মনে করে, আমাদের ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত। এ ব্যাপারে মানুষ একমত।’
নেপালে পেট্রলের ঘাটতি সৃষ্টি হওয়ার পর দেশটিতে কারপুল কাঠমান্ডু নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ গড়ে উঠেছে। এই গ্রুপের সদস্যসংখ্যা প্রায় এক লাখ, তারা সবাই এখন নিজেদের বাহনে অন্য মানুষদের লিফট দিচ্ছে। কারপুল কাঠমান্ডুর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মনিশ শ্রেষ্ঠা বলেছেন, ‘আমি সতিই বিশ্বাস করি, গত কয়েক দিনে আমরা একটি উন্নততর সমাজে রূপান্তরিত হয়েছি, প্রয়োজনের সময় আমরা একদম অপরিচিত মানুষের সঙ্গেও আতিথেয়তা করেছি, তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবহারও ছিল মধুর।’
দাশিয়ান উৎসবের দুটি রাত পেরিয়ে গেছে। তবু বহু মানুষ কাঠমান্ডুতে রয়ে গেছে, তারা বাড়ি যেতে পারছে না। যে দেশটি কিছু উদ্যাপন করার জন্য অত্যন্ত মুখিয়ে আছে, সেখান থেকে অবরোধ উঠে যাক, এটাই আমার প্রত্যাশা।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া
অস্টিন মেয়ার: নিকোলাস ক্রিস্টফের ২০১৫ উইন-এ-ট্রিপ প্রতিযোগিতার বিজয়ী।
ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর ওপর অঘোষিত অবরোধ আরোপ করায় নেপালের জ্বালানি সরবরাহ কমে গেছে, অথচ বছরের এ সময়টি নেপালিদের উৎসবের পক্ষ। ফলে এবার এই দাশিয়ানের সময়টা নেপালিদের জীবনে এক ভিন্ন অনুভূতি নিয়ে এসেছে। কাঠমান্ডুর চক্ষু চিকিৎসক সন্দুক রুইত বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি, ভূমিকম্পের পর কিছু পুনর্বাসন কার্যক্রম হয়েছে, কিন্তু এবার আমরা আরও পিছিয়ে গেলাম। অর্থনীতি পিছিয়ে পড়েছে, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।’
নেপালের সড়কে ঘোরাঘুরি করলে দেখবেন, গাড়ি-ঘোড়া খুবই কম। যানবাহনগুলো গ্যাসের লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, কখনো কখনো ২৭ ঘণ্টা পর্যন্তও দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। আর লাইনগুলো অবিশ্বাস্য রকম লম্বা। আপনি যদি গাড়ি নিয়ে শহরে ঘোরেন, তাহলে দেখবেন, মানুষ হাত নেড়ে লিফট চাইছে। নেপালে প্রায় সব ধরনের জ্বালানি ভারত থেকে আসে—বিমানের জ্বালানি, পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস সবই।
ছানির অস্ত্রোপচার নেপালিদের জীবন বদলে দিচ্ছে, সেটা দেখার জন্য আমি নেপালে এসেছিলাম, তখন বেশ আনন্দই পেয়েছিলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মানুষ অন্ধত্বের দশা থেকে ২০/২০ দৃষ্টিশক্তি লাভ করেছে, তারা ধ্বংস থেকে পুনরুত্থানের দিকে ধাবিত হয়েছে। যে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে নেপাল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, এটা ছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা, যার মধ্যে পরিত্রাণের ব্যাপারও ছিল। ওই ভূমিকম্পে নেপাল ধ্বংস হয়ে গেছে; দেশটির অবকঠামো, অর্থনীতি ও জনগণ বহুদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে।
যে হাসপাতালে দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধারের মতো অলৌকিক ব্যাপার ঘটছিল, সেখানেও অবরোধের চাপ অনুভূত হয়েছে। ২১ বছর বয়সী নেপালি নাগরিক অমিত লামা বলেছেন, ‘ভারতের ওপর এত বেশি নির্ভরশীল হলে এখানে থাকা সহজ নয়। সবকিছুর দামই এখন বেড়ে গেছে—সবজি, ফল থেকে শুরু করে পেট্রল পর্যন্ত।’ ছানির সার্জন রুইত ও জিওফ্রে তেবিনের ভাষ্য হচ্ছে, তাঁরা যত মানুষকে তাঁদের হিমালয়ান ক্যাটার্যাক্ট প্রকল্পে আশা করেছিলেন, তত মানুষ সেখানে ছানির চিকিৎসা করাতে আসছেন না। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার মতো পেট্রল মানুষের হাতে নেই।
ভারত ও নেপালের বন্ধুত্ব শতাব্দীপ্রাচীন, ভারতীয়দের দেবতা রাম ও দেবী সীতার বিয়ে হয়েছিল নেপালে, গৌতম বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল এই নেপালে। ১৯৫০ সালে দেশ দুটির মধ্যে শান্তি ও বন্ধুত্ব চুক্তি হয়েছে, আবার ভারতের বিহার ও উত্তর প্রদেশের শ্রমিকেরা সারা নেপালময় কাজ করেন। এসব তথ্য দেওয়ার কারণ হচ্ছে, দেশ দুটির মধ্যকার সম্পর্ক যে বেশ প্রাচীন, সেটা বোঝানো।
কিন্তু এই হঠাৎ শত্রুতা ও অবরোধের কারণ কী? এই সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে নেপাল নতুন এক সংবিধান গ্রহণ করেছে, যে কারণে সেখানে নানা রকম হাঙ্গামা সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার এটি পছন্দ করেনি। কারণ হিন্দু-অধ্যুষিত নেপাল একটি ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান গ্রহণ করেছে। নেপালের দক্ষিণের সমতলের মদেশি অধিবাসীরা আবার এতে সন্তুষ্ট নয়। তারা মনে করছে, এই সংবিধানে তাদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়নি। এ অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত আছে, আবার এই মদেশিদের সঙ্গে ভারতের পারিবারিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে।
ভারত দৃশ্যত নেপালের ওপর প্রতিশোধ নিতে দেশটিতে বাণিজ্যিক যানবাহন ঢোকা সীমিত করে দিয়েছে। অন্যদিকে মদেশিরা সীমান্তে এই সংবিধানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে, ফলে গত কয়েক সপ্তাহে সেখানে কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছে। ভারত এই অবরোধ আরোপের কথা অস্বীকার করেছে, তারা বলছে, নেপাল সীমান্তের ভেতরে বিপদের কারণে যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে গেছে।
রুইত বলেছেন, ‘এটা নেপালের ইতিহাসের ভিন্ন এক অধ্যায়, যেখানে আমরা ভারতকেও ভিন্ন আচরণ করতে দেখছি। ভারতের এই আচরণের কারণে বিপুলসংখ্যক নেপালি আঘাত পেয়েছে, যেটা বহুকাল তাদের মনে থেকে যাবে।’ নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বন্ধন ছিঁড়ে যাচ্ছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও এই পাহাড়ি দেশটির প্রায় তিন কোটি মানুষের মধ্যে যে সংহতি দেখা যাচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। নেপালের অন্যতম বৃহৎ সংবাদপত্রের সম্পাদক ও প্রধান সুভাষ ঘিমাইর বলেন, ‘মানুষ মনে করে, দক্ষিণের একটি বিশাল দেশ আমাদের ওপর বলপ্রয়োগ করছে। আমজনতা মনে করে, আমাদের ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত। এ ব্যাপারে মানুষ একমত।’
নেপালে পেট্রলের ঘাটতি সৃষ্টি হওয়ার পর দেশটিতে কারপুল কাঠমান্ডু নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ গড়ে উঠেছে। এই গ্রুপের সদস্যসংখ্যা প্রায় এক লাখ, তারা সবাই এখন নিজেদের বাহনে অন্য মানুষদের লিফট দিচ্ছে। কারপুল কাঠমান্ডুর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মনিশ শ্রেষ্ঠা বলেছেন, ‘আমি সতিই বিশ্বাস করি, গত কয়েক দিনে আমরা একটি উন্নততর সমাজে রূপান্তরিত হয়েছি, প্রয়োজনের সময় আমরা একদম অপরিচিত মানুষের সঙ্গেও আতিথেয়তা করেছি, তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবহারও ছিল মধুর।’
দাশিয়ান উৎসবের দুটি রাত পেরিয়ে গেছে। তবু বহু মানুষ কাঠমান্ডুতে রয়ে গেছে, তারা বাড়ি যেতে পারছে না। যে দেশটি কিছু উদ্যাপন করার জন্য অত্যন্ত মুখিয়ে আছে, সেখান থেকে অবরোধ উঠে যাক, এটাই আমার প্রত্যাশা।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া
অস্টিন মেয়ার: নিকোলাস ক্রিস্টফের ২০১৫ উইন-এ-ট্রিপ প্রতিযোগিতার বিজয়ী।
No comments